ঢাকা ১১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দক্ষিণখানে পাষণ্ড স্বামী ও তার বন্ধুরা মিলে স্ত্রীকে ধর্ষণ! বিচারের আশায় ধর্ষিতা নারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকে উত্তেজনার নেপথ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল হাসিনার শাসনামল ছিল ইতিহাসের কলঙ্ক: যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না বোরহানউদ্দিন বিএনপির কেউ চাঁদাবাজি করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যাবস্হা নেয়া হবে: মাফরুজা সুলতানা পাঁচবিবির ইউএনও জেলা প্রশাসককে গাছের চারা উপহার মঠবাড়িয়ায় মুদি মনোহরী দোকান থেকে নগদ টাকা সহ মালামাল চুরির অভিযোগ রাজবাড়ী সদরের আলীপুরে একই সময় দুই স্বামীর সঙ্গে সংসার জান্নাতুলের, এলাকায় চাঞ্চল্য শেখ হাসিনার পতন ও বিতর্কিত ঠিকাদার শাহ আলমের সখ্যতার নতুন খেলা” গুলশানে বেদখল হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি, জানা গেল বাড়িগুলোর নাম-ঠিকানা প্রয়োজন ছাড়া প্রকল্প তৈরি নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ কোটি টাকা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্মকর্তারা।

পুরুষদের জন্য যেসব সাজ-সজ্জা নিষেধ

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সাজসজ্জা ইসলামী জীবনরীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ (জামিল) সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। -(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯১)

রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমরা (হালাল) যা ইচ্ছা খাও, পান করো ও পরিধান করো। তবে যেন তাতে দু’টি জিনিস না থাকে-অপচয় ও গর্ব।’ –(সহিহ বোখারি: ১০/১৫২)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে বনী আদম! অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য পোশাক নাজিল করেছি, তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকা ও বেশ-ভূষার জন্য। আর তাকওয়ার পোশাক, এটাই সর্বোত্তম। এটা আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের অন্যতম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। -( সুরা আরাফ, আয়াত, ২৬)

রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকতেন। তিনি নিজের মাথার চুল চিরুনি দিয়ে পরিপাটি করে রাখতেন। এ সম্পর্কে এক হাদিসে তিনি বলেছেন, আল্লাহতায়ালা চান তার বান্দারা বা ঈমানদার লোকেরা যখন আরেক মুমিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তখন তারা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পরিপাটি অবস্থায় থাকে।

বর্তমানে সময়ে নারী-পুরুষ সবার মাঝেই সাজ-সজ্জা ও পরিপাটি থাকার প্রবণতা বেড়েছে। সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে বর্তমান নারী-পুরুষেরা বিশ্বের বিভিন্নজনকে আইডল হিসেবে গ্রহণ করেন।

অনেকের অনুকরণে এমনভাবে নিজেকে সাজান যা আদৌ কাম্য নয়। যে বিষয়গুলোতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে। অথচ তা খেয়াল করেন না কেউ।

বিশেষত তরুনদের মাঝে এমন অনেক সাজ-সজ্জার প্রবণতা দেখা যায় যা শরীয়ত সমর্থিত নয়। বর্তমানে তরুনদের অনেকেই হাতে ব্রেসলেট পরেন, কেউ চুল লম্বা রাখেন, যা বাবরির পরিবর্তে মেয়েদের মতো হয়ে যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিপাটি থাকার প্রতি গুরুত্ব দিলেও বিপরীত লিঙ্গ বা পুরুষদের এমন সাজ গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন যা নারীদের সঙ্গে মিলে যায়।

এ বিষয়ে হজরত ইবনে আব্বাস রা . হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:
لَعَنَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُخَنَّثِينَ مِنْ الرِّجَالِ وَالْمُتَرَجِّلَاتِ مِنْ النِّسَاءِ وَقَالَ أَخْرِجُوهُمْ مِنْ بُيُوتِكُمْ قَالَ فَأَخْرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فُلَانًا وَأَخْرَجَ عُمَرُ فُلَانًا

‘নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরুষ হিজড়াদের উপর এবং পুরুষের বেশধারী মহিলাদের উপর লানত করেছেন।’- (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৮৮৬)

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যে সকল পুরুষ কৃত্রিমভাবে নারীর বেশ-ভুষা অবলম্বন করে হিজড়া সাজে অর্থাৎ যারা পোশাক-পরিচ্ছদ, কণ্ঠস্বর, কথা বলার ধরণ, চলাফেরা, রূপসজ্জা ইত্যাদি দিক দিয়ে নারীদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করে তাদের প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে হিজড়া হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। কিন্তু সৃষ্টিগতভাবে হিজড়াদের কোন দোষ নেই। কারণ এ ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব কোন হাত নেই। বরং মহান আল্লাহ তাদেরকে সেভাবেই সৃষ্টি করেছেন।

অনুরূপভাবে যে সকল মহিলা পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন, চুলের স্টাইল, সাজসজ্জা, কথা বলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবে পুরুষদের সাদৃশ্য ধারণ করে তাদের প্রতিও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লানত করেছেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
لَيسَ منَّا مَن تشبَّهَ بالرِّجالِ منَ النِّساءِ ولا من تَشبَّهَ بالنِّساءِ منَ الرِّجالِ

‘যে সব নারী পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে এবং যে সব পুরুষ নারীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, সহীহুল জামে হা/৪৫৩৩, সহীহ)

আরেক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,

لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ، وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেসব পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন যারা নারীদের পোশাক পরে এবং সেসব নারীকে অভিসম্পাত করেছেন যারা পুরুষের পোশাক পরিধান করে। -(আবু দাউদ : ৪০৯৮)

অমুসলিমদের সাজ-সজ্জার অনুকরণ

নারী-পুরুষের জন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুসলিমদের রীতি-নীতি ও কৃষ্টি-কালচার অনুসরণ করাকেও হারাম বলে আখ্যায়িত করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

‘যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।’ -(সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: পোশাক-পরিচ্ছেদ হা/৪০৩১-হাসান সহিহ)

পুরুষদের জন্য সাজ-সজ্জায় স্বর্ণ ও রৌপ্য ব্যবহার 

পুরুষদের জন্য স্বর্ণের তৈরি আংটি, হাত ঘড়ি, ব্রেসলেট, গলার মালা, চশমার ফ্রেম, জামার বোতাম, কলম ইত্যাদি ব্যবহার করা বৈধ নয়। (অনুরূপভাবে পুরুষদের জন্য রৌপ্যের তৈরি কেবল আংটি ছাড়া অন্য কোনও কিছু ব্যবহার করা বৈধ নয়)।

যায়েদ ইবনে আকরাম রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
أحل الذهب والحرير لإناث أمتي وحرم على ذكورهم

‘স্বর্ণ ও রেশমি বস্ত্র আমার উম্মতের নারীদের জন্য বৈধ এবং পুরুষের জন্য হারাম করা হয়েছে।’ (সিলসিলা সহীহা হা/১৮৬৫/৩০৩০)

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি ‘আলী ইবনে আবু তালিব রা.-কে বলতে শুনেছেন,
إِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَخَذَ حَرِيرًا فَجَعَلَهُ فِي يَمِينِهِ وَأَخَذَ ذَهَبًا فَجَعَلَهُ فِي شِمَالِهِ ثُمَّ قَالَ ‏ “‏ إِنَّ هَذَيْنِ حَرَامٌ عَلَى ذُكُورِ أُمَّتِي”‏ ‏

‘আল্লাহর নবী-সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ডান হাতে রেশম ও বাম হাতে স্বর্ণ নিয়ে বললেন, এ দু’টি জিনিস আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য হারাম।’ (সুনানে আবু দাউদ, অনুচ্ছেদ নারীদের জন্য রেশমি পোশাক বৈধ, সহিহ)

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দক্ষিণখানে পাষণ্ড স্বামী ও তার বন্ধুরা মিলে স্ত্রীকে ধর্ষণ! বিচারের আশায় ধর্ষিতা নারী

পুরুষদের জন্য যেসব সাজ-সজ্জা নিষেধ

আপডেট সময় ০৫:৩৪:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর ২০২২

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সাজসজ্জা ইসলামী জীবনরীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ (জামিল) সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। -(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯১)

রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমরা (হালাল) যা ইচ্ছা খাও, পান করো ও পরিধান করো। তবে যেন তাতে দু’টি জিনিস না থাকে-অপচয় ও গর্ব।’ –(সহিহ বোখারি: ১০/১৫২)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে বনী আদম! অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য পোশাক নাজিল করেছি, তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকা ও বেশ-ভূষার জন্য। আর তাকওয়ার পোশাক, এটাই সর্বোত্তম। এটা আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের অন্যতম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। -( সুরা আরাফ, আয়াত, ২৬)

রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকতেন। তিনি নিজের মাথার চুল চিরুনি দিয়ে পরিপাটি করে রাখতেন। এ সম্পর্কে এক হাদিসে তিনি বলেছেন, আল্লাহতায়ালা চান তার বান্দারা বা ঈমানদার লোকেরা যখন আরেক মুমিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তখন তারা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পরিপাটি অবস্থায় থাকে।

বর্তমানে সময়ে নারী-পুরুষ সবার মাঝেই সাজ-সজ্জা ও পরিপাটি থাকার প্রবণতা বেড়েছে। সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে বর্তমান নারী-পুরুষেরা বিশ্বের বিভিন্নজনকে আইডল হিসেবে গ্রহণ করেন।

অনেকের অনুকরণে এমনভাবে নিজেকে সাজান যা আদৌ কাম্য নয়। যে বিষয়গুলোতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে। অথচ তা খেয়াল করেন না কেউ।

বিশেষত তরুনদের মাঝে এমন অনেক সাজ-সজ্জার প্রবণতা দেখা যায় যা শরীয়ত সমর্থিত নয়। বর্তমানে তরুনদের অনেকেই হাতে ব্রেসলেট পরেন, কেউ চুল লম্বা রাখেন, যা বাবরির পরিবর্তে মেয়েদের মতো হয়ে যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিপাটি থাকার প্রতি গুরুত্ব দিলেও বিপরীত লিঙ্গ বা পুরুষদের এমন সাজ গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন যা নারীদের সঙ্গে মিলে যায়।

এ বিষয়ে হজরত ইবনে আব্বাস রা . হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:
لَعَنَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُخَنَّثِينَ مِنْ الرِّجَالِ وَالْمُتَرَجِّلَاتِ مِنْ النِّسَاءِ وَقَالَ أَخْرِجُوهُمْ مِنْ بُيُوتِكُمْ قَالَ فَأَخْرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فُلَانًا وَأَخْرَجَ عُمَرُ فُلَانًا

‘নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরুষ হিজড়াদের উপর এবং পুরুষের বেশধারী মহিলাদের উপর লানত করেছেন।’- (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৮৮৬)

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যে সকল পুরুষ কৃত্রিমভাবে নারীর বেশ-ভুষা অবলম্বন করে হিজড়া সাজে অর্থাৎ যারা পোশাক-পরিচ্ছদ, কণ্ঠস্বর, কথা বলার ধরণ, চলাফেরা, রূপসজ্জা ইত্যাদি দিক দিয়ে নারীদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করে তাদের প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে হিজড়া হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। কিন্তু সৃষ্টিগতভাবে হিজড়াদের কোন দোষ নেই। কারণ এ ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব কোন হাত নেই। বরং মহান আল্লাহ তাদেরকে সেভাবেই সৃষ্টি করেছেন।

অনুরূপভাবে যে সকল মহিলা পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন, চুলের স্টাইল, সাজসজ্জা, কথা বলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবে পুরুষদের সাদৃশ্য ধারণ করে তাদের প্রতিও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লানত করেছেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
لَيسَ منَّا مَن تشبَّهَ بالرِّجالِ منَ النِّساءِ ولا من تَشبَّهَ بالنِّساءِ منَ الرِّجالِ

‘যে সব নারী পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে এবং যে সব পুরুষ নারীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, সহীহুল জামে হা/৪৫৩৩, সহীহ)

আরেক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,

لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ، وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেসব পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন যারা নারীদের পোশাক পরে এবং সেসব নারীকে অভিসম্পাত করেছেন যারা পুরুষের পোশাক পরিধান করে। -(আবু দাউদ : ৪০৯৮)

অমুসলিমদের সাজ-সজ্জার অনুকরণ

নারী-পুরুষের জন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুসলিমদের রীতি-নীতি ও কৃষ্টি-কালচার অনুসরণ করাকেও হারাম বলে আখ্যায়িত করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

‘যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।’ -(সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: পোশাক-পরিচ্ছেদ হা/৪০৩১-হাসান সহিহ)

পুরুষদের জন্য সাজ-সজ্জায় স্বর্ণ ও রৌপ্য ব্যবহার 

পুরুষদের জন্য স্বর্ণের তৈরি আংটি, হাত ঘড়ি, ব্রেসলেট, গলার মালা, চশমার ফ্রেম, জামার বোতাম, কলম ইত্যাদি ব্যবহার করা বৈধ নয়। (অনুরূপভাবে পুরুষদের জন্য রৌপ্যের তৈরি কেবল আংটি ছাড়া অন্য কোনও কিছু ব্যবহার করা বৈধ নয়)।

যায়েদ ইবনে আকরাম রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
أحل الذهب والحرير لإناث أمتي وحرم على ذكورهم

‘স্বর্ণ ও রেশমি বস্ত্র আমার উম্মতের নারীদের জন্য বৈধ এবং পুরুষের জন্য হারাম করা হয়েছে।’ (সিলসিলা সহীহা হা/১৮৬৫/৩০৩০)

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি ‘আলী ইবনে আবু তালিব রা.-কে বলতে শুনেছেন,
إِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَخَذَ حَرِيرًا فَجَعَلَهُ فِي يَمِينِهِ وَأَخَذَ ذَهَبًا فَجَعَلَهُ فِي شِمَالِهِ ثُمَّ قَالَ ‏ “‏ إِنَّ هَذَيْنِ حَرَامٌ عَلَى ذُكُورِ أُمَّتِي”‏ ‏

‘আল্লাহর নবী-সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ডান হাতে রেশম ও বাম হাতে স্বর্ণ নিয়ে বললেন, এ দু’টি জিনিস আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য হারাম।’ (সুনানে আবু দাউদ, অনুচ্ছেদ নারীদের জন্য রেশমি পোশাক বৈধ, সহিহ)