চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত ‘শিবির ক্যাডার’ নাছির উদ্দিন চৌধুরীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার সিদ্ধান্ত। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকায় নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ। কুমিল্লা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার কারা বিভাগের অনুমতি মিললে বিশেষ নিরাপত্তায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হবে।গত এক সপ্তাহের চিকিৎসায় নাছিরের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। বুধবার দুপুরে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কিংবা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে ছাড়পত্র দেয়।
জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ছাড়পত্র পাওয়ার পরই নাছিরকে কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়।
এর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় বুধবার দিবাগত রাতে নোয়াখালী কারাগার থেকে নাছিরকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা পাঠানো হয়। রাত একটার দিকে তাকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। পরে ওই রাতেই তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কারা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৮ সাল থেকে নাছির নোয়াখালী কারাগারে রয়েছেন। সম্প্রতি চট্টগ্রাম আদালতে তার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনের মামলায় হাজির হওয়ার দিন ধার্য ছিল।
কিন্তু কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তার অসুস্থতার বিষয়ে আদালতকে অবহিত করায় তাকে হাজির করা হয়নি।গত তিন দশক র্যাব–পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী নাছির উদ্দিন চৌধুরী ওরফে শিবির নাছিরের নাম শুনলে আতঙ্কিত হয়ে উঠতেন চট্টগ্রামের অনেক বাসিন্দা। তিন খুন, জোড়া খুনে সম্পৃক্ত নাছির গড়ে তুলেছিলেন একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। এই বাহিনীর সদস্যরা অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন, আতঙ্ক ছড়াতে বৃষ্টির মতো গুলি ছুঁড়তেন তাঁরা। চট্টগ্রামের মায়েরা নাছিরের নাম বলে ভয় দেখিয়ে বাচ্চাদের ঘুম পাড়াতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম আমলে এক দিন তাঁকে ধরে ফেলে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে নাছির বলেছিলেন, এক মিনিট আগে জানতে পারলে পুলিশ তাঁকে ধরতে পারত না। তিনি নিজে এবং সহযোগীরা এসে গুলি করতেন পুলিশ সদস্যদের।
২৮ বছর ধরে কারাবন্দি নাছির উদ্দিন গত ২০২২বছরের এক সপ্তাহের (গত ৩০ ও ২৩ জুন) মধ্যে দুটি মামলায় জামিনের আবেদন করেছেন। আদালত তাঁর দুই আবেদনই নাকচ করে দিয়েছেন। তবে নাছির এ সময়ে এসে কারাগার থেকে বের হওয়ার আবেদন করায় তাঁর বিষয়টি আবার সামনে আসছে।