ঢাকা ১০:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দাউদকান্দি উপজেলা নবাগত ইউএন ও এসিল্যান্ড ভূমি ও পৌর প্রশাসক মো: জিয়াউর রহমান কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় ভোলায় আজকের পত্রিকার পাঠক বন্ধুর উদ্যোগে মাদক বিরোধী র‌্যালি,সেমিনার ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নতুন ব্রিজ এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে পথচারী জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে আমরা আর কোনো অবিচার চাই না’ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে বদলি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ রিমান্ডে যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক ২ আইজিপি বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ফের উত্তাল আশুলিয়া, বন্ধ ৫২ কারখানা ট্রাইব্যুনালে প্রথমবার হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ

নওগাঁয় নারীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)’র আইন ও গণমাধ্যম শাখার মূখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, নওগাঁয় র‍্যাবের হাতে আটক নারী সুলতানা জেসমিনের (৪৫) অসুস্থ হওয়া ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্তে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

র‍্যাব বলছে, তার মৃত্যুর অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এ বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি করে র‌্যাবের অভ্যন্তরীণ সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ র‍্যাব সদস্যরা এসময় উপস্হিত ছিলেন।

র‍্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু ও র‍্যাব সদস্যদের কারো দায়িত্বে অবহেলা ছিল কি না, জানতে চাইলে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব এনামুল হকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে, ফেক আইডি ব্যবহারে তার নামে চাকরি দেওয়া ও বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। তিনি ২০২২ সালের মার্চে এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন।

সাংবাদিকদের করা অপর এক প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, জেসমিন নামে ওই নারী র‍্যাব হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এখানে র‍্যাব সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে আমাদের ইনকোয়ারি সেল রয়েছে। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্তে দেখা হচ্ছে কারো কোনো ধরনের অবহেলা, গাফিলতি বা যোগসাজশ কিংবা অনৈতিক কিছু ছিল কি না। তদন্তে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে অতীতের ন্যায় চাকরিচ্যুতিসহ কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কারো অবহেলা বা গাফিলতি র‍্যাব পেয়েছে কি না, জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, এটা এখনই বলার মতো সময় আসেনি। মেডিকেল রিপোর্টে সব ক্লিয়ার। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি তদন্তে যদি কারো গাফিলতি পায়, অবশ্যই আমরা আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

র‍্যাব জানিয়েছে, একজন নারী তার নামে ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে প্রতারণা করে। এ অভিযোগে আদালতে মামলাও করেন। গত ১৯ ও ২০ মার্চ নিজ কার্যালয়ের সামনেই তার নাম ব্যবহার করে প্রতারক চক্র অর্থ প্রতারণা করে। এই খবর পেয়ে খোঁজ নেন যে প্রতারণায় আল আমিন নামে একজনের যোগসাজশ রয়েছে। এরপর তিনি খবর পান জেসমিন নামে এক নারীর নাম। তিনি অফিসে যাওয়ার পথে র‍্যাবের টহল টিমকে অভিযোগ করেন। তার সামনেই অভিযুক্ত নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদকালে নারী সদস্যরা ছিলেন। সাক্ষী ছিলেন, অভিযোগকারী এনামুল হকও ছিলেন।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদকালে আটক জেসমিন সব অভিযোগ স্বীকার করেন। তার মোবাইলে চলমান অবস্থায় এনামুল হকের নামে খোলা ফেক ফেসবুক আইডি দেখা যায়। তার মোবাইলে সোনালী ব্যাংকের আ্যকাউন্টের তথ্য পাই। যেখানে লাখ লাখ টাকা জমা রসিদের তথ্য প্রমান পাওয়া যায়।

র‍্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পরবর্তী সময়ে সাক্ষীদের সামনে তাকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আটক করা হয়। এরপর জব্দ আলামত নিয়ে একটি কম্পিউটারের দোকানে প্রিন্ট করা হয়। এরপর সেখান থেকে থানায় মামলার উদ্দেশ্যে যাবার পথে ওই নারী অসুস্থবোধ করেন। তখন র‍্যাব মামলার চেয়ে তাকে হাসপাতালে নেওয়াকেই অধিক গুরুত্ব দেয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র‍্যাব শুধু না, প্রত্যেকটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নারী ও শিশু অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সিরিয়াস। আমরা ওই নারীকে নওগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাই। তিনি গাড়ি থেকে নিজে নেমে হেঁটে হাসপাতালে ঢুকেন। তার আত্মীয়-স্বজন ও এসিল্যান্ডসহ ভূমি অফিসের তার সহকর্মীদের খবর দেওয়া হয়।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, ওই দিন সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্ট্রোক সন্দেহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে সিটি স্ক্যানে স্ট্রোকের আলামত আসে। তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ওই নারী কী কারণে মারা গেছেন তা কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেছেন। ডেথ সার্টিফিকেটে উঠে এসেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে পারমিশন লাগে। ভুক্তভোগী যুগ্ম সচিব এনামুল হক অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দাউদকান্দি উপজেলা নবাগত ইউএন ও এসিল্যান্ড ভূমি ও পৌর প্রশাসক মো: জিয়াউর রহমান কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময়

নওগাঁয় নারীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে

আপডেট সময় ০৪:৩৮:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)’র আইন ও গণমাধ্যম শাখার মূখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, নওগাঁয় র‍্যাবের হাতে আটক নারী সুলতানা জেসমিনের (৪৫) অসুস্থ হওয়া ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্তে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

র‍্যাব বলছে, তার মৃত্যুর অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এ বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি করে র‌্যাবের অভ্যন্তরীণ সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ র‍্যাব সদস্যরা এসময় উপস্হিত ছিলেন।

র‍্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু ও র‍্যাব সদস্যদের কারো দায়িত্বে অবহেলা ছিল কি না, জানতে চাইলে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব এনামুল হকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে, ফেক আইডি ব্যবহারে তার নামে চাকরি দেওয়া ও বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। তিনি ২০২২ সালের মার্চে এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন।

সাংবাদিকদের করা অপর এক প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, জেসমিন নামে ওই নারী র‍্যাব হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এখানে র‍্যাব সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে আমাদের ইনকোয়ারি সেল রয়েছে। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্তে দেখা হচ্ছে কারো কোনো ধরনের অবহেলা, গাফিলতি বা যোগসাজশ কিংবা অনৈতিক কিছু ছিল কি না। তদন্তে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে অতীতের ন্যায় চাকরিচ্যুতিসহ কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কারো অবহেলা বা গাফিলতি র‍্যাব পেয়েছে কি না, জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, এটা এখনই বলার মতো সময় আসেনি। মেডিকেল রিপোর্টে সব ক্লিয়ার। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি তদন্তে যদি কারো গাফিলতি পায়, অবশ্যই আমরা আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

র‍্যাব জানিয়েছে, একজন নারী তার নামে ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে প্রতারণা করে। এ অভিযোগে আদালতে মামলাও করেন। গত ১৯ ও ২০ মার্চ নিজ কার্যালয়ের সামনেই তার নাম ব্যবহার করে প্রতারক চক্র অর্থ প্রতারণা করে। এই খবর পেয়ে খোঁজ নেন যে প্রতারণায় আল আমিন নামে একজনের যোগসাজশ রয়েছে। এরপর তিনি খবর পান জেসমিন নামে এক নারীর নাম। তিনি অফিসে যাওয়ার পথে র‍্যাবের টহল টিমকে অভিযোগ করেন। তার সামনেই অভিযুক্ত নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদকালে নারী সদস্যরা ছিলেন। সাক্ষী ছিলেন, অভিযোগকারী এনামুল হকও ছিলেন।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদকালে আটক জেসমিন সব অভিযোগ স্বীকার করেন। তার মোবাইলে চলমান অবস্থায় এনামুল হকের নামে খোলা ফেক ফেসবুক আইডি দেখা যায়। তার মোবাইলে সোনালী ব্যাংকের আ্যকাউন্টের তথ্য পাই। যেখানে লাখ লাখ টাকা জমা রসিদের তথ্য প্রমান পাওয়া যায়।

র‍্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পরবর্তী সময়ে সাক্ষীদের সামনে তাকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আটক করা হয়। এরপর জব্দ আলামত নিয়ে একটি কম্পিউটারের দোকানে প্রিন্ট করা হয়। এরপর সেখান থেকে থানায় মামলার উদ্দেশ্যে যাবার পথে ওই নারী অসুস্থবোধ করেন। তখন র‍্যাব মামলার চেয়ে তাকে হাসপাতালে নেওয়াকেই অধিক গুরুত্ব দেয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র‍্যাব শুধু না, প্রত্যেকটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নারী ও শিশু অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সিরিয়াস। আমরা ওই নারীকে নওগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাই। তিনি গাড়ি থেকে নিজে নেমে হেঁটে হাসপাতালে ঢুকেন। তার আত্মীয়-স্বজন ও এসিল্যান্ডসহ ভূমি অফিসের তার সহকর্মীদের খবর দেওয়া হয়।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, ওই দিন সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্ট্রোক সন্দেহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে সিটি স্ক্যানে স্ট্রোকের আলামত আসে। তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ওই নারী কী কারণে মারা গেছেন তা কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেছেন। ডেথ সার্টিফিকেটে উঠে এসেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে পারমিশন লাগে। ভুক্তভোগী যুগ্ম সচিব এনামুল হক অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন।