হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৩ কেজি ২৩১ গ্রাম স্বর্ণ সহ এক যাত্রীকে গ্রেফতার করেছে এয়ারপোর্ট আমর্ড পুলিশ (এপিবিএন) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) যৌথ দল।
জব্দকৃত সোনার মধ্যে একটি সোনারবার, জুয়েলারি গোল্ড ও পেস্ট গোল্ড রয়েছে। উদ্বারকৃত সোনার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
এপিবিএন পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃত যাত্রীর নাম মো: সুমন হোসেন (৪৩) । মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার ইসমাইল হাওলাদারের পুত্র। এ কাজে সফল হলে তার ৭০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল।
গতকাল শনিবার বিকাল ৫ টার দিকে বিমানবন্দরের আগমনী কনকোর্স হলের সামনে থেকে সোনাসহ যাত্রী মো: সুমন হোসেনকে সোনাসহ আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আজ রোববার এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান,
গতকাল শনিবার বিকাল ৫ টার দিকে এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইট দুবাইয়ের শারজাহ থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে অবতরন করেন,আর ওই বিমানের যাত্রী ছিলেন সুমন হোসেন।
বিমানবন্দরে অবতরনের পর সকল কার্যক্রম শেষে অভিযুক্ত যাত্রী সুমন কাস্টমস গ্রীন চ্যানেল অতিক্রম করলে এপিবিএন ও এনএসআই যৌথ দল কনকোর্স হলের সামনে তাকে সন্দেহজনক ভাবে সোনাসহ আটক করে।
এপিবিএন পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন তার পায়ুপথে স্বর্ণ রয়েছে। এসময় তাকে কাস্টমসের বডি স্ক্যানারে স্ক্যান করানো হলে তার কথার সত্যতা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তার দেহের কোন অংশে স্বর্ণ লুকানো আছে তা নিশ্চিত হওয়া লক্ষ্যে তাকে বিমানবন্দর থানার উত্তরা ১ নং সেক্টরের জাহান আরা ক্লিনিকে এক্সরে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক্সরে পরীক্ষার পর যাত্রীর পায়ুপথ ও তলপেটে স্বর্ণের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করেন ডাক্তার, এরপর যাত্রীকে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের বিমানবন্দর অফিসে নিয়ে আসা হয়, বিমানবন্দরে নিয়ে আসার পর যাত্রী সুমন ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক কার্যের মাধ্যমে তার পায়ুপথ ও তলপেটে লুকিয়ে রাখা ডিম্বাকৃতির পেস্ট গোল্ডের প্যাকেট বের করতে থাকেন।
মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, এ সময় অভিযুক্ত যাত্রী মোট ১৩ টি ডিম্বাকৃতি গোল্ড প্যাকেট বের করে নিজ হাতে ধৌত করেন, এই প্যাকেটগুলি নীল রঙ এর প্লাস্টিকে মোড়ানো ছিল। ওজন করা হলে প্রতিটি প্যাকেটে ২৩২ গ্রাম করে মোট ৩ কেজি ১৬ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যায় এছাড়াও যাত্রীর পরিহিত পোশাকের পকেট থেকে আরো ১ টি গোল্ডবার(১১৬ গ্রাম) এবং ৯৯ গ্রাম স্বর্ণালংকার সহ মোট ৩ কেজি ২৩১ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।উদ্বারকৃত সোনার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
তিনি জানান, পেস্ট গোল্ড সহ অন্যান্য গোল্ডের রাসায়নিক পরীক্ষার মাধ্যমে উদ্ধারকৃত পদার্থ স্বর্ণ বলে জানা যায়। এই স্বর্ণের আমদানী এবং শুল্ক পরিশোধের কোনো ধরনের রশিদ তিনি এসময় দেখানে ব্যর্থ হন এবং স্বীকার করেন যে তিনি স্বর্ণ পাচারকারী চক্রের সাথে যোগসাজশে স্বর্ণ পাচারের চেষ্টারত ছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যাত্রী মো: সুমন পুলিশকে জানান, যে শারজাহ প্রবাসী মিজান এবং আনোয়ার অর্থের বিনিময়ে তাকে এই স্বর্ণ পাচারের জন্য প্রস্তাব করলে তিনি তাতে রাজি হন এবং বিশেষ কৌশলে এই স্বর্ণ নিজের দেহে বহন করে বাংলাদেশে নিতে আসেন এই কাজে সফল হলে তার ৭০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল ব্যাগেজ সুবিধা ব্যবহার করে পন্য আমদানীর জন্য তিনি নিয়মিত বিদেশে যাওয়া আসা করেন।
তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।