ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেছেন, ছয়টি মেট্রোরেলের সমন্বয়ে একটি সংঘবদ্ধ মহাকর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ২১ দশমিক ২৬ কিমি ও ১৭ স্টেশন বিশিষ্ট মেট্রোরেলের নির্মাণ কর্মযজ্ঞ চলছে। আজ মেট্রোরেল লাইন-৬ এর একাংশের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০৩০ সালে ঢাকা মহানগরীতে মেট্রোরেলের একটা মাকড়শার জাল তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে এক স্থান থেকে ঢাকার আরেক স্থানে যাতায়াত করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের মেট্রোরেলের শুভ উদ্বোধনের পর উত্তরা উত্তর মেট্রো স্টেশনের পাশে আয়োজিত সুধী-সমাবেশে একথা বলেন তিনি।
ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ২০২৪ সালের জুন মাসে এমআরটি লাইন-৬ চালুর কথা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ও মন্ত্রী মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই এমআরটি লাইন-৬ এর উদ্বোধন করতে সক্ষম হয়েছি। আজ প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেল উদ্বোধনের মাধ্যমে আমাদের উপহার দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এমআরটি লাইন-৬ এর মতিঝিল অংশের কাজ আগামী বছরের ডিসেম্বরে উদ্বোধনের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে তা চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নাধীন আছে। মেট্রোরেল লাইন-১ বাংলাদেশে প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। এর কাজ ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন বলে প্রত্যাশা করছি। এমআরটি লাইন-৫ এর কাজ ২০২৩ সালের জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছি।
আরও দুটি মেট্রো রেলের কাজ চলছে উল্লেখ করে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, আমরা এর ফিজিবিলিটি স্টাডি করছি। আমরা আশা করছি, ফিজিবিলিটি স্টাডির ভিত্তিতে বিনিয়োগ প্রকল্প বহন করে ২০৩০ সালে ঢাকা মহানগরীতে মেট্রোরেলের একটা মাকড়শার জাল তৈরি করা সম্ভব হবে। এবং ঢাকা মহানগরবাসী যেকোনো স্থান থেকে ঢাকার প্রধান প্রধান এলাকায় যাতায়াত করতে পারবেন।
তিনি বলেন, মেট্রোরেলের মূল একটা অনুষঙ্গ হচ্ছে ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (পিওডি)। প্রধানমন্ত্রী উত্তরা উত্তর সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনের পাশে ২৮ দশমিক ৬১ একর জায়গায় সংস্থান করে দিয়েছেন। সেখানে পিওডি জোন নির্মাণের জন্য নকশার কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, প্রত্যেকটি এমআরটি লাইনে যেন আমরা স্টেশন প্লাজা করি। এমআরটি লাইন-৬ অধীনে চারটি স্টেশন প্লাজা নির্মাণ কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন।
ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ঢাকা হচ্ছে প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু এখানে গাড়ি চলার যে ঘনত্ব, গাড়ি যেভাবে চলাচল করে তা ছয় কিমির বেশি চলতে পারে না। আরও কম চলতে পারে। এমআরটি চালুর পরে, এই যে পরিবেশ তার উন্নয়ন হবে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে আসা তথ্যের বরাতে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, শুধু যানজটের কারণে ও তার ফলশ্রুতিতে ৩ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হচ্ছে। এমআরটি নেটওয়ার্ক পুরোপুরি চালু হলে প্রতি বছর ৪০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
এমআরটি লাইন-৬ চালু হয়ে গেলে, ট্রাভেল টাইম কস্ট বাবদ আট কোটি ৩৮ লাখ টাকা প্রতিদিন সাশ্রয় হবে। সঙ্গে সঙ্গে ভেহিকেল অপারেশনস কস্ট বাবদ প্রায় সোয়া কোটি টাকা প্রতিদিন সাশ্রয় হবে।