ঢাকা ১০:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চিন্ময়ের গ্রেফতার ও সাইফুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে যত অপতথ্য ছড়িয়েছে বাংলাদেশকে ২২৬৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জার্মানি দুদকের মামলায় অব্যাহতি পেলেন জামায়াত সেক্রেটারি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক বীজ রাখার দায়ে তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমান গুজবে কান দিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি না করার আহবান জাবিতে ছাত্রদলের দুগ্রুপে উত্তেজনা, বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধার পরকীয়ার জেরে স্বামী খুন, স্ত্রী প্রেমিকসহ ৩ জনের ফাঁসি নিটওয়্যার উদ্ভাবন ও সহযোগিতায় সিজিং ‘বাংলাদেশ নাইট’ ১১১ নারীকে ধর্ষণ–যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত ধনকুবের ফায়েদ ইসকন ও আ.লীগকে নিষিদ্ধের দাবি বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের

অগ্নিঝরা মার্চ মাস নিয়ে জয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা দাবিকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর বাঙালি জাতি মার্চের দুপুরে ফুঁসে ওঠে উল্লেখ করে নিজের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

তিনি বলেন, মার্চের দুপুর থেকেই এই আন্দোলনের সূচনা করে বাঙালি জাতি। চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু।

বুধবার (১ মার্চ) সজীব ওয়াজেদ জয় তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে লেখেন, স্বায়ত্তশাসনসহ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির ছয়টি দাবি নিয়ে, ১৯৬৬ সালে, ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। এর অল্প সময়ের মধ্যেই দলের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। চষে বেড়াতে শুরু করেন বাংলার মাঠ-প্রান্তর। এ সময় ‘ছয় দফা: আমাদের বাঁচার দাবি’ শিরোনামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে দেশজুড়ে বিলি করা হয়। তুমুল গণজোয়ার শুরু হয় ছয় দফার পক্ষে। তা দেখে ভয় সৃষ্টি হয় পাকিস্তানি জান্তাদের মনে।

ছয় দফা ঘোষণার পরের তিন মাসে দেশজুড়ে ৩২টি জনসভা করেন বঙ্গবন্ধু এবং প্রায় প্রতিবারই তাকে আটক করা হয়। অবশেষে বাঙালির জাগরণ দমানোর জন্য দীর্ঘ মেয়াদের জন্য জেলে ঢোকানো হয় জাতির স্বপ্নপুরুষ শেখ মুজিবকে। কিন্তু লাভ হয়নি। ছয় দফা ঘোষণা করে জাতীয় মুক্তির যে বীজমন্ত্র তিনি রোপণ করেছিলেন, তা ততদিনে শাখা-প্রশাখায় ছড়িয়ে গেছে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।

এই ছয় দফাকে কেন্দ্র করেই স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠে পুরো জাতি উল্লেখ করে এই তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, যার প্রভাব পড়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের মোট ৩১৩ আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ। নৌকা প্রতীকের কাণ্ডারি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে হয়ে ওঠেন অখণ্ড পাকিস্তানের সর্বোচ্চ নেতা। কিন্তু পাকিস্তানি জান্তা ও নির্বাচনের পরাজিত পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিকরা ষড়যন্ত্র করতে থাকে। অনেক টালবাহানার পর, ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, স্বৈরাচার জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ দুপুরে, সেই অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। এরপরই ফুঁসে ওঠে আপামর বাঙালি। চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু।

বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র লেখেন, মূলত, মার্চের প্রথম দুপুর থেকেই এই আন্দোলনের সূচনা। প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে পাকিস্তানি হানাদারদের অসহেযোগিতা করার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু জান্তারা সেই আন্দোলনে গুলো চালিয়ে শতাধিক মানুষের রক্তে রাজপথ রক্তাক্ত করে তোলে। ক্রমেই কঠোর থেকে কঠোর অবস্থানের নির্দেশনা দেন বাঙালির সর্বোচ্চ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান।

সজীব ওয়াজেদ জয় লেখেন, প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই এই ভূখণ্ডের সরকারি-বেসরকারি প্রশাসনের একক নেতৃত্ব চলে আসে বঙ্গবন্ধুর হাতে। দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগেই পুরো দেশ চলতে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনে। বাস্তব অর্থে, শুধু সামরিক ছাউনিগুলো ছাড়া আর কোথাও পাকিস্তানিদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের সরকার ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধুই তখন বাংলাদেশের অঘোষিত রাষ্ট্রপ্রধান এবং ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি পরিণত হয় ‘বিকল্প রাষ্ট্রপ্রধান’-এর সদর দপ্তরে। অবস্থা বেগতিক দেখে, পাকিস্তানি জান্তা ও রাজনীতিকরা ঢাকায় এসে বঙ্গবন্ধুকে আলোচনার আহ্বান জানান।

তিনি আরও লেখেন, রাজনৈতিক কারণে বঙ্গবন্ধু তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন, কিন্তু দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের কার্যক্রমও গতিশীল রাখেন। পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রে পা না দিয়ে, সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে নির্দেশনা দিতে থাকেন বঙ্গবন্ধু। সেসব নির্দেশ মেনে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে মুক্তির স্বপ্নে মগ্ন সাত কোটি জনতা। অবশেষে ২৫ মার্চ কালরাতে হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত বাঙালির ওপর আক্রমণ চালালে, বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দি করে রাখা হয়। কিন্তু তার নামেই পরিচালিত হতে থাকে মুক্তিযুদ্ধ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চিন্ময়ের গ্রেফতার ও সাইফুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে যত অপতথ্য ছড়িয়েছে

অগ্নিঝরা মার্চ মাস নিয়ে জয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

আপডেট সময় ১২:০৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা দাবিকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর বাঙালি জাতি মার্চের দুপুরে ফুঁসে ওঠে উল্লেখ করে নিজের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

তিনি বলেন, মার্চের দুপুর থেকেই এই আন্দোলনের সূচনা করে বাঙালি জাতি। চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু।

বুধবার (১ মার্চ) সজীব ওয়াজেদ জয় তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে লেখেন, স্বায়ত্তশাসনসহ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির ছয়টি দাবি নিয়ে, ১৯৬৬ সালে, ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। এর অল্প সময়ের মধ্যেই দলের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। চষে বেড়াতে শুরু করেন বাংলার মাঠ-প্রান্তর। এ সময় ‘ছয় দফা: আমাদের বাঁচার দাবি’ শিরোনামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে দেশজুড়ে বিলি করা হয়। তুমুল গণজোয়ার শুরু হয় ছয় দফার পক্ষে। তা দেখে ভয় সৃষ্টি হয় পাকিস্তানি জান্তাদের মনে।

ছয় দফা ঘোষণার পরের তিন মাসে দেশজুড়ে ৩২টি জনসভা করেন বঙ্গবন্ধু এবং প্রায় প্রতিবারই তাকে আটক করা হয়। অবশেষে বাঙালির জাগরণ দমানোর জন্য দীর্ঘ মেয়াদের জন্য জেলে ঢোকানো হয় জাতির স্বপ্নপুরুষ শেখ মুজিবকে। কিন্তু লাভ হয়নি। ছয় দফা ঘোষণা করে জাতীয় মুক্তির যে বীজমন্ত্র তিনি রোপণ করেছিলেন, তা ততদিনে শাখা-প্রশাখায় ছড়িয়ে গেছে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।

এই ছয় দফাকে কেন্দ্র করেই স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠে পুরো জাতি উল্লেখ করে এই তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, যার প্রভাব পড়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের মোট ৩১৩ আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ। নৌকা প্রতীকের কাণ্ডারি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে হয়ে ওঠেন অখণ্ড পাকিস্তানের সর্বোচ্চ নেতা। কিন্তু পাকিস্তানি জান্তা ও নির্বাচনের পরাজিত পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিকরা ষড়যন্ত্র করতে থাকে। অনেক টালবাহানার পর, ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, স্বৈরাচার জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ দুপুরে, সেই অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। এরপরই ফুঁসে ওঠে আপামর বাঙালি। চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু।

বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র লেখেন, মূলত, মার্চের প্রথম দুপুর থেকেই এই আন্দোলনের সূচনা। প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে পাকিস্তানি হানাদারদের অসহেযোগিতা করার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু জান্তারা সেই আন্দোলনে গুলো চালিয়ে শতাধিক মানুষের রক্তে রাজপথ রক্তাক্ত করে তোলে। ক্রমেই কঠোর থেকে কঠোর অবস্থানের নির্দেশনা দেন বাঙালির সর্বোচ্চ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান।

সজীব ওয়াজেদ জয় লেখেন, প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই এই ভূখণ্ডের সরকারি-বেসরকারি প্রশাসনের একক নেতৃত্ব চলে আসে বঙ্গবন্ধুর হাতে। দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগেই পুরো দেশ চলতে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনে। বাস্তব অর্থে, শুধু সামরিক ছাউনিগুলো ছাড়া আর কোথাও পাকিস্তানিদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের সরকার ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধুই তখন বাংলাদেশের অঘোষিত রাষ্ট্রপ্রধান এবং ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি পরিণত হয় ‘বিকল্প রাষ্ট্রপ্রধান’-এর সদর দপ্তরে। অবস্থা বেগতিক দেখে, পাকিস্তানি জান্তা ও রাজনীতিকরা ঢাকায় এসে বঙ্গবন্ধুকে আলোচনার আহ্বান জানান।

তিনি আরও লেখেন, রাজনৈতিক কারণে বঙ্গবন্ধু তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন, কিন্তু দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের কার্যক্রমও গতিশীল রাখেন। পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রে পা না দিয়ে, সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে নির্দেশনা দিতে থাকেন বঙ্গবন্ধু। সেসব নির্দেশ মেনে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে মুক্তির স্বপ্নে মগ্ন সাত কোটি জনতা। অবশেষে ২৫ মার্চ কালরাতে হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত বাঙালির ওপর আক্রমণ চালালে, বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দি করে রাখা হয়। কিন্তু তার নামেই পরিচালিত হতে থাকে মুক্তিযুদ্ধ।