সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় প্রতিবন্ধী, বিধবা ও বয়ষ্কদের ভাতা তুলতে দিতে হয় পাঁচশ থেকে এক হাজার টাকা। টাকা না দিলে ভাতা তুলতে নানা হয়রানির শিকার হতে হয় অসহায় ভাতাভোগী মানুষের। এমনি অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সোনালি ব্যাংকের ম্যানেজার নিকিলেশ তালুকদার ও তার সহযোগী আবুল কাশেমর উপর।
জানাযায়, তাহিরপুর উপজেলার প্রতিবন্ধী, বিধবা ও বয়ষ্কদের ভাতা গ্রহণের একমাত্র প্রতিষ্ঠান সোনালি ব্যাংক তাহিরপুর শাখা। ব্যাংকে পূর্বে এসব ভাতা প্রদানের জন্য নির্ধারিত দিন ঠিক করে ভাতা দেয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে ব্যাংক ম্যানেজার নিকিলেশ তালুকদার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ভাতা প্রদানে এসব নিয়মের তোয়াক্কা না করে সবার ভাতা আটকে রেখেছন। ৫শ থেকে ১হাজার টাকা অথবা বড় মাপের মানুষের সুপারিশ ছাড়া ভাতা দেন না তিনি। টাকা না দিতে পারা প্রতিবন্ধী, বিধবা ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মতো অসহায় মানুষদের ভাতা না পেয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। এতে করে এলাকার ভাতাভোগী ও স্থানীয় সচেতন মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের বিধবা এবলাশি বেগম ও শাফিয়া বেগম বলেন, আমরা ভাতার জন্য প্রায় সময় ব্যাংকে আসলে ব্যাংকের লোকে আমাদের ভাতা দেয়া হবেনা বলে তারিয়ে দেয়। আবার আমাদের মতো অনেকের কাছ থেকে ৫শ -১হাজার টাকার বিনিময়ে ভাতা দিয়েছেন। অনেক দিন টাকা না দেয়ায় ভাতা না নিয়ে আমরা ঘুরে গেছি। আজকে অসহায় হয়ে ধার করে ৫শ দিয়ে ভাতা পেলাম।
বাদাঘাট ইউনিয়নের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এমদাদ নুর বলেন, আমি অন্ধ মানুষ ভাতা নিতে ব্যাংকে আসলে তারা বলেন সময় হয়নি। ভাতা দেয়া যাবেনা। ম্যানেজার সাবের কাছে গেলেও কোন লাভ হয়নি। তিনি তার সহযোগী কাশেমের সাথে কথা বলতে বলেন। পরে কাশেমকে ৫শ টাকা দিলে তিনি ভাতা পাইয়ে দেন।
তাহিরপুর সদর ইউপি সদস্য তুজাম্মিল হক নাছরুম বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে সোনালি ব্যাংক তাহিরপুর শাখার ভাতা প্রদানে অনেক অভিযোগ আসছে। অনেক উপকারভোগী ভাতা না পেয়ে আমাদের কাছে আসে। আমরা বললে বলে এখন ভাতা দেয়া যাবেনা। আবার অনেকে ভাতা উত্তলন করে নিয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যারা পেয়েছে তাদের টাকা দিতে হয়েছে।
তাহিরপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান জুনাব আলী বলেন, বর্তমান ব্যাংক ম্যানেজার ভাতা দিতে উদ্যোগ নিচ্ছেন না। প্রতিদিন আমার কাছে অনেকেই ভাতা না পেয়ে আসে। আমি কল দিয়ে বললে ভাতা দেন। অন্যতায় ভাতা অসহায় মানুষদেরকে হয়রানি করেন। আমার কাছে অনেকে ৫শ থেকে ১হাজার টাকা দিয়ে ভাতা আনতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন।
সোনালি ব্যাংক তাহিরপুর শাখার ম্যানেজার নিকিলেশ তালুকদার বলেন, আমি কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেই নি। এধরনের কোন অভিযোগও আসেনি। ভাতাভোগীদের হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, সামনের মাস থেকে ভাতার নির্ধারিত দিন তারিখ ঠিক করে দিবো।