ঢাকা ০৬:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কাশিমপুর কারাগারে নারী কেলেঙ্কারি ঘটনায় আজিজুলের শাস্তির নয়ছয় (প্রথম পর্ব) পাবনার দুই শহীদের কবর যিয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এডওয়ার্ড কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মো আব্দুল আউয়াল পূজার ডিউটিতে আনসার থেকে লাখ টাকার বাণিজ্য তজুমউদ্দিন মেঘনায় জালপাতা নিয়ে দ্বন্দ্ব, ট্রলার ছিনতাই ভোলায় পিস্তল নিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যানসহ আটক-২ সনি’র নতুন ব্রাভিয়া টিভি ও আল্ট এফওয়াই টুফোর বাজারজাত শুরু সীমান্তে মিয়ানমারের গুলিতে ১ বাংলাদেশি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩ বিএনপি কোনো ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে না : প্রিন্স বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৪০০ পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন জামায়াত নাটোরে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি সর্বহারা পার্টির!

বগুড়ার আদালতে বিচারকের সাক্ষর জাল করে জিআর মামলা নিষ্পত্তির অভিযোগে পেশকার পিয়নসহ ৫ জন গ্রেফতার

 

বগুড়া- বগুড়ার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারকের সাক্ষর জাল করে অভিযুক্ত আসামীদের খালাসের আদেশ তৈরি করার অপরাধে বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) ও জারীকারকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটানর সাথে জড়িত উক্ত মামলার অভিযুক্ত আরও চারজনকে আসামী করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বগুড়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মোঃ কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, ওমেদার হারুন অর রশিদ সাজন, জেলা জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত সেরেস্তাদার মোঃ আব্দুল মান্নান ও তাঁর পুত্র মোঃ আবু সাহেদ।
এ ঘটনায় বগুড়ার চীফ জুসিডিসয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্টেনোগ্রাফার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারঃ) মোঃ মাকছুদুর রহমান বাদী হয়ে সোমবার বিকেলে বগুড়া সদর থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। বগুড়া সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) বাদীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ২০১/২১৩/৪৬৬/৩৪ ধারা উল্লেখপূর্বক বগুড়া সদর থানায় মামলা রেকর্ড করেন। মামলা দায়েরের পর গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৪ মে, ২৩ জিআর নং ৭৯০/২০ (সদর) মামলাটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-০৩ আদালতে সাক্ষ্য গ্রহনের জন্য দিন ধার্য্য ছিল। উক্ত মামলার মোট পাঁচজন আসামির মধ্যে ১নং আসামী আয়শা আক্তার শিমু জামিন নিয়ে পলাতক ছিলেন। অপর চারজন আসামীর মধ্যে আবু শাহেদ, মুক্তার হোসেন ও ওয়াহেদুজ্জামান মাসুদ হাজিরা দাখিল করেন। আসামি মরিয়ম আক্তার নিপুর পক্ষে বিজ্ঞ কৌশলী সময়ের প্রার্থনা করেন। সাক্ষী না আসায় আসামীপক্ষে সময়ের প্রার্থনা মঞ্জুর পূর্বক পরবর্তি দিন ধার্য্য করা হয়। উক্ত আদেশের পর থেকে নথিটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে গত ১৪ অক্টোবর’২৩ তারিখ বিকেল ৪ ঘটিকায় উক্ত আদালতের বর্তমান বেঞ্চ সহকারী ফজলুর রশিদ এর মাধ্যমে মামলার নথিটি খুঁজে পেয়ে নথি দৃষ্টে দেখা যায় যে, শুনানির পরে ইং ১৪ মে’২৩ তারিখে বিচারকের অজ্ঞাতসারে আসামী আবু সাহেদ এর পক্ষে ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪৯ ধারার বিধান মতে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের দরখাস্ত নথিতে সংযুক্তপূর্বক তা মঞ্জুর করতঃ আসামিদেরকে অব্যাহতি প্রদান করে আদেশ লেখা হয়। ১৪ মে’২৩ এর আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, সম্পূর্ণ জাল এবং জালিয়াতির মাধ্যমে উক্ত আদেশটি সৃষ্টি করা হয়েছে এবং আদেশে বিচারকের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। উক্ত মামলাটি ইং ৫ জানুয়ারী’২৩ তারিখে অভিযোগ গঠন হয়ে মাত্র সাক্ষীর জন্য দুইটি ধার্য্য তারিখ অতিবাহিত হয়েছে। সাক্ষীদের প্রতি সমন প্রসেও ঠিকমত ইস্যু করা হয় নাই।
এ ব্যাপারে ওই আদালতের সাবেক বেঞ্চ সহকারী মোঃ কামরুজ্জামান এবং জারিকারক এম এ মাসুদকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান যে, বগুড়া জেলা জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বেঞ্চ সহকারী মোঃ আব্দুল মান্নান ও তাঁর পুত্র ওমেদার শাহেদ উক্ত জিআর মামলার অন্যান্য আসামিদের অনুরোধে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে উক্ত আদালতের পেশকার কর্তৃক নিয়োজিত ওমেদার হারুন অর রশিদ সাজন আসামিদের পরস্পর যোগসাজসে ঘটনার তারিখ ও সময়ে অত্রাদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা এর স্বাক্ষর জাল করে আসামিপক্ষে নতিতে সংযুক্ত ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪৯ ধারার দরখাস্ত মঞ্জুর করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করতঃ আসামিদেরকে অব্যাহতির আদেশ তৈরি করেন।
বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান জানান, এজাহারের অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কাশিমপুর কারাগারে নারী কেলেঙ্কারি ঘটনায় আজিজুলের শাস্তির নয়ছয় (প্রথম পর্ব)

বগুড়ার আদালতে বিচারকের সাক্ষর জাল করে জিআর মামলা নিষ্পত্তির অভিযোগে পেশকার পিয়নসহ ৫ জন গ্রেফতার

আপডেট সময় ০২:০৪:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

 

বগুড়া- বগুড়ার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারকের সাক্ষর জাল করে অভিযুক্ত আসামীদের খালাসের আদেশ তৈরি করার অপরাধে বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) ও জারীকারকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটানর সাথে জড়িত উক্ত মামলার অভিযুক্ত আরও চারজনকে আসামী করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বগুড়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মোঃ কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, ওমেদার হারুন অর রশিদ সাজন, জেলা জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত সেরেস্তাদার মোঃ আব্দুল মান্নান ও তাঁর পুত্র মোঃ আবু সাহেদ।
এ ঘটনায় বগুড়ার চীফ জুসিডিসয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্টেনোগ্রাফার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারঃ) মোঃ মাকছুদুর রহমান বাদী হয়ে সোমবার বিকেলে বগুড়া সদর থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। বগুড়া সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) বাদীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ২০১/২১৩/৪৬৬/৩৪ ধারা উল্লেখপূর্বক বগুড়া সদর থানায় মামলা রেকর্ড করেন। মামলা দায়েরের পর গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৪ মে, ২৩ জিআর নং ৭৯০/২০ (সদর) মামলাটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-০৩ আদালতে সাক্ষ্য গ্রহনের জন্য দিন ধার্য্য ছিল। উক্ত মামলার মোট পাঁচজন আসামির মধ্যে ১নং আসামী আয়শা আক্তার শিমু জামিন নিয়ে পলাতক ছিলেন। অপর চারজন আসামীর মধ্যে আবু শাহেদ, মুক্তার হোসেন ও ওয়াহেদুজ্জামান মাসুদ হাজিরা দাখিল করেন। আসামি মরিয়ম আক্তার নিপুর পক্ষে বিজ্ঞ কৌশলী সময়ের প্রার্থনা করেন। সাক্ষী না আসায় আসামীপক্ষে সময়ের প্রার্থনা মঞ্জুর পূর্বক পরবর্তি দিন ধার্য্য করা হয়। উক্ত আদেশের পর থেকে নথিটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে গত ১৪ অক্টোবর’২৩ তারিখ বিকেল ৪ ঘটিকায় উক্ত আদালতের বর্তমান বেঞ্চ সহকারী ফজলুর রশিদ এর মাধ্যমে মামলার নথিটি খুঁজে পেয়ে নথি দৃষ্টে দেখা যায় যে, শুনানির পরে ইং ১৪ মে’২৩ তারিখে বিচারকের অজ্ঞাতসারে আসামী আবু সাহেদ এর পক্ষে ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪৯ ধারার বিধান মতে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের দরখাস্ত নথিতে সংযুক্তপূর্বক তা মঞ্জুর করতঃ আসামিদেরকে অব্যাহতি প্রদান করে আদেশ লেখা হয়। ১৪ মে’২৩ এর আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, সম্পূর্ণ জাল এবং জালিয়াতির মাধ্যমে উক্ত আদেশটি সৃষ্টি করা হয়েছে এবং আদেশে বিচারকের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। উক্ত মামলাটি ইং ৫ জানুয়ারী’২৩ তারিখে অভিযোগ গঠন হয়ে মাত্র সাক্ষীর জন্য দুইটি ধার্য্য তারিখ অতিবাহিত হয়েছে। সাক্ষীদের প্রতি সমন প্রসেও ঠিকমত ইস্যু করা হয় নাই।
এ ব্যাপারে ওই আদালতের সাবেক বেঞ্চ সহকারী মোঃ কামরুজ্জামান এবং জারিকারক এম এ মাসুদকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান যে, বগুড়া জেলা জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বেঞ্চ সহকারী মোঃ আব্দুল মান্নান ও তাঁর পুত্র ওমেদার শাহেদ উক্ত জিআর মামলার অন্যান্য আসামিদের অনুরোধে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে উক্ত আদালতের পেশকার কর্তৃক নিয়োজিত ওমেদার হারুন অর রশিদ সাজন আসামিদের পরস্পর যোগসাজসে ঘটনার তারিখ ও সময়ে অত্রাদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা এর স্বাক্ষর জাল করে আসামিপক্ষে নতিতে সংযুক্ত ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪৯ ধারার দরখাস্ত মঞ্জুর করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করতঃ আসামিদেরকে অব্যাহতির আদেশ তৈরি করেন।
বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান জানান, এজাহারের অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে।