ঢাকা ০২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাটোরে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি সর্বহারা পার্টির!

নাটোরের গুরুদাসপুরে তিন ব্যক্তির বাড়িতে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে চিঠি পাঠিয়েছে কথিত সর্বহারা পার্টির সদস্যরা। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে বাড়ির গেটের ভেতরে খামভর্তি চিঠি পান গুরুদাসপুরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজ সংলগ্ন এলাকার তিন বাসিন্দা। তারা হলেন নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক উত্তম কুমার কুন্ডু, মকিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল সরকার ও ব্যবসায়ী সোহেল আনোয়ার। এ ঘটনায় উত্তম কুমার কুন্ডু ও সোহেল আনোয়ার গুরুদাসপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

‘সর্বহারা’ শিরোনামে চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘আশা করি মহান আল্লাহর দোয়ায় ভালোই আছেন। দোতলা বাড়ি, ছেলে, বউ সব মিলিয়ে ভালো। আমরা ভালো নেই। বছরের বেশির ভাগ সময় জেলে থাকি। আর যে বাকি সময় বাইরে থাকি, সেটুকু সময় গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করি। আপনাকে পাঁচ দিন সময় দেওয়া হলো। এই সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে রাখবেন। তা না হলে আপনার ছেলেকে জবাই করে আপনার বাসায় মাথা পাঠিয়ে দেব। পুলিশ কিংবা কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক বছরের মধ্যে আমাদের ধরতে পারবে না। ততদিনে আপনার ছেলের গলাকাটা জবাই করা লাশ হাড় হয়ে যাবে। টাকা কোথায় কীভাবে দেবেন আমরা জানিয়ে দেব। (সর্বহারা)।’

সহকারী অধ্যাপক উত্তম কুমার কুন্ডু জানান, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় একটি খাম দেখতে পান। সেই খাম খুলে সর্বহারা শিরোনামে একটি চিঠি দেখতে পাই। পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছে তারা। না দিলে আমার ছেলেকে মেরে ফেলবে। বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানিয়ে একটি জিডি করেছি। এই প্রথম আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে।’

ব্যবসায়ী সোহেল আনোয়ার জানান, ‘তিনি চিঠি পাওয়ার পরপরই থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তিনি এর সুষ্ঠু সমাধান চেয়েছেন।’

প্রধান শিক্ষক বাবুল সরকার জানান, ‘চিঠি পাওয়ার পরে আমি ও আমার পরিবার বেশ আতঙ্কিত। বুধবার বিকেলে থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমার কাছেও পাঁচ দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকার দাবি করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘সর্বহারা কোথাও নেই। হয়তো কোনো মাদকসেবী এ কাজ করেছে। দুজন এ সংক্রান্ত বিষয়ে জিডি করেছেন। তদন্ত শুরু করেছে। আশা করছি, অতিদ্রুত এদের চক্রকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে পুলিশ।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নাটোরে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি সর্বহারা পার্টির!

আপডেট সময় ০২:৪৩:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

নাটোরের গুরুদাসপুরে তিন ব্যক্তির বাড়িতে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে চিঠি পাঠিয়েছে কথিত সর্বহারা পার্টির সদস্যরা। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে বাড়ির গেটের ভেতরে খামভর্তি চিঠি পান গুরুদাসপুরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজ সংলগ্ন এলাকার তিন বাসিন্দা। তারা হলেন নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক উত্তম কুমার কুন্ডু, মকিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল সরকার ও ব্যবসায়ী সোহেল আনোয়ার। এ ঘটনায় উত্তম কুমার কুন্ডু ও সোহেল আনোয়ার গুরুদাসপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

‘সর্বহারা’ শিরোনামে চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘আশা করি মহান আল্লাহর দোয়ায় ভালোই আছেন। দোতলা বাড়ি, ছেলে, বউ সব মিলিয়ে ভালো। আমরা ভালো নেই। বছরের বেশির ভাগ সময় জেলে থাকি। আর যে বাকি সময় বাইরে থাকি, সেটুকু সময় গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করি। আপনাকে পাঁচ দিন সময় দেওয়া হলো। এই সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে রাখবেন। তা না হলে আপনার ছেলেকে জবাই করে আপনার বাসায় মাথা পাঠিয়ে দেব। পুলিশ কিংবা কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক বছরের মধ্যে আমাদের ধরতে পারবে না। ততদিনে আপনার ছেলের গলাকাটা জবাই করা লাশ হাড় হয়ে যাবে। টাকা কোথায় কীভাবে দেবেন আমরা জানিয়ে দেব। (সর্বহারা)।’

সহকারী অধ্যাপক উত্তম কুমার কুন্ডু জানান, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় একটি খাম দেখতে পান। সেই খাম খুলে সর্বহারা শিরোনামে একটি চিঠি দেখতে পাই। পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছে তারা। না দিলে আমার ছেলেকে মেরে ফেলবে। বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানিয়ে একটি জিডি করেছি। এই প্রথম আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে।’

ব্যবসায়ী সোহেল আনোয়ার জানান, ‘তিনি চিঠি পাওয়ার পরপরই থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তিনি এর সুষ্ঠু সমাধান চেয়েছেন।’

প্রধান শিক্ষক বাবুল সরকার জানান, ‘চিঠি পাওয়ার পরে আমি ও আমার পরিবার বেশ আতঙ্কিত। বুধবার বিকেলে থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমার কাছেও পাঁচ দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকার দাবি করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘সর্বহারা কোথাও নেই। হয়তো কোনো মাদকসেবী এ কাজ করেছে। দুজন এ সংক্রান্ত বিষয়ে জিডি করেছেন। তদন্ত শুরু করেছে। আশা করছি, অতিদ্রুত এদের চক্রকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে পুলিশ।