চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করায় সচিবকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। উপজেলার ১২ নং চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদে ৮ অক্টোবর রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে জানা যায়, চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান মাস্টার ও ইউপি সচিব মো. ইমাম হোসেন হাসানের মধ্যে পরিষদের দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলছে। আজ দুপুরে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে একটি বৈঠক করেন চেয়ারম্যান, সচিব, ইউপি সদস্য ও হিসেব সহকারীসহ অন্যান্যরা।
এ সময় চেয়ারম্যান ও সচিবের তর্ক-বিতর্ক বাধে। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান মাস্টার ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. ইমাম হোসেন হাসানকে চর-থাপ্পর দেন।
এ বিষয়ে সচিব মো. ইমাম হোসেন হাসান দৈনিক মাতৃভূমি পত্রিকাকে বলেন, প্রায় দু বছর আগে মোহাম্মদ শাহাজাহান মাস্টার নির্বাচিত হয়েছেন। পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে তিনি অনিয়ম দূর্নীতি শুরু করেন। তিনি ঠিকমতো সরকারের ট্যাক্স রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন।
সচিব মো. ইমাম আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যানকে বারংবার এসব বিষয়ে বললেও তিনি তোয়াক্কা করছেন না। চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোক দিয়ে বেআইনীভাবে পরিষদ পরিচালনা করেন। আজ দুপুরে পরিষদের ১২ প্রকারের অনিয়ম নিয়ে বৈঠকে বসি আমরা। এ সময় সরকারের নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ট্যাক্সসহ অন্যান্য ফি পরিষদের কথা বললে চেয়ারম্যান আমাকে প্রথমে লাঞ্ছিত করেন, লাঞ্ছিতের প্রতিবাদ করলে আমাকে চর-থাপ্পর দেন। এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।’ এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।
নামপ্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, চেয়ারম্যান নিজস্ব লোকজন দিয়ে পরিষদ পরিচালনা করেন। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা নেই, চেয়ারম্যানের আত্মীয়স্বজন দিয়ে জন্ম-মৃত্যুসনদ ও প্রত্যয়নসহ অন্যান্য কাজ করছেন। যা সরকারি নির্ধারিত ফি থেকে প্রায় কয়েকগুণ বেশি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একই ইউনিয়ন পরিষদের হিসেব সহকারী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান সাহেব মনগড়াভাবে পরিষদ পরিচালনা করেন। বৈঠক চলাকালে চেয়ারম্যান মহোদয় সচিব সাহেবের গালে চর-থাপ্পর মারেন। এ ঘটনায় আমরা হতবাক হয়েছি।’
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান মাস্টার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি পরিষদের দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে সচিব আমাকে দাপ্তরিক কাজ আমার খেয়ালখুশি মতো করতে অসহযোগিতা করে আসছেন। বৈঠকে তিনি আমার কাজের অনিয়মের অভিযোগ তোলেন তাই আমি তাঁকে থাপ্পর উঠিয়েছি। তবে তাঁকে আমি মারিনি।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌলি মন্ডল বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমি অবগত নই, তবে খোঁজখবর নিব। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’