রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ সহ অসাধু ব্যাক্তিদের বিচারের দাবি ও বাদপড়া শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করার লক্ষ্যে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকার পরও প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ না আসায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার সদস্যরা। এদিকে অধ্যক্ষের এমন উদাসীন কর্মকাণ্ড নতুন কিছু নয় বলে জানান, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক।
তারা জানান, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ম বহির্বিত কর্মকাণ্ডের কারণে অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারীরা অতিষ্ঠ হয়ে পরেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে কোন সিদ্ধান্ত তিনি একাই নেন। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো তাকেই নানাভাবে হয়রানি মূলক শিকারের সম্মুখীন হতে হয়।জানা গেছে, বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদরাসাটি চলছে নানান অনিয়মের মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাস না, ছাড়াও রয়েছে নিয়োগ বানিজ্য ও অধ্যক্ষের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অভিযোগ।
গত বছর প্রতিষ্ঠানটিতে ৩ টি পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বিনিময়ে মধ্যে দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়েছে। এছাড়াও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে রয়েছে সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন বরাদ্দ লুটপাটের অভিযোগ। সবশেষ তিন শিক্ষার্থীর ফরম পূরণে অধ্যক্ষের চরম উদাসীনতায় সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নজরদারির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা সাধারণ শিক্ষার্থীর পরিবারগুলো।
দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে না পারা ৩ শিক্ষার্থী শিমুল, শাকিল, ও শফিউল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মিত ক্লাস করেছি। স্যার যখন যা বলেছে শুনেছি। আমরা মাদরাসার সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উর্ত্তীণ হয়েছি। ফরম পূরণ করতে গিয়ে জানতে পারি আমরা এবার পরীক্ষা দিতে পারবো না। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমাদের কি অপরাধ? আমরা কেন পরীক্ষা দিতে পারবো না? পরে অভিভাবকরা জানতে পেরে স্যারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন কিন্তু স্যারকে পাওয়া যাচ্ছে না।
শিক্ষার্থী শাকিল মিয়ার মা শাহেদা বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে লেখাপড়া শেখাচ্ছি। আমাদের অপরাধ কি? মাস্টারের সাথে আমাদের কোন শত্রুতা নেই কিন্তু তিনি আমার ও আমার সন্তানের ভবিষ্যত অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন কেন? আমি যে কোন মূল্যে আমার ছেলে ও অন্যান্য শিক্ষার্থীরা যেন এবারই পরীক্ষা দিতে পারে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ তাহেরুল ইসলাম জানান, করোনাকালীন সময়ে অনেক ছাত্রছাত্রী অনিয়মিত ছিল। ওইসময় তাদেরকে পাওয়া যায়নি, এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যসের সাথে যোগাযোগ করার পরেও তারা সাড়া দেননি। এজন্য তাদের রেজিষ্ট্রেশন হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলাম আবেদনও করে এসেছি। নিশ্চয়ই তাদের পরীক্ষার সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে। আমার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আনায়ন করা হয়েছে এরা একশ্রেণীর মানুষ যারা এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন চায়না। আমাকে সরাতে পারলে তাদের ফয়দা হাসিল হবে।সুস্থতার সহিত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়েছে, এখানে কোন দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতি হয় নাই।
এ বিষয়ে,জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহেদুল ইসলাম দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখছি যদি প্রতিষ্ঠান প্রধানের গাফিলতির কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।