ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিম উদ্দিন ঘাট সংলগ্ন তজুমউদ্দিন এরিয়া মেঘনা নদীতে জেলেদের দুই গ্রুপের মধ্যে জালপাতা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাজিব মাঝি নামের এক জেলের মাছ ধরার ট্রলার ও জাল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রাজিব হাকিম উদ্দিন নৌ-থানায় ২০ জনকে বিবাদী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে মেঘনার চর জহির উদ্দিন নামক জায়গায় এ ঘটনা ঘটে।
হাকিম উদ্দিন নৌ-থানার ওসি সৈয়দ মোশারফ হোসেন অভিযোগ দায়ের হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- ভোলার তজুমউদ্দিন উপজেলার মো. শাহাদাত পাটোয়ারী (৪৮), নাগর গাছি (৫০), নাজিম গাছি (৫২), সেলিম গাছি (৫৫), রত্তন গাছি (৬০) ও নুরনবী গাছিসহ মোট ২০ জন।
ভুক্তভোগী রাজিব মাঝি বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসান নগর গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী এবং অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মেঘনার জেলেরা নিয়মিত মেঘনায় মাছ ধরে জীবনযাপন করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত পাটোয়ারী জেলেদেরকে জিম্মি করে রাখছেন। মেঘনায় মাছ ধরতে গেলেই তাকে চাঁদা দিতে হয়, নইলে তিনি জেলেদেরকে জিম্মি করে নিয়ে যান।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার দুপুরে রাজিব মাঝি চর জহির উদ্দিন সংলগ্ন মেঘনা নদীতে জাল পাততে গেলে শাহাদাত পাটোয়ারীর নেতৃত্বে বিবাদীরা রাজিব মাঝিকে ও তার ট্রলারে থাকা অন্যান্য জেলেদেরকে বেধড়ক মারধর করে একটি ডুবচরে নামিয়ে দিয়ে ট্রলার ও জাল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। প্রাণরক্ষায় রাজিব মাঝিসহ আহত জেলেরা অন্য জেলেদের সহায়তায় হাকিম উদ্দিন ঘাটে এসে পৌঁছায়। ভুক্তভোগী রাজিব মাঝিসহ মেঘনার সাধারণ জেলেরা এ ঘটনার উপযুক্ত বিচারের দাবি তোলেন।
এদিকে ঘটনাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে RAB, কোষ্টগার্ড, নৌবাহিনী, জেলা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা সংস্থা, ডিবি, এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের সদস্যরা গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহাদাত পাটোয়ারীসহ অন্যান বিবাদীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও তাদেরকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
হাকিম উদ্দিন নৌ থানার ওসি সৈয়দ মোশারফ হোসেন বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটির তদন্ত চলমান আছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক ও ভোলা RAB-৮ এর এএসপি জানান, গোয়েন্দার একাধিক টিম ঘটনাটির পেছনে তদন্ত করছে এবং কোষ্টগার্ড ঘটনাস্থলে মহড়া দিয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।