কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর এলাকার ভোষনা গ্রামের সুলতান মিয়া নামে এক ব্যক্তির প্ররোচণায় স্বর্ণালী নামে এক তরুণী প্রবাসী স্বামীর কাছে তার গোপন ভিডিও প্রকাশ্যের হুমকির ঘটনায় গত ৯আগষ্ট দিবাগত রাতে নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করে।
দেবিদ্বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তরুণীর লাশ উদ্ধার করেন। নিহত তরুণী স্বর্ণালী আক্তার(২১) ভোষনার হালিমা বেগমের মেয়ে।
ঘটনার বিষয়ে নিহতের মা হালিমা বেগম জানান, ভোষনা গ্রামের মৃতঃ সুন্দর আলীর ছেলে সুলতান মিয়া তার মেয়ে স্বর্ণালীর গোপন ভিডিও প্রবাসী স্বামীর কাছে প্রকাশ্যের হুমকি দিলে তার মেয়ে ভয়ে আত্নহত্যার পথ বেছে নেন।সুলতান মিয়ার কাছে তিনি ৫ লক্ষ টাকা পাওনা। এছাড়া তার সাথে সুদি লেনদেনের কারবার ছিল দীর্ঘদিন ধরে। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি তার পাওনা টাকা চাইলে সুলতানের সাথে মত বিরোধ ছিল। সেই সুবাদে সুলতান তার প্রথম সংসারের দুই মেয়ে হাবিবা ও স্বর্ণালী’কে বিভিন্ন প্রলোভন দেখান। বলেন যে তার মা হালিমা বেগম না-কি পুরো সম্পত্তি ও টাকা পায়সা দ্বিতীয় স্বামী, সন্তানের নামে লিখে দিচ্ছেন। তার ছোট মেয়ে স্বর্নালীকে নিজ স্বামীর বাড়ি ধামতী থেকে মায়ের সম্পত্তির লোভ ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে আসেন। প্রথমে নারায়ণগঞ্জ সহ বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া করে ১০-১৫ রাখার পর, বড় মেয়ে হাবিবার প্রবাসী জামাই কাউছারকে হাত করে,শ্বাশুড়ির সম্পদের লোভ দেখিয়ে হালিমা বেগমের বড় মেয়ে হাবিবা সহ ছোট মেয়ে স্বর্নালীকে চট্টগ্রামের অলংকারে ভাড়া বাসায় রাখেন আত্নগোপনে। এদিকে হালিমা বেগম একসাথে দুই মেয়ের খোঁজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন।
ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে না যেতেই স্বর্ণালী তার মাকে ফোন দিয়ে বলেন, তারা দুই বোন চট্টগ্রামের অলংকারে আছেন। হালিমা বেগম সুলতানকে চাপ প্রয়োগ করলে, গত ২/০৮/২৩ ইং বুধবার সুলতান সহ গিয়ে তিনি তার দুই মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
পরে গত ০৫/০৮/২৩ ইং শনিবার রাতে স্হানীয় আবুল কালাম ও সোলেমানের উপস্থিতিতে ঘরোয়া শালিশে সুলতানের দেয়া মেয়েদের প্রলোভন ও আত্নগোপনে রাখার বিষয়টি সমাধান হয়।
শালিশের একদিন পর সুলতান তার ছোট মেয়ে স্বর্ণালীকে ফোন করে ডেকে নিয়ে তার গোপন ভিডিও প্রবাসী স্বামী কাছে প্রকাশ্যের ভয় দেখালে, আত্মসম্মানের ভয়ে গত ৮ আগস্ট মঙ্গলবার রাত ১০:০০ টার সময় নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করে। তিনি জানান, সুলতান তার ছোট মেয়েকে বিভিন্ন বাসায় নিয়ে গিয়ে কিছু গোপন ভিডিও ধারণ করেন।
নিহতের বড় বোন হাবিবা জানান, সুলতান আমার প্রবাসী স্বামীকেও লোভ দেখায় আমার মায়ের টাকা ও সম্পদের,আমি যদি মায়ের কাছ থেকে টাকা ও সম্পদ না এনে দেই আমাকে নিয়ে সংসার করবে বলে আমার স্বামী জানায়। পরে আমি বাধ্য হয়ে সুলতান মিয়া কথায় ছোট বোন স্বর্নালীর সাথে চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় আত্নগোপনে থাকি। পরে ভুল বুঝতে পারে মায়ের কাছে ফিরে এসেছি। কিছু মাস আগে লম্পট সুলতান আমার ছোট বোন স্বর্ণালীকে গোপনে কিছু খারাপ ভিডিও ধারণ করেছে বলে আমরা ধারণা করছি। যে কল রেকর্ড ও গোপন ভিডিও ফুটেজ প্রবাসী স্বামীর কাছে প্রকাশ্যের ভয়ে সে আত্নহত্যা পথ বেছে নিয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুলতান মিয়া সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে জানা যায় তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন,মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোনের সুইচ অফ পাওয়া যায়।