সরকার হটানোর যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
ফখরুল বলেন, আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার বিষয়ে কাজ করছি। দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরিপ্রেক্ষিতে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। দ্রুত এ চূড়ান্ত রূপরেখা নিয়ে জাতির সামনে আসব। রূপরেখায় কী থাকবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে একটি সুষ্ঠু অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য। সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভোটাররা নির্বিঘ্নে যাতে ভোট দিতে পারেন, সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এটিই আমাদের প্রধান বিষয়। এ ছাড়া আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন যে, নির্বাচনের পরে আন্দোলনকারী দলগুলোর সমন্বয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সব রাজনৈতিক দলকে যুগপৎ আন্দোলনের আহ্বান জানাচ্ছি। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে কী হবে, তা নির্ধারিত হবে। জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সঙ্গে আন্দোলনের বিষয়ে সংলাপ করবেন কি না— প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে এখনও আমরা ফরমালি কোনো আলাপ-আলোচনা করিনি।
যুগপৎ আন্দোলনে সব দলের জন্যই দরজা খোলা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, আমাদের রাস্তা খোলা। যেকোনো রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, সংগঠন— যারা এ কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করবে, তাদের নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না এবং তাদের ২০ দলে থাকা না থাকা নিয়ে দেওয়া বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ওরা একটু বক্তব্য দিয়েছে। আমরা যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলছি এখন। এটি সুস্পষ্টভাবে বুঝতে হবে। সব দল নিজ-নিজ অবস্থান থেকে আন্দোলন করবে। এটিই হলো আমাদের কথা।
বিএনপি পুলিশকে কখনো প্রতিপক্ষ মনে করে না বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশের উচিত জনগণের বন্ধু হওয়া। আমরা মনে করি যে, তাদের সাংবিধানিক যে দায়িত্ব আছে, তারা পালন করবে। কিন্তু সরকার অবৈধভাবে টিকে থাকার জন্য সংবিধান লঙ্ঘন করে পুলিশকে যখন ব্যবহার করে, তখন নিঃসন্দেহে সেই বিষয়গুলো জনগণের সামনে এসে দাঁড়ায়।
তিনি আরও বলেন, যে ঘটনাগুলো ঘটছে, তার সবই পুলিশ ঘটাচ্ছে না। কয়েকটি জায়গায় অতি উৎসাহী কিছু অফিসার এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জে চাইনিজ রাইফেল দিয়ে যে গুলি হলো, তা কীভাবে হলো, কোন কর্তৃত্ব থেকে তিনি এটি ব্যবহার করতে পারলেন- সেই উত্তর কিন্তু এখনো বাংলাদেশের মানুষ পায়নি।
নির্বাচনের আগে কোনো রাজনৈতিক দল-ব্যক্তিকে যেন শুধুমাত্র তার মতের জন্য হয়রানি না করা হয়— সে দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব। ওষুধের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহৃত ২০টি জেনেরিকের ৫০টি ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম ৫০ শতাংশ থেকে ১৩৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গুটিকয়েক ব্যবসায়ীকে মুনাফা পাইয়ে দেওয়ার জন্য অনৈতিকভাবে ওধুধের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। আমরা এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।