জলবায়ু অভিবাসীদের সুরক্ষার জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩১ মার্চ) জাতিসংঘের সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংলাপের অংশ হিসেবে আয়োজিত একটি প্যানেল আলোচনায় দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দায়ী রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের পরামর্শমূলক মতামতের জন্য অনুরোধ করে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত রেজুল্যুশনে জলবায়ু পরিবর্তন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের স্থানচ্যুতির মধ্যে যোগসূত্রের বিষয়টি স্বীকৃত হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চরম ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রসচিব মোমেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাস্তুচ্যুতিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং প্রশমন সংক্রান্ত কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করে প্রণীত অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা; জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল প্রতিষ্ঠা এবং মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কক্সবাজারে জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় আবাসন প্রকল্প খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রসচিব। তিনি জলবায়ু অর্থায়নসহ অন্যান্য বৈশ্বিক উদ্যোগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
এই প্রেক্ষাপটে তিনি সম্প্রতি চালু হওয়া বাংলাদেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ২০২৩-২০৫০ বাস্তবায়নে আর্থিক সহায়তার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানান।
একই দিন পররাষ্ট্রসচিব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল জ্য-পিয়েরে লাখয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
বৈঠকে আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা অত্যন্ত আন্তরিকতা এবং উচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ সৈন্য ও পুলিশ অবদানকারী দেশ হিসেবে মর্যাদা লাভ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানান।
পররাষ্ট্রসচিব জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা সংক্রান্ত দপ্তরগুলোতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির অনুরোধ করেন। প্রত্যুত্তরে আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত ছিলেন।