ঢাকা ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্যাবায় যেন বিয়ে বাড়ির আমেজ!

বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে সপ্তাহ দুয়েক আগেই। কিন্তু ব্রিসবেনের গ্যাবায় বিশ্বকাপের আমেজ লাগেনি এতোদিন। অন্যসব ভেন্যুতে ব্যস্ততা বাড়লেও এখানকার আয়োজকদের নড়ে চড়ে উঠতে দেরিই হলো একটু। শনিবার কুইন্সল্যান্ডের ওলুংগাব্বার এই মাঠে পা দিয়ে তাইতো চারপাশ জুড়ে দেখা মিলল কেমন যেন একটা উৎসব আমেজ। সাজগোজে ব্যস্ত সবাই। মনে হচ্ছিল যেন বিয়ের আগের দিন!

অনেকটা তো তাই। রোববারই এই মাঠে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। যেখানে বাংলাদেশ দল লড়বে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। স্থানীয় সময় দুপুর দুইটায় শুরু মাঠের লড়াই। তার আগে আজ দারুণ ব্যস্ততায় কাটল মাঠকর্মী আর ব্রডকাস্টারদের! বিশ্বকাপ বলে কথা, সবকিছু ঠিকঠাক মতো করা চাই!এটাও ঠিক গ্যাবা এমনই এক ভেন্যু, সেজেগুজে থাকারও দরকার পড়ে না। যে মাঠের প্রতিটি পরতে ঐতিহ্য আর ইতিহাসের প্রলেপ, তাদের আবার বাড়তি সাজ কেন?

একটা তথ্য নিশ্চয়ই জানা আছে সবারই-এটিই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টি-টোয়েন্টি ভেন্যু। তবে বনেদি এই মাঠটিকে টি-টোয়েন্টি দিয়ে তো আর পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার পড়ে না! এখানে ব্যাট-বলের টুংটাংকের ইতিহাস অনেক অনেক পুরোনো। সেই ১৮৯৫ সালে কুইন্সল্যান্ডের ওলুংগাব্বা এলাকায় গ্যাবা স্টেডিয়ামের পথচলা শুরু। আর নামকরণটা হয়েছে ওলুংগাব্বা এলাকার অনুসারে।

মজার ব্যাপার হলো, ক্রিকেট খেলার জন্য বানানো হলেও এই মাঠে শুধু ক্রিকেট খেলাই হয় না, ফুটবল-রাগবি, অ্যাথলেটিকস-বেসবল এমন কী সাইক্লিংয়ের মতো খেলাও হয়েছে অতীতে। তবে ক্রিকেটই গ্যাবাকে দিয়েছে আলাদা একটা পরিচয়। যার শুরুটা ১৮৯৬ সালে। ওই বছরই প্রথমবারের মতো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে লড়েছে পার্লামেন্ট বনাম দ্য প্রেস। যদিও তখন গ্যাবা নয়, গ্রিন হিলস নামে সবাই চিনতেন মাঠটিকে।

তারপর ১৯৩১ সালে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচটি দিয়েই টেস্টের অভিজাত অঙ্গনে পথচলা শুরু গ্যাবার। সেই ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে নিজেদের প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচটি এই মাঠেই খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া।

এই মাঠটিকে প্রথম দেখায় খুব বেশি বড় মনে হয়নি। ঠিক বাউন্ডারি লাইনের পাশে গ্যালারি। উন্মুক্ত গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে ক্রিকেটারদের নিঃশ্বাসও শোনার সুযোগ থাকবে। কারণ হাত ছোঁয়া দূরত্বে গ্যালারি। যেখানে বসে খেলা দেখতে পারবেন ৪২,০০০ দর্শক।

এমনিতে অস্ট্রেলিয়ার মাঠগুলো পেসারদেরই স্বর্গ রাজ্য। আর এখানে তো তাদেরই দাপট। বোলাররা সুইংয়ের সঙ্গে কাটার-স্লোয়ারেও ব্যস্ত করে রাখবেন ব্যাটসম্যানদের। তবে রান তুলতে জানলে এখানে রান ফোয়ারাও ছুটিয়ে দেওয়া যাবে অনায়াসে। কী হবে, কী হতে যাচ্ছে তা সময়ই বলে দেবে। তবে এখন বিয়ে বাড়ির একটা আমেজ নিয়ে তৈরি ব্রিসবেনের গ্যাবা।

অবশ্য বাংলাদেশ দলের এভাবে ভাবার সুযোগ নেই। তাদের যে লড়তে হবে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। বিয়ে বাড়ির উৎসবে যেমন দুই পক্ষই হাসিমুখে ঘরে ফেরে-এখানে সেই সুযোগ নেই। গ্যাবার ইতিহাসের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়ে রাখতে একটা জয় যে বড্ড প্রয়োজন প্রয়োজন সাকিব আল হাসানদের!

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গ্যাবায় যেন বিয়ে বাড়ির আমেজ!

আপডেট সময় ০৪:৩৯:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২

বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে সপ্তাহ দুয়েক আগেই। কিন্তু ব্রিসবেনের গ্যাবায় বিশ্বকাপের আমেজ লাগেনি এতোদিন। অন্যসব ভেন্যুতে ব্যস্ততা বাড়লেও এখানকার আয়োজকদের নড়ে চড়ে উঠতে দেরিই হলো একটু। শনিবার কুইন্সল্যান্ডের ওলুংগাব্বার এই মাঠে পা দিয়ে তাইতো চারপাশ জুড়ে দেখা মিলল কেমন যেন একটা উৎসব আমেজ। সাজগোজে ব্যস্ত সবাই। মনে হচ্ছিল যেন বিয়ের আগের দিন!

অনেকটা তো তাই। রোববারই এই মাঠে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। যেখানে বাংলাদেশ দল লড়বে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। স্থানীয় সময় দুপুর দুইটায় শুরু মাঠের লড়াই। তার আগে আজ দারুণ ব্যস্ততায় কাটল মাঠকর্মী আর ব্রডকাস্টারদের! বিশ্বকাপ বলে কথা, সবকিছু ঠিকঠাক মতো করা চাই!এটাও ঠিক গ্যাবা এমনই এক ভেন্যু, সেজেগুজে থাকারও দরকার পড়ে না। যে মাঠের প্রতিটি পরতে ঐতিহ্য আর ইতিহাসের প্রলেপ, তাদের আবার বাড়তি সাজ কেন?

একটা তথ্য নিশ্চয়ই জানা আছে সবারই-এটিই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টি-টোয়েন্টি ভেন্যু। তবে বনেদি এই মাঠটিকে টি-টোয়েন্টি দিয়ে তো আর পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার পড়ে না! এখানে ব্যাট-বলের টুংটাংকের ইতিহাস অনেক অনেক পুরোনো। সেই ১৮৯৫ সালে কুইন্সল্যান্ডের ওলুংগাব্বা এলাকায় গ্যাবা স্টেডিয়ামের পথচলা শুরু। আর নামকরণটা হয়েছে ওলুংগাব্বা এলাকার অনুসারে।

মজার ব্যাপার হলো, ক্রিকেট খেলার জন্য বানানো হলেও এই মাঠে শুধু ক্রিকেট খেলাই হয় না, ফুটবল-রাগবি, অ্যাথলেটিকস-বেসবল এমন কী সাইক্লিংয়ের মতো খেলাও হয়েছে অতীতে। তবে ক্রিকেটই গ্যাবাকে দিয়েছে আলাদা একটা পরিচয়। যার শুরুটা ১৮৯৬ সালে। ওই বছরই প্রথমবারের মতো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে লড়েছে পার্লামেন্ট বনাম দ্য প্রেস। যদিও তখন গ্যাবা নয়, গ্রিন হিলস নামে সবাই চিনতেন মাঠটিকে।

তারপর ১৯৩১ সালে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচটি দিয়েই টেস্টের অভিজাত অঙ্গনে পথচলা শুরু গ্যাবার। সেই ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে নিজেদের প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচটি এই মাঠেই খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া।

এই মাঠটিকে প্রথম দেখায় খুব বেশি বড় মনে হয়নি। ঠিক বাউন্ডারি লাইনের পাশে গ্যালারি। উন্মুক্ত গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে ক্রিকেটারদের নিঃশ্বাসও শোনার সুযোগ থাকবে। কারণ হাত ছোঁয়া দূরত্বে গ্যালারি। যেখানে বসে খেলা দেখতে পারবেন ৪২,০০০ দর্শক।

এমনিতে অস্ট্রেলিয়ার মাঠগুলো পেসারদেরই স্বর্গ রাজ্য। আর এখানে তো তাদেরই দাপট। বোলাররা সুইংয়ের সঙ্গে কাটার-স্লোয়ারেও ব্যস্ত করে রাখবেন ব্যাটসম্যানদের। তবে রান তুলতে জানলে এখানে রান ফোয়ারাও ছুটিয়ে দেওয়া যাবে অনায়াসে। কী হবে, কী হতে যাচ্ছে তা সময়ই বলে দেবে। তবে এখন বিয়ে বাড়ির একটা আমেজ নিয়ে তৈরি ব্রিসবেনের গ্যাবা।

অবশ্য বাংলাদেশ দলের এভাবে ভাবার সুযোগ নেই। তাদের যে লড়তে হবে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। বিয়ে বাড়ির উৎসবে যেমন দুই পক্ষই হাসিমুখে ঘরে ফেরে-এখানে সেই সুযোগ নেই। গ্যাবার ইতিহাসের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়ে রাখতে একটা জয় যে বড্ড প্রয়োজন প্রয়োজন সাকিব আল হাসানদের!