১০ অক্টোবর,২০২৩ রোজ মঙ্গলবার দুপুরে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে নিজ বাড়ি রাজশাহীতে চলে গেলেন আমাদের সকলের প্রিয় শিক্ষক মি.হক।
অনেক বেশি ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আজকে আমার এই লেখা। আমাদের সকলের অত্যন্ত প্রিয় একজন শিক্ষক মিস্টার আনোয়ারুল হক সু দীর্ঘ ৩৫ বছর পর ভারতেশ্বরী হোমস ছেড়ে নিজ দেশ রাজশাহীতে চলে যাচ্ছেন।অমায়িক ব্যবহার, ভদ্র ও বিনয়ী হওয়ার কারণে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে মির্জাপুরবাসীর কাছে তিনি অত্যন্ত প্রিয় মানুষ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। সত্য -নিষ্ঠায় তিনি ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক । তিনি যেমন ভালবেসে মির্জাপুরবাসিকে আপন করে নিয়েছিলেন ঠিক তেমনি মির্জাপুরের সকল মানুষ তাঁকে পরিবারের একজন বলেই ভাবতো। এই পরিবারটি আজ মির্জাপুরবাসীকে কাঁদিয়ে চলে যাচ্ছেন।
কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট মির্জাপুরে অবস্থিত ভারতেশ্বরী হোমসে ৩৫ বছর পূর্বে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন মিস্টার আনারুল হক। কর্মক্ষেত্রে তিনি ছিলেন একজন একনিষ্ঠ শিক্ষক। সর্বোপরি তিনি ছিলেন একজন ভালো মানুষ। সেই সুবাদে সহকর্মী ও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয় একজন মানুষ। কুমুদিনী হাসপাতাল ও ভারতেশ্বরী হোমসের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল অফুরান। কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এর এমডি মহোদয় তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে খুব পছন্দ করতেন। সঙ্গত কারণে তিনি এতগুলো বছর একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানে কাটিয়ে যেতে পেরেছেন। ভারতেশ্বরী হোমসকে তিনি এতটাই আপন ভাবতেন যে সুদূর রাজশাহীর নিজ বাড়িকে তিনি আত্মীয় বাড়ি ভাবতেন আর মির্জাপুরকে ভাবতেন নিজ বাড়ি। সুদীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে মির্জাপুরবাসীকে তিনি দিয়ে গেছেন অনেক কিছুই। বিনিময়ে মির্জাপুরবাসীর অন্তরে তিনি ঠাঁইও করে নিয়েছিলেন প্রগাঢ়ভাবে।
সুদীর্ঘ ৩৫ বছরের পথ চলা, একাধারে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা, সকলের সাথে মানিয়ে চলা একেবারে কম কিছু নয়। জীবন থেকে ৩৫ টি বছর, ৩৫টি বসন্ত,৩৫ টি বর্ষা একই জায়গায় একটি প্রতিষ্ঠানে পার করা ক’জনের ভাগ্যে হয়ে থাকে।
আমরা কেউই কালের নিয়মকে উপেক্ষা করতে পারিনা, চাকরিতে যোগদানের যেমন আনন্দ থাকে তেমনি বেদনাও থাকে অবসরে যাবার। যে ঘরটি তিনি সুদীর্ঘদিন ব্যবহার করেছেন, আজ সে ঘর ফাঁকা। আগামীকাল হয়তো বা অন্য কেউ সেখানে উঠবেন। মানুষ চলে যায় পিছনে ফেলে যায় অসংখ্য স্মৃতি। তিনি চলে গিয়েছেন দূরে। শত ইচ্ছা হলেও সহসাই তিনি এই প্রিয় মানুষগুলোর কাছে আসতে পারবেন না। মনের দিক থেকে তবু তিনি আছেন আমাদের অন্তরের খুব কাছাকাছি। মির্জাপুরবাসী চিরকাল তাঁকে মনে রাখবে।
বিশেষ করে মিসেস হক, রাইম, রিনা, রিশাত এদের কথা ভুলা যাবে না কোনদিন।
পরিশেষে তবুও চোখের জলে শুভকামনা জানাই পরিবারের সকলের প্রতি।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সব সময়। হয়তোবা আবার কখনো দেখা হবে, ইনশাআল্লাহ।