আওয়ামী লীগের দুঃশাসন অতীতের সব শাসন ব্যবস্থাকে ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ব্রিটিশ-পাকিস্তানের পরে এরশাদের (শাসন ব্যবস্থা) রুল তারপরে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের দুঃশাসন বাংলাদেশকে পুরোপুরি পঙ্গু করে ফেলেছে।
রোববার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক ফোরাম।
নিজের একটি বক্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগ তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি বলেছিলাম- পাকিস্তান আমলেও এতো অত্যাচার নির্যাতন হয়নি। এ কথা বলার কারণে তারা (আওয়ামী লীগ) আমাকে পাকিস্তানের চর বানিয়ে ফেলেছে। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা করলেন, আর তাকেই তারা পাকিস্তানের চর বলেন। আর আমি তো ক্ষুদ্র মানুষ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখানে একটা কথা না বললে ইতিহাসকে অস্বীকার করা হবে। আওয়ামী লীগ ৯৬ সালে প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি নিয়ে এসেছিল। এই দাবিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। তাদের দাবি ছিল- ‘দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। সুতরাং এখানে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজন।’ তখনকার ক্ষমতাসীন বিএনপি ও বেগম খালেদা জিয়া উপলব্ধি করেছিলেন যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এটি জরুরি। তাই সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি তিনি যুক্ত করেছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, যেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিল সেদিন বেগম খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে চিরস্থায়ীভাবে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। আজকে আওয়ামী লীগ সরকার যারা কোনো নির্বাচনে না গিয়ে অবৈধভাবে শক্তি প্রয়োগ করে, রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে।
‘বিআরটি এখন গলার কাঁটা’- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্লজ্জ’ এ কথা বলার পূর্বে তার পদত্যাগ করা উচিত ছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গত দশ বছর যাবত মানুষকে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে ফেলেছে। তা আমরা বহুদিন ধরে বলে আসছি।
আওয়ামী লীগ সবসময় বলে জিয়াউর রহমান নাকি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে বলে উল্লেখ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতিহাস বিকৃতির একটা সীমা থাকে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া ও সংবিধান ধ্বংস করার জন্য যদি কেউ এককভাবে দায়ী থাকে সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ। ১৯৭৪ সালে এই সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সম্পূর্ণ বদলে দিয়ে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। এটা দেশের জনগণ কখনো চায়নি।