আজ বৃহস্পতিবার(২৮সেপ্টেম্বর ২০২৩) ঈদে মিলাদুন নবী উপলক্ষে সরকারি বন্ধ। কিন্তু সরকারের আইন ও বিধি মতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার বিধান রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিভিন্ন সরকারি ও বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানে পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। তবে, সরকারের বিধি মতে বোরহানউদ্দিন উপজেলার কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদ্রাসাটিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
মাদ্রাসায় উপস্থিত না থাকাঃ বোরহানউদ্দিন উপজেলার কামিল মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অধ্যক্ষ নানা রকম ছল ও ছুতায় মাদ্রাসায় আসেন না। সরকারি কাজের নাম করে বিভিন্ন সময় তিনি মাদ্রাসায় উপস্থিত থাকেন না, কেন মাদ্রাসায় আসেন না?
জানা যায়, অধ্যক্ষ অনেকগুলো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও নানা রকম সুযোগ সুবিধা নিয়ে থাকেন। সেই কারণেই এখানকার শিক্ষকরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঠদান করলেও অধ্যক্ষ আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করেন না।
বোরহানউদ্দিন কামিল (স্নাতকোত্তর)সহকারী অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় আসলেও নির্দিষ্ঠ সময়ের আগেই চলে যান। জানা যায়, তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ডিলারশীপ নিয়ে ব্যবসা করেন। যদিও চাকরি বিধানে বলা হয়েছে, ব্যবসা করতে হলেও সরকারকে জানাতে হবে।
অর্থনৈতিক অভিযোগঃ এই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর অভিযোগ। নিজ প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে, শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করে, তারা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঠ দিচ্ছেন এবং অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। এটি যদিও সরকারের বিধি ও বিধান মতে অপরাধ।
মহান আল্লাহ তায়ালার নাম জপ, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর গুনকীর্তন সহ নানা রকম মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। সেখান থেকেও মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেন তারা। সরকারি বিধান বা সরকারি আইনে এরকম টাকা নেওয়া অপরাধ। চাকুরী বিধান মতে, উপঢৌকন বা অর্থিক সুবিধা শিক্ষকরা গ্রহন করতে পারেন না। মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ এবং সহকারী অধ্যক্ষ দুইজনকেই এই বিষয়ে কারো কাছে কোন জবাবদিহি করতে হয় না। এটা কি আইনের ব্যতয় নয়?
সরকারি অর্থ আত্মসাৎঃ প্রতিবছর এই প্রতিষ্ঠানটিতে সরকার নানা ভাবে অর্থ বরাদ্দ করে। কিন্তু সরকারি এই অর্থ মিথ্যা বিল ভাউচার তৈরি করে উত্তোলন করে লোপাট করে অধক্ষ ও তার সহযোগিরা। যা স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব পায় গণমাধ্যমে।
ভোলা জেলার বিখ্যাত এই মাদ্রাসিটিতে প্রথম শ্রেণী থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। কিন্তু পরীক্ষার সময় বিভিন্ন বিল ও ভাউচার তৈরি করে সাধারণ শিক্ষকদের বঞ্চিত করে অধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যক্ষ সরকারি টাকা লোপাট করে। সেই অর্থ শিক্ষকদের মাঝে বিতরন করা হলেও পরিমানে খুবই কম, যা দৃষ্টিকটু ও অসম্মান জনক। সাধারণ শিক্ষকরা সততার সাথে দায়িত্ব পালন করলেও এসব রাক্ষুসে শিক্ষকদের দ্বারা তা নিগৃহীত। দেখার কেউ নেই।
জাতীয় সংগীত না গাওয়াঃ মাঝে মাঝে প্রতিষ্ঠানটিতে জাতীয় সংগীত গাওয়া হলেও অধিকাংশ দিনগুলোতে জাতীয় সংগীত এবং সরকারি বিধি-বিধান মতে এসেম্বলি করা হয় না। সরকারের এই আইন গুলো না মেনে কোন প্রতিষ্ঠান চলতে পারেনা কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানটি এভাবেই চলছে। প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই এখানে।
এখানকার স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়গুলো সম্পর্কে বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রশাসন, বোরহানউদ্দিন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, ভোলা জেলা প্রশাসনকে, একাধিক বার জানালেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহন করে নি।
এই প্রতিষ্ঠানটির ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ধারন করতে গেলে, প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যাক্তিদের পোষ্য ব্যাক্তিরা হুমকি দিয়ে বলেন,মাদ্রাসা সম্পর্কে লিখলে ও সংবাদ প্রচার করলে খবর আছে!
প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন? তারা কি খবর করবে? অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না? এই অন্যায়, অপরাধ চলতেই থাকবে?