কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিচ্ছে না, তবে যারা আইন অমান্য করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) চার দশক উদযাপন উপলক্ষে রোববার (২৩ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপির কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিচ্ছে না, তাদের অভিযোগ মিথ্যা। বিনা অপরাধে কাউকে আটকও করা হচ্ছে না। যারাই অপরাধ করছেন, আইন অমান্য করছেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক টর্চার নয়, রাজনৈতিক চর্চার কথাই সবসময় বলছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা প্রদান করছে না। কর্মসূচির নামে আগুন, ভাঙচুরের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে, ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি হঠাৎ করে আন্দোলনে এসেছে। কিন্তু তাদের বিগত দিনের কার্যকলাপের কারণে জনগণ তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ২০০৮ ও তার পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে জনগণ তাদের বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছে। নির্বাচনে এলে তারা নির্বাচিত হবে না, নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। এজন্য তারা জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা না করেই প্রতিদিন কোনো না কোনো কর্মসূচি দিচ্ছে, আন্দোলন করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সুস্পষ্ট, একটি রাজনৈতিক দল আন্দোলন করতেই পারে। তাদের দলীয় নীতি অনুযায়ী তারা জনগণের কাছে যেতে চাইতেই পারে, সেজন্য তাদের বাধা দেওয়া হয় না। তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি করছে, আবার বলছে যে, আমরা নাকি তাদের বাধা দিচ্ছি।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, তারা আমাদের কাছে অনুমতি চাইল, ডিএমপি কমিশনারের কাছে গেল। তারা তারুণ্যের সমাবেশ করতে চায়, আমরা বলেছি আমাদের কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা যাবে না। রাস্তাঘাট বন্ধ ও যান চলাচল চলাচল বিঘ্নিত করা যাবে না। তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাইল, সেখানেই তাদের অনুমতি দেওয়া হলো। এরপরও তারা কীভাবে বলে, সরকার তাদের সহযোগিতা করছে না!
বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত তাদের যত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সবার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে। তারা কোনো না কোনো মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। এ কারণে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে।
লক্ষ্মীপুরে বিএনপি কর্মী নিহতের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জানতে পেরেছি, দুই গ্রুপ বা ব্যক্তির কর্তৃত্ব ও অংশীদারত্ব নিয়ে অসন্তোষ ছিল অনেকদিন থেকে। এই দুই গ্রুপের সম্পর্কটা এমন জায়গায় গিয়েছিল, যাতে একজন নিহত হয়েছেন। বিএনপি বলছে তিনি নাকি তাদের কর্মী। তাদের স্পষ্ট করে বলতে চাই, নিহত ব্যক্তি বিএনপির কর্মী নয়। তাদের পরিবারও সেটি বলেছে।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন, হাইওয়ে পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শাহাবুদ্দিন খান, ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলসহ ক্র্যাব নেতা, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবিসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।