বেশ কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে পরিবেশ দূষণ কমাতে বাজারে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে। এখন ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েরই প্রশ্ন পলিথিনের বিকল্প তাহলে কি?
পলিথিনের ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে যেভাবে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে এতে সুপরিকল্পনা ও বিকল্প ছাড়া বাজার থেকে সম্পূর্ণরুপে পলিথিনে ব্যবহার তুলে ফেলা অসম্ভব। এবং বিকল্পের কথা আসতেই সবার আগে মাথায় আসে সোনালী ব্যাগের কথা। যা পাট দিয়ে তৈরি হয়। সারাবিশ্বে যখন প্লাস্টিক দূষণ কমানোর জন্য সবাই প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্যের বিকল্পের জন্য মরিয়া হয়ে আছে তখন আমাদের দেশে ২০১৭ সালেই পলিথিনের বিকল্প আবিষ্কার করে ফেলেন আণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক মহাপরিচালক ড. মোবারক আহমেদ খান। নিজে গবেষণা করে পাট দিয়ে সোনালি ব্যাগ তৈরি করেন, যা পরিবেশবান্ধব। দেখতেও পলিথিনের মতো। এই ব্যাগ দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।
কিন্তু সোনালি ব্যাগের আলোচনা থাকলেও বাণিজ্যিক উৎপাদন নেই। এর মধ্যে পার হয়ে গেছে সাত বছর। বাংলাদেশের একজন বিজ্ঞানী পলিথিনের বিকল্প তৈরি করার পরও দেশে বাণিজ্যিকভাবে এখনো উৎপাদন সম্ভব হয়নি। তবে হঠাৎ বাজার থেকে পলিথিন ও পলিপ্রপিনের ব্যাগে নিষেধাজ্ঞা আসায় সবাই সোনালী ব্যাগ নিয়ে ভাবছে। পাট থেকে পরিবেশবান্ধব সোনালি ব্যাগ উৎপাদনের টেকসই পদ্ধতি বিস্তৃতির জন্য পৃথক কারখানা স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন। প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার কমাতে পাটের বহুমুখী ব্যবহারের ক্ষেত্র প্রসারে এই কারখানায় পাট থেকে পরিবেশবান্ধব পচনশীল যৌগিক পলিমার তৈরি করে সোনালি ব্যাগসহ বিভিন্ন মোড়ক সামগ্রী তৈরি করা হবে। পরিবেশবান্ধব পচনশীল মোড়ক সামগ্রী উৎপাদন ও রপ্তানির মাধ্যমে অর্জন করা হবে বৈদেশিক মুদ্রা। যা অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে। ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে পাটের ব্যাগ তৈরির কাজ। এক কেজিতে গড়ে ১০০ ব্যাগ তৈরী করা যায়। প্রাথমিকভাবে দৈনিক ৫ টন সোনালি ব্যাগ তৈরির পরিকল্পনা চলছে।