লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী। সম্প্রতি তার মেয়াদের সফলতা-ব্যর্থতা, ভবিষ্যত পরিকল্পনা, দলীয় ঐক্য ইত্যাদি বেশ কিছু বিষয়ে তিনি কথা বলেন দৈনিক আমাদের মাতৃভূমির সঙ্গে।
আবুল খায়ের পাটোয়ারী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের রণাঙ্গনের একজন বীর সাহসী যুবক। দুই দুই বারের রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র। পৌর৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি উচ্চশিক্ষায় সুশিক্ষিত, তিনি তৎকালীন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বি এ (সম্মান) ইতিহাস বিভাগ থেকে পাস করেন। ১৯৬৯ সাল এর গণ আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচার অভিযানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। এরশাদ ও খালেদা বিরোধী আন্দোলনে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন।
দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি পত্রিকায় একান্ত সাক্ষাৎকারে আবুল খায়ের পাটোয়ারী বলেন, আমি একটা কথা বলতে পারি, আমার এখানে অতীতে যারা মেয়র বা চেয়ারম্যান ছিলেন তাদের থেকে অনেক বেশি কাজ আমি করেছি। এই মেয়াদে আমি প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকার কাজ করেছি। আরও কাজ এখনও চলমান। রামগঞ্জ কাঁচাবাজারের কাজ করেছি, পৌরসভার ভেতরের রাস্তার বেহাল দশা ছিল, আমি অনেক সংস্কার করেছি। এত টাকার কাজ অন্য কেউ করতে পারেননি। আমাদের আরও কাজ চলমান আছে, কিছু কাজ বাকি আছে। আরও দু–তিনটা বড় প্রকল্পের কাজ বাকি আছে। আমি প্রতিটি অর্থবছরে সকল কমিশনার সমাজের গণ্যমানদের সাথে করে ঐক্যমতের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে ও পৌরসভায় বাজেট প্রণয়ন করি।
তিনি বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি দেশ ও জনগণের জন্য কিছু করব ইচ্ছায়। সেই ইচ্ছাটা কেবলমাত্র সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার জন্য। তিনি আমাকে মনোনয়ন না দিলে তা হয়তো স্বপ্নেই রয়ে যেতো। আমি সবসময়ে চেষ্টা করিতেছি যাতে রামগঞ্জ পৌরসভার সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক সেবন, ইভটিজিং এর মত কোন অনৈতিক কার্যকলাপ না ঘটে, সামাজিক ও ধর্মীয় কোন কাজে যাতে কোন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে আমার লক্ষ্য আছে এবং থাকবে।
আবুল খায়ের বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি ডাকে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে অতন্দ্র ভূমিকা পালন করি। আমি ১৯৯১ সাল থেকে অদ্যবধি ২০২৩ সাল পর্যন্ত পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন করতেছি। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। দীর্ঘদিন থেকে রামগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার ও লক্ষীপুর জেলা কমান্ডার এর সহকারি কমান্ডার ও মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি হিসেবে রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সদস্য পদে প্রতিনিধিত্ব করি।
তিনি আরও বলেন, আমি রামগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশেষ করে রামগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সভাপতি ও রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি। এছাড়া রামগঞ্জ বাজার কমিটির সভাপতি, ডাকবাংলা মসজিদের সাধারন সম্পাদক, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করি। আমি রামগঞ্জ উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান ছিলাম। এছাড়া বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার জাতীয় সমবায় ফেডারেশন এর সভাপতি দায়িত্ব পালন ও জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির যুগ্ম সম্পাদক এবং জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য। সর্বশেষ রামগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করি।
আমার চাওয়া পাওয়ার কিছুই নেই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ ও চিরঋণী একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে। আমার ছোট ভাই আবু তাহের পাটোয়ারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আমার এক ছেলে দুই মেয়ে। ছেলে তানভীর আহসান রতন সহ সম্পাদক লক্ষীপুর জেলা যুবলীগ। বড় মেয়ে আসিয়া নীলা এম এস ইন কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ার এবং পেল অফ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি লন্ডন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমরাই ডিজিটাল বাংলাদেশ যার প্রধান উপদেষ্টা ডঃ দীপু মনি, ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস হীরা বি এ অনার্স গ্রাফিক্স ডিজাইন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া।
আমি রামগঞ্জ তথা পৌরবাসী সকলের দোয়াও সমর্থন চাই।