ঢাকা ০৪:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোহরে ফাতেমি কাকে বলে, পরিমাণ কত?

বিয়ের পর স্বাভাবিক নিয়মে স্ত্রীর ভরণপোষণ, ভালো-মন্দ দেখা-শোনার দায়িত্ব চলে আসে স্বামীর কাঁধে। পরস্পরের ওপর বিভিন্ন অধিকার চলে আসে। স্বামীর জন্য স্ত্র্রীর মোহরানা আদায় করা ওয়াজিব হয়ে পড়ে। ইসলামে কোনো নারীকে বিয়ে করলে তাকে অবশ্যই মোহর দিতে হয়। কিন্তু এর মানে এই নয় যে মানুষকে দেখানোর জন্য কোটি টাকা মোহর ধার্য করতে হবে। মোহর ধার্য করা শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, মোহর স্ত্রীর অধিকার।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারীদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, যদি তোমরা তাদের মোহর প্রদান কর বিয়ের জন্য, প্রকাশ্যব্যভিচার বা গোপন প্রণয়িনী গ্রহণকারী হিসেবে নয়। -(সুরা মায়েদা. আয়াত, ৫)

আর মোহরানা স্বামীর সামর্থ্যের ঊর্ধ্বে হতে পারবে না। স্ত্রীর বংশের ও তাঁর সমমানের মেয়েদের মোহরানার পরিমাণ বিবেচনা করাও উচিত। মোহরানার সর্বোচ্চ কোনো পরিমাণ ইসলাম নির্ধারণ করেনি। (বাদায়েউস সানায়ে : ২/২৭৫, মিরকাতুল মাফাতিহ : ৬/৩৫৮)

মোহরে ফাতেমি বলা হয়, নবী (সা.) নিজ কন্যা হজরত ফাতিমা (রা.)-কে হযরত আলী (রা.) এর সঙ্গে বিবাহ দেওয়ার সময় যে মোহর নির্ধারণ করেছিলেন, তাকেই মোহরে ফাতেমি বলে।

মোহরে ফাতেমির পরিমাণ

মোহরে ফাতেমির পরিমাণ হলো সাড়ে বার উকিয়া বা পাঁচশত দিরহাম। আধুনিক হিসেবে হয় ১৩১.২৫ তোলা বা ১.৫৩০৯ কিলোগ্রাম রূপা। এক দিরহামের ওজন হলো ৩.০৬১৮ গ্রাম। বর্তমান বাজারে প্রতি তোলা রূপার মূল্য ১০০০ টাকা হলে মোহরে ফাতেমির পরিমাণ হবে ১৩১৫০০ টাকা।

হাদিস শরিফে এসেছে, ‘রাসূল (সা.) এর কন্যাদের মোহর ছিল সাড়ে বার উকিয়া বা পাঁচশত দিরহাম।’ -(মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ১৬৬৩০)

তবে মনে রাখতে হবে, বিভিন্ন সময় রূপার দাম উঠানামা করে। তাই অবশ্যই বর্তমান বাংলাদেশী টাকায় বর্তমান বাজারমূল্য জুয়েলারীর দোকান থেকে জেনে নিতে হবে। (সুনানে আবু দাউদ ১/২৯৪, জাওয়াহেরুল ফিক্বহ ৩/৪১০, আপকি মাসায়েল ৬/২৮৬)

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মোহরে ফাতেমি কাকে বলে, পরিমাণ কত?

আপডেট সময় ০১:৫৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২

বিয়ের পর স্বাভাবিক নিয়মে স্ত্রীর ভরণপোষণ, ভালো-মন্দ দেখা-শোনার দায়িত্ব চলে আসে স্বামীর কাঁধে। পরস্পরের ওপর বিভিন্ন অধিকার চলে আসে। স্বামীর জন্য স্ত্র্রীর মোহরানা আদায় করা ওয়াজিব হয়ে পড়ে। ইসলামে কোনো নারীকে বিয়ে করলে তাকে অবশ্যই মোহর দিতে হয়। কিন্তু এর মানে এই নয় যে মানুষকে দেখানোর জন্য কোটি টাকা মোহর ধার্য করতে হবে। মোহর ধার্য করা শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, মোহর স্ত্রীর অধিকার।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারীদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, যদি তোমরা তাদের মোহর প্রদান কর বিয়ের জন্য, প্রকাশ্যব্যভিচার বা গোপন প্রণয়িনী গ্রহণকারী হিসেবে নয়। -(সুরা মায়েদা. আয়াত, ৫)

আর মোহরানা স্বামীর সামর্থ্যের ঊর্ধ্বে হতে পারবে না। স্ত্রীর বংশের ও তাঁর সমমানের মেয়েদের মোহরানার পরিমাণ বিবেচনা করাও উচিত। মোহরানার সর্বোচ্চ কোনো পরিমাণ ইসলাম নির্ধারণ করেনি। (বাদায়েউস সানায়ে : ২/২৭৫, মিরকাতুল মাফাতিহ : ৬/৩৫৮)

মোহরে ফাতেমি বলা হয়, নবী (সা.) নিজ কন্যা হজরত ফাতিমা (রা.)-কে হযরত আলী (রা.) এর সঙ্গে বিবাহ দেওয়ার সময় যে মোহর নির্ধারণ করেছিলেন, তাকেই মোহরে ফাতেমি বলে।

মোহরে ফাতেমির পরিমাণ

মোহরে ফাতেমির পরিমাণ হলো সাড়ে বার উকিয়া বা পাঁচশত দিরহাম। আধুনিক হিসেবে হয় ১৩১.২৫ তোলা বা ১.৫৩০৯ কিলোগ্রাম রূপা। এক দিরহামের ওজন হলো ৩.০৬১৮ গ্রাম। বর্তমান বাজারে প্রতি তোলা রূপার মূল্য ১০০০ টাকা হলে মোহরে ফাতেমির পরিমাণ হবে ১৩১৫০০ টাকা।

হাদিস শরিফে এসেছে, ‘রাসূল (সা.) এর কন্যাদের মোহর ছিল সাড়ে বার উকিয়া বা পাঁচশত দিরহাম।’ -(মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ১৬৬৩০)

তবে মনে রাখতে হবে, বিভিন্ন সময় রূপার দাম উঠানামা করে। তাই অবশ্যই বর্তমান বাংলাদেশী টাকায় বর্তমান বাজারমূল্য জুয়েলারীর দোকান থেকে জেনে নিতে হবে। (সুনানে আবু দাউদ ১/২৯৪, জাওয়াহেরুল ফিক্বহ ৩/৪১০, আপকি মাসায়েল ৬/২৮৬)