ঢাকা ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশি-বিদেশি অস্ত্রের ভান্ডার নতুন জঙ্গি সংগঠনের

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র কাছে দেশি-বিদেশি অস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে। এসব অস্ত্র চক্রটি তাদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করে আসছিলো। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চক্রটির অস্ত্র সরবরাহকারীসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

রোববার (৮ জানুয়ারি) বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও রাজধানীর কদমতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- অস্ত্র সরবরাহকারী কবীর আহাম্মদ (৫০), শামীম মাহফুজের সহযোগী ইয়াসিন (৪০) ও আব্দুর রহমান ইমরান।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি দেশীয় অস্ত্র, ৬টি একনলা বন্দুক, ১১ রাউন্ড গুলি, সিসা, এসিড, গান পাউডার, অকটেনসহ বিভিন্ন ধরনের দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টুরোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত ২১ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার সাইফুল ইসলাম তুহিন ও নাঈম হোসেনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই সংগঠনে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কবির আহাম্মদকে শনাক্ত করে সিটিটিসি। পরে সিটিটিসি কবীর আহাম্মদকে বান্দরবান জেলা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি বাইশারী এলাকার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে মাটির নিচে লুকায়িত অবস্থায় দুটি প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে অস্ত্র ও গোলাবারূদ জব্দ করা হয়। এছাড়া তার দুই সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কবীর জানায়, সে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’কে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল এবং জব্দ হওয়া অস্ত্রের কিছু অংশ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কাছে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। প্রাথমিকভাবে তার বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অস্ত্র মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

dhakapost

গ্রেপ্তারদের বরাতে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র মাস্টার মাইন্ড পলাতক আসামি শামিন মাহফুজ দুর্গম পার্বত্য এলাকায় ওই সংগঠনের সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন ধাপে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে গ্রেপ্তার কবীর আহাম্মদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরীর কদমতলী থানা এলাকা থেকে তার দুই সক্রিয় সদস্য ইয়াসিন ও আব্দুর রহমান ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, ইয়াসিন ও আব্দুর রহমান ইমরান জঙ্গি সংগঠনটির সক্রিয় সদস্য। তারা উভয়েই পলাতক আসামি শামিন মাহফুজের ঘনিষ্ট সহযোগী। গ্রেপ্তার আব্দুর রহমান ইমরানের মাধ্যমে শামিন মাহফুজ বিভিন্ন সময় তার সাংগঠনিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করত। এছাড়া গ্রেপ্তার ইয়াসিন বিভিন্ন সময় শামিন মাহফুজের জন্য সেল্টার হাউজ ব্যবস্থাপনাসহ সংগঠনের উগ্রবাদী আদর্শে দীক্ষিত হয়ে কথিত হিজরতে গমনকারীদের জন্য ব্যবহৃত শেল্টার হাউজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কবীর আহাম্মদ আগে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করলেও এখন তিনিও জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সক্রিয় সদস্য। অস্ত্র সরবরাহের জন্য এই জঙ্গি সংগঠনের কাছ থেকে টাকাও নিত।

এখন পর্যন্ত কতজন সদস্য এই সংগঠনে আছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখনো কথিত হিজরতকারীদের নিয়ে কাজ করছি। এছাড়া এই সংগঠনের কত সদস্য আছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর ডেমরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছে। তাদেরকে আজ আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করা হবে। রিমান্ডে এনে এবিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দেশি-বিদেশি অস্ত্রের ভান্ডার নতুন জঙ্গি সংগঠনের

আপডেট সময় ০৪:৩৫:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র কাছে দেশি-বিদেশি অস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে। এসব অস্ত্র চক্রটি তাদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করে আসছিলো। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চক্রটির অস্ত্র সরবরাহকারীসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

রোববার (৮ জানুয়ারি) বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও রাজধানীর কদমতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- অস্ত্র সরবরাহকারী কবীর আহাম্মদ (৫০), শামীম মাহফুজের সহযোগী ইয়াসিন (৪০) ও আব্দুর রহমান ইমরান।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি দেশীয় অস্ত্র, ৬টি একনলা বন্দুক, ১১ রাউন্ড গুলি, সিসা, এসিড, গান পাউডার, অকটেনসহ বিভিন্ন ধরনের দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টুরোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত ২১ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার সাইফুল ইসলাম তুহিন ও নাঈম হোসেনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই সংগঠনে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কবির আহাম্মদকে শনাক্ত করে সিটিটিসি। পরে সিটিটিসি কবীর আহাম্মদকে বান্দরবান জেলা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি বাইশারী এলাকার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে মাটির নিচে লুকায়িত অবস্থায় দুটি প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে অস্ত্র ও গোলাবারূদ জব্দ করা হয়। এছাড়া তার দুই সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কবীর জানায়, সে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’কে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল এবং জব্দ হওয়া অস্ত্রের কিছু অংশ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কাছে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। প্রাথমিকভাবে তার বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অস্ত্র মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

dhakapost

গ্রেপ্তারদের বরাতে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র মাস্টার মাইন্ড পলাতক আসামি শামিন মাহফুজ দুর্গম পার্বত্য এলাকায় ওই সংগঠনের সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন ধাপে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে গ্রেপ্তার কবীর আহাম্মদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরীর কদমতলী থানা এলাকা থেকে তার দুই সক্রিয় সদস্য ইয়াসিন ও আব্দুর রহমান ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, ইয়াসিন ও আব্দুর রহমান ইমরান জঙ্গি সংগঠনটির সক্রিয় সদস্য। তারা উভয়েই পলাতক আসামি শামিন মাহফুজের ঘনিষ্ট সহযোগী। গ্রেপ্তার আব্দুর রহমান ইমরানের মাধ্যমে শামিন মাহফুজ বিভিন্ন সময় তার সাংগঠনিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করত। এছাড়া গ্রেপ্তার ইয়াসিন বিভিন্ন সময় শামিন মাহফুজের জন্য সেল্টার হাউজ ব্যবস্থাপনাসহ সংগঠনের উগ্রবাদী আদর্শে দীক্ষিত হয়ে কথিত হিজরতে গমনকারীদের জন্য ব্যবহৃত শেল্টার হাউজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কবীর আহাম্মদ আগে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করলেও এখন তিনিও জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সক্রিয় সদস্য। অস্ত্র সরবরাহের জন্য এই জঙ্গি সংগঠনের কাছ থেকে টাকাও নিত।

এখন পর্যন্ত কতজন সদস্য এই সংগঠনে আছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখনো কথিত হিজরতকারীদের নিয়ে কাজ করছি। এছাড়া এই সংগঠনের কত সদস্য আছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর ডেমরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছে। তাদেরকে আজ আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করা হবে। রিমান্ডে এনে এবিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে।