ঢাকা ০৬:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভান্ডারিয়ায় প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় দারুল হুদা আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান (ইনডেক্স নং-৪৭১৯৫২) এর বিরুদ্ধে সিমাহীন দূর্নীতি সহ নানান অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আক্তারুজ্জামান কামাল।

৬ জুলাই (সোমবার) সকাল ১১ ঘটিকায় তার নিজ কার্যালয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্ল্যেখ করেন, ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান ইতিপূর্বে শারীরিক শিক্ষার ভুয়া শিক্ষা সনদ দিয়ে নদমুলা দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকুরি করেন। সেখান থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কোন বি,এড ডিগ্রি বিহীন ভূয়া কাগজ পত্র ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনা করে দারুল হুদা আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে তথ্য গোপন করে নিয়োগ প্রাপ্ত হন।

কিন্তু তার এমপিও নিয়ে ৩৭০০২.০০০০.০১৭.৩১.৪৭৮.২০২১-৬৯৩ স্মারক, নং ২৩/৫/২০২২ ইং তারিখে সহকারি পরিচালক মাধ্যমিক-২ দুর্গা রানী সিকদার এর সাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে ১৭/০৪/২০২২ ইং তারিখের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রথম নিয়োগকালীন সময় উপযুক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় মো. মিজানুর রহমানের প্রধান শিক্ষক পদে এমপিও হওয়ার সুযোগ রহিত করা হয়।

কিন্তু প্রাধান শিক্ষক টিঠি গোপন করে তার প্রধান শিক্ষক পদে এমপিও না হওয়া সত্তেও বিধি বর্হিভূতভাবে স্বপদে বহাল থেকে বর্তমান সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জহিরুল আলমের যোগ শাজোসে অবৈধ ভাবে কয়েকজন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারি পদে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। এবং একই সময় দুটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দেখিয়ে পূর্বের প্রতিষ্ঠান নদমুলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১০/১০/২০২০ তারিখে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে ও পরবর্তী তিন মাসের বেতন ভাতা গ্রহণ করেন, যাহা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত।

তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র ১৬ জন, যাহা ইতিমধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক শোভন দাস পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছেন। শিক্ষক কর্মচারি রয়েছে ১২ জন। বিদ্যালয়ের ১৭ শতাংশ জমি তাও অন্য নামে রেকর্ড হয়েছে। অন্য নামে রেকর্ড হলেও তা সমাধানের জন্য নেয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। এমনি ভাবে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন রকমের অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠান টি প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার পথে।তাই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত সাপেক্ষে এর সুষ্ঠু সমাধানের দাবী জানান।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের বলেন, সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে প্রার্থী বাচাই করা হয়েছে এতে কোন অনিয়ম হয় নাই। সাবেক সভাপতি ৩য় ৪র্থ শ্রেনী পদে তার নিজস্ব লোক নিয়োগ দিতে চেয়ে ছিলো এবং মোট অংকের টাকা দাবি করছে যা আমাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়। এ কারনে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করেছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জহিরুল আলম জানান, আমরা ইতিপূর্বে একটি চিঠি পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যে শিক্ষকরে বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেটের অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি সত্য হলে উনি(প্রধান শিক্ষক) এর পূর্বে একটি মাদ্রাসা থেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে বিল পেলো কিভাবে ? তিনি আরো বলেন, এখানে সমস্যটা হলো মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন ইনডেক্সধারীদের মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড অনেক সময় মানতে চায়না। তবে ম্যানেজিং কমিটি যদি মনে করে যে, ওনাকে(প্রধান শিক্ষক কে) নিজেদের অর্থায়নে রাখবেন বা বাদ দেবেন সেটা রেজুলেশন করে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন তাং,জমিদাতা দেলোয়ার হোসেন মাতুব্বর, জমিদাতা ইসমাইল হোসেন ফরাজি,সমাজ সেবক শফিউল্লাহ খান,ধাওয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মাসুদ তাং বাবু প্রমুখ।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভান্ডারিয়ায় প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

আপডেট সময় ১১:৪৮:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০২৩

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় দারুল হুদা আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান (ইনডেক্স নং-৪৭১৯৫২) এর বিরুদ্ধে সিমাহীন দূর্নীতি সহ নানান অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আক্তারুজ্জামান কামাল।

৬ জুলাই (সোমবার) সকাল ১১ ঘটিকায় তার নিজ কার্যালয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্ল্যেখ করেন, ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান ইতিপূর্বে শারীরিক শিক্ষার ভুয়া শিক্ষা সনদ দিয়ে নদমুলা দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকুরি করেন। সেখান থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কোন বি,এড ডিগ্রি বিহীন ভূয়া কাগজ পত্র ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনা করে দারুল হুদা আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে তথ্য গোপন করে নিয়োগ প্রাপ্ত হন।

কিন্তু তার এমপিও নিয়ে ৩৭০০২.০০০০.০১৭.৩১.৪৭৮.২০২১-৬৯৩ স্মারক, নং ২৩/৫/২০২২ ইং তারিখে সহকারি পরিচালক মাধ্যমিক-২ দুর্গা রানী সিকদার এর সাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে ১৭/০৪/২০২২ ইং তারিখের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রথম নিয়োগকালীন সময় উপযুক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় মো. মিজানুর রহমানের প্রধান শিক্ষক পদে এমপিও হওয়ার সুযোগ রহিত করা হয়।

কিন্তু প্রাধান শিক্ষক টিঠি গোপন করে তার প্রধান শিক্ষক পদে এমপিও না হওয়া সত্তেও বিধি বর্হিভূতভাবে স্বপদে বহাল থেকে বর্তমান সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জহিরুল আলমের যোগ শাজোসে অবৈধ ভাবে কয়েকজন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারি পদে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। এবং একই সময় দুটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দেখিয়ে পূর্বের প্রতিষ্ঠান নদমুলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১০/১০/২০২০ তারিখে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে ও পরবর্তী তিন মাসের বেতন ভাতা গ্রহণ করেন, যাহা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত।

তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র ১৬ জন, যাহা ইতিমধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক শোভন দাস পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছেন। শিক্ষক কর্মচারি রয়েছে ১২ জন। বিদ্যালয়ের ১৭ শতাংশ জমি তাও অন্য নামে রেকর্ড হয়েছে। অন্য নামে রেকর্ড হলেও তা সমাধানের জন্য নেয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। এমনি ভাবে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন রকমের অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠান টি প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার পথে।তাই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত সাপেক্ষে এর সুষ্ঠু সমাধানের দাবী জানান।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের বলেন, সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে প্রার্থী বাচাই করা হয়েছে এতে কোন অনিয়ম হয় নাই। সাবেক সভাপতি ৩য় ৪র্থ শ্রেনী পদে তার নিজস্ব লোক নিয়োগ দিতে চেয়ে ছিলো এবং মোট অংকের টাকা দাবি করছে যা আমাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়। এ কারনে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করেছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জহিরুল আলম জানান, আমরা ইতিপূর্বে একটি চিঠি পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যে শিক্ষকরে বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেটের অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি সত্য হলে উনি(প্রধান শিক্ষক) এর পূর্বে একটি মাদ্রাসা থেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে বিল পেলো কিভাবে ? তিনি আরো বলেন, এখানে সমস্যটা হলো মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন ইনডেক্সধারীদের মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড অনেক সময় মানতে চায়না। তবে ম্যানেজিং কমিটি যদি মনে করে যে, ওনাকে(প্রধান শিক্ষক কে) নিজেদের অর্থায়নে রাখবেন বা বাদ দেবেন সেটা রেজুলেশন করে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন তাং,জমিদাতা দেলোয়ার হোসেন মাতুব্বর, জমিদাতা ইসমাইল হোসেন ফরাজি,সমাজ সেবক শফিউল্লাহ খান,ধাওয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মাসুদ তাং বাবু প্রমুখ।