সাংবাদিকদের সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক ছিল উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সততার সঙ্গে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছি এবং সাংবাদিকদের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি।
রোববার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের দরবার হলে বিশিষ্ট সাংবাদিকদের সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “সারাজীবন সততার সঙ্গে রাজনীতি করেছি, ৬৪ বছরের জীবনে সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমার জন্য নেগেটিভ কিছু পাইনি, সংবাদ কর্মীদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।”
তিনি বলেন, হাওর এলাকার কিছুটা পরিবর্তন আনতে পেরেছি। কোনও সরকারের আমলেই ব্যক্তির জন্য কিছু চাইনি। প্রতিটি রাজনীতিবিদ যদি এরকম মন-মানসিকতা পোষণ করেন, তাহলে অবশ্যই এলাকার উন্নয়ন হবে।
রাষ্ট্রপতি বক্তৃতার সময় তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করেন এবং দ্বিতীয় মেয়াদে তার অবসরের কথাও বলেন।
রাষ্ট্রপতি অত্যন্ত আবেগাপ্লুতভাবে বলেন, “আর ৪২ দিন পর আমি জনতার মাঝে ফিরে যাবো। আমার ভালো লাগছে যে আমি সম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে পেরেছি। সবার কাছেই আমি কৃতজ্ঞ।”
সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বরাবরই সাংবাদিকদের সঙ্গে আমার একটা সুসম্পর্ক ছিল। বিশেষ করে আমি যখন ডেপুটি স্পিকার ছিলাম এবং শেষে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করা পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে আমার খুবই আন্তরিক সম্পর্ক ছিল।’
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বঙ্গভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এটাই শেষ নৈশভোজ। কেননা আগামী ২৪ এপ্রিল বেলা ১১টায় নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।
আর রাষ্ট্রপতি দরবার হলের অনুষ্ঠানস্থলে আসেন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। রাষ্ট্রপতি আসার পর, পুরো দরবার হল যেন প্রাণোচ্ছ্বল হয়ে ওঠে। এসময় সাংবাদিক-বান্ধব রাষ্ট্রপতি ঘুরে ঘুরে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তিনি তার সেই চিরাচরিত স্বভাব কথার জাদুতে দরবার হলকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। ছবিও তোলেন। প্রটোকল ডিঙিয়েই রাষ্ট্রপতি জুনিয়র-সিনিয়র সব সাংবাদিকের কাছে গিয়ে হাত মেলান। এসময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে চাইলে সবাইকেই হাসিমুখে সে সুযোগ দেন আবদুল হামিদ। বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি সাংবাদিকদের হাওর এলাকায় এবং ঢাকার নিকুঞ্জের নিজ বাসভবনে নিমন্ত্রণও জানান।
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, দৈনিক কালবেলার সম্পাদক আবেদ খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টিভির সিইও মোজাম্মেল হক বাবু, বিএফইউজে সাবেক সভাপতি এবং টিভি টুডে প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাঈমুর রহমান খান, ডিবিসির প্রধান সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম, বিশিষ্ট কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, এটিএন বাংলার নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিষ সৈকত, পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস’ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাফিজা দৌলা এবং চ্যানেল আইয়ের সাংবাদিক নীলাদ্রি শেখর বক্তব্য রাখেন।
নৈশভোজে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ হোসেন, বাংলা জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান সরদার, বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, বিএফইউজের মহাসচিব দীপ আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজ) -এর সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।