ঢাকা ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দাউদকান্দি উপজেলা নবাগত ইউএন ও এসিল্যান্ড ভূমি ও পৌর প্রশাসক মো: জিয়াউর রহমান কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় ভোলায় আজকের পত্রিকার পাঠক বন্ধুর উদ্যোগে মাদক বিরোধী র‌্যালি,সেমিনার ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নতুন ব্রিজ এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে পথচারী জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে আমরা আর কোনো অবিচার চাই না’ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে বদলি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ রিমান্ডে যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক ২ আইজিপি বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ফের উত্তাল আশুলিয়া, বন্ধ ৫২ কারখানা ট্রাইব্যুনালে প্রথমবার হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ

গদখালীর চাষীরা ব্যস্ত সময় পার করছে গোলাপের চারা রোপণ ও পরিচর্যায়

যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার ফুলের রাজধানীখ্যাত গদখালীতে এখন চলছে গোলাপের চারা রোপনের মৌসুম। এখানকার চাষীরা ব্যস্ত ফুলের চারা পরিচর্যায়। কিছু দিন চাষীরা ব্যস্ত হয়ে পড়বেন বোরো ধান গোছানোর কাজে, তাই ফুল চাষীরা চাইছে ফুল ক্ষেতের কাজ শেষ করতে।

সরেজমিনে দেখা যায় এক পিচ গোলাপ ফুলের চারা চাষীরা ক্রয় করেছে ১২ থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত। পানিসারা ইউনিয়নের টাওরা গ্রামের মোহর আলী বলেন আমার ৪৪ শতক জমিতে গোলাপ ফুলের চাষ আছে, এ বছর আমি আরও ২৪ শতক জমিতে গোলাপের চারা রোপণ করেছি। বিঘা প্রতি চারা লাগে চার হাজার, সে হিসাবে আমর চারা লেগেছে তিন হাজার, শুধু চারা ক্রয় করতে খরচ হয়েছে ৪৫০০০ টাকা এ বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করে বিক্রির সময় পর্যন্ত প্রায় ১৫০০০০ টাকার মত খরচ হবে।

সরেজমিনে চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায় চারা রোপনের কিছু দিন পরে কলম বাধার সময় যে পিপি দিয়ে কলম বাধে শ্রমিক নিয়ে সেটা কাটতে হয়, জমি নিড়ানি, আগাছা দমন, জমিতে সেচ, সার ও কীটনাশকে এখন আগের চেয়ে খরচ প্রায় দ্বিগুণ। আগে একজন শ্রমিকের মজুরি ছিলো ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, আর এখন মজুরি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে শ্রমিকের মজুরি আরও বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। আর সার ও কীটনাশকের দাম তো আকাশ ছোঁয়া। তার উপর আছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার ফলে নতুন নতুন পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় ও বিভিন্ন রোগ বালাই এর সৃষ্টি হয় আর চাষীরা পড়ে যান বেকায়দায়। ঘুরে ফিরে চাষীদের মুখে একটাই কথা যে হারে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, সে হারে কি কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ?? ধান, পাট যখন কৃষকের ঘরে আসে ঠিক তখন দাম কমে যায় আর কৃষক যখন বিক্রি করে দেয় তারপরেই দাম বৃদ্ধি পায়, তাহলে কৃষকের লাভ কোথায়। তাদের দাবি একটাই সরকার যেনো কৃষকদের দিকে নজর দেয়।

কৃষকের আরও একটা দাবি আছে মাটি পরীক্ষা, তাদের আমাদের দেশে ঠিকমতো মাটি পরীক্ষা হয় না। কৃষিই সর্মদ্ধি, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে।
গদখালী ইউনিয়ন, নাভারণ ইউনিয়ন ও পানিসারা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন জাতের গোলাপ ফুলের চাষ হয়। এ বছরও প্রায় নতুন করে একশ একর জমিতে গোলাপের চারা রোপণ করা হয়েছে।

পাশাপাশি ফুল চাষীরা গাধা ফুলের কাটিম রোপন, রজনী গন্ধা ও ভুট্টা ফুলের বীজ লাগানো এবং গ্লাডিওলাস ফুলের বীজ সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোর রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও পানিসারায় একটি কোল্ড স্টোরের কাজ শেষ হয়েছে আরও তিন বছর আগে, কিন্তু কি কারণে চালু হচ্ছে না, তা সবারই অজানা। কোল্ড স্টোরটি চালু হলে চাষীদের কষ্ট অনেকংশে কমে যেতো।

তবে ফুল চাষীরা এবছর খুশি গোলাপের ভালো দাম পাওয়ায়। প্রবীণ চাষী আলাউদ্দীন ব্যপারী বলেন তার বয়সে গোলাপের এত দাম কখনও দেখেনি। আমাদের দেশের গোলাপ এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, তাই ফুল চাষীদের দাবি সরকার যেনো ফুল সেক্টরের দিকে আরও নজর দেয়, তাহলে ফুল রপ্তানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব, যা দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করে দেশের উন্নয়নে ভুমিকা রাখবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দাউদকান্দি উপজেলা নবাগত ইউএন ও এসিল্যান্ড ভূমি ও পৌর প্রশাসক মো: জিয়াউর রহমান কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময়

গদখালীর চাষীরা ব্যস্ত সময় পার করছে গোলাপের চারা রোপণ ও পরিচর্যায়

আপডেট সময় ০৪:৩৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০২৩

যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার ফুলের রাজধানীখ্যাত গদখালীতে এখন চলছে গোলাপের চারা রোপনের মৌসুম। এখানকার চাষীরা ব্যস্ত ফুলের চারা পরিচর্যায়। কিছু দিন চাষীরা ব্যস্ত হয়ে পড়বেন বোরো ধান গোছানোর কাজে, তাই ফুল চাষীরা চাইছে ফুল ক্ষেতের কাজ শেষ করতে।

সরেজমিনে দেখা যায় এক পিচ গোলাপ ফুলের চারা চাষীরা ক্রয় করেছে ১২ থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত। পানিসারা ইউনিয়নের টাওরা গ্রামের মোহর আলী বলেন আমার ৪৪ শতক জমিতে গোলাপ ফুলের চাষ আছে, এ বছর আমি আরও ২৪ শতক জমিতে গোলাপের চারা রোপণ করেছি। বিঘা প্রতি চারা লাগে চার হাজার, সে হিসাবে আমর চারা লেগেছে তিন হাজার, শুধু চারা ক্রয় করতে খরচ হয়েছে ৪৫০০০ টাকা এ বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করে বিক্রির সময় পর্যন্ত প্রায় ১৫০০০০ টাকার মত খরচ হবে।

সরেজমিনে চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায় চারা রোপনের কিছু দিন পরে কলম বাধার সময় যে পিপি দিয়ে কলম বাধে শ্রমিক নিয়ে সেটা কাটতে হয়, জমি নিড়ানি, আগাছা দমন, জমিতে সেচ, সার ও কীটনাশকে এখন আগের চেয়ে খরচ প্রায় দ্বিগুণ। আগে একজন শ্রমিকের মজুরি ছিলো ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, আর এখন মজুরি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে শ্রমিকের মজুরি আরও বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। আর সার ও কীটনাশকের দাম তো আকাশ ছোঁয়া। তার উপর আছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার ফলে নতুন নতুন পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় ও বিভিন্ন রোগ বালাই এর সৃষ্টি হয় আর চাষীরা পড়ে যান বেকায়দায়। ঘুরে ফিরে চাষীদের মুখে একটাই কথা যে হারে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, সে হারে কি কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ?? ধান, পাট যখন কৃষকের ঘরে আসে ঠিক তখন দাম কমে যায় আর কৃষক যখন বিক্রি করে দেয় তারপরেই দাম বৃদ্ধি পায়, তাহলে কৃষকের লাভ কোথায়। তাদের দাবি একটাই সরকার যেনো কৃষকদের দিকে নজর দেয়।

কৃষকের আরও একটা দাবি আছে মাটি পরীক্ষা, তাদের আমাদের দেশে ঠিকমতো মাটি পরীক্ষা হয় না। কৃষিই সর্মদ্ধি, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে।
গদখালী ইউনিয়ন, নাভারণ ইউনিয়ন ও পানিসারা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন জাতের গোলাপ ফুলের চাষ হয়। এ বছরও প্রায় নতুন করে একশ একর জমিতে গোলাপের চারা রোপণ করা হয়েছে।

পাশাপাশি ফুল চাষীরা গাধা ফুলের কাটিম রোপন, রজনী গন্ধা ও ভুট্টা ফুলের বীজ লাগানো এবং গ্লাডিওলাস ফুলের বীজ সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোর রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও পানিসারায় একটি কোল্ড স্টোরের কাজ শেষ হয়েছে আরও তিন বছর আগে, কিন্তু কি কারণে চালু হচ্ছে না, তা সবারই অজানা। কোল্ড স্টোরটি চালু হলে চাষীদের কষ্ট অনেকংশে কমে যেতো।

তবে ফুল চাষীরা এবছর খুশি গোলাপের ভালো দাম পাওয়ায়। প্রবীণ চাষী আলাউদ্দীন ব্যপারী বলেন তার বয়সে গোলাপের এত দাম কখনও দেখেনি। আমাদের দেশের গোলাপ এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, তাই ফুল চাষীদের দাবি সরকার যেনো ফুল সেক্টরের দিকে আরও নজর দেয়, তাহলে ফুল রপ্তানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব, যা দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করে দেশের উন্নয়নে ভুমিকা রাখবে।