মাদারীপুরের শিবচরে গতকাল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস। এতে চালকসহ ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকালের এই দুর্ঘটনা অতিরিক্ত গতির কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মাসুদ আলম। দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। বেপরোয়া গতিতে চালানোর কারণে বাসটি এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যায়। যদি গতি নিয়ন্ত্রণ করে বাসটি চালাত তাহলে ২০ জনের জীবন এভাবে ঝরে যেত না।
এদিকে কয়েক মাস আগেও বড় ধরনের একটি দুর্ঘটনা ঘটায় এই ইমাদ পরিবহনেরই একটি বাস। গোপালগঞ্জে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে একটি ট্রাকের সঙ্গে ওই দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হন।
গত বছরের ১৭ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলা সদরের গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু ইনস্টিটিউট (বিনা) উপ-কেন্দ্রের সামনের ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
ইমাদ পরিবহনের বাসটি যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছিল। পথিমধ্যে গোপীনাথপুর উত্তর পাড়া মহাসড়কে বালু বোঝাই একটি ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় বাসটি। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
৩৩ ঘণ্টা বাস চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন চালক
এদিকে গতকালের দুর্ঘটনার বিষয়ে জানা যাচ্ছে, গতকাল বাসটি চালাচ্ছিলেন যে চালক তিনি টানা ৩৩ ঘণ্টার বেশি বাস চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন। চালকের নাম জাহিদ হাসান।
জাহিদের ছেলে রাতুল হাসান বলেন, মাসে দুই দিন বাড়ি আসতেন বাবা। গাড়ি চালিয়ে তিনি সব সময় ক্লান্ত থাকতেন। গত পরশু ঢাকা, পিরোজপুর, খুলনা রুটে পাঁচটি ট্রিপে গাড়ি চালিয়েছেন। বাবা শনিবার রাতে ফোনে জানান, তিনি অনেক ক্লান্ত ছিলেন। রোববার ঢাকা থেকে এসে বাসায় এক দিন বিশ্রাম নেবেন এ কথাও বলেছিলেন। কিন্তু বাবা আমাদের চিরতরে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন।
চালকদের ব্যস্ত সূচি ও বিশ্রামের ঘাটতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইমাদ পরিবহনের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের কোম্পানির বাস যারা চালান, তাদের বিশ্রামের জন্য প্রতিটি জায়গায় আমাদের ঘর রাখা আছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির চালক জাহিদ ক্লান্ত ছিলেন, তিনি এমন কথা আমাদের কাউকে জানাননি।