তিন মেধাবী ও ভবিষ্যৎ স্থপতিকে অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে দেশে রড উৎপাদনকারী শীর্ষ প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি) সেন্টারে ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস: বেস্ট আন্ডার গ্র্যাজুয়েট থিসিস’ শিরোনামে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বিজয়ীদের হাতে এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়।
পাঁচ বিশিষ্ট স্থপতি নিয়ে গঠিত বিচারক প্যানেল আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর দূরদর্শিতা ও মেধার ভিত্তিতে এ তিনজনকে মনোনীত করেন। চতুর্থবারের মতো এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে কেএসআরএম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মানজুরুর রহমান। তিনি বিজয়ীদের হাতে অ্যাওয়ার্ড ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। এতে বক্তব্য দেন কেএসআরএম মার্কেট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংসের মহাব্যবস্থাপক কর্নেল (অব.) মো. আশফাকুল ইসলাম, আইএবির সাধারণ সম্পাদক স্থপতি ফারহানা শারমীন ইমু।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্থপতি রাশেদ চৌধুরী, সূচনা বক্তব্য দেন আইএবি সভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ও আইএবি সম্পাদক (শিক্ষা) আরেফিন ইব্রাহিম।
এবার প্রথম বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তাওরিম রাহুল সিংহ, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দ্বিতীয় মাহির অরিত্র ও তৃতীয় হয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) মো. নাফিউ।
বিজয়ীদের হাতে যথাক্রমে ১ লাখ, ৭৫ হাজার ও ৫০ হাজার টাকার চেক এবং সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
কেএসআরএম ও আইএবি যৌথ উদ্যোগে সেরা গবেষণাপত্রের ভিত্তিতে প্রকল্প প্রদর্শনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ স্থপতিদের এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজর মিজানুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (ব্রান্ড) শাহেদ পারভেজ, ডেপুটি ম্যানেজার মনিরুজ্জামান রিয়াদ, সিনিয়র অফিসার মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া প্রমুখ। এবারের অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজনের সমন্বয়ক ছিলেন স্থপতি সায়মুম কবীর।
কর্নেল (অব.) মো. আশফাকুল ইসলাম বক্তব্যে বলেন, তারুণ্যের উচ্ছল মনন আমাদের ভবিষ্যৎ নাগরিক নির্মাণের মূলশক্তি, ঠিক যেমন কেএসআরএম স্টিল। আগামীদিনের এই সুন্দর মননগুলোকে চিনতে পারলে বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষা নির্মাণে তা সহায়ক শক্তি হিসেবেই কাজ করবে। বাংলাদেশ এই মুহূর্তে যেসব মেগাস্ট্রাকচারগুলো উদ্বোধন করা হচ্ছে কিংবা যেগুলো নির্মাণাধীন রয়েছে সেগুলোর প্রেক্ষিতেও এই একই ভাবনা কাজ করে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ও জিডিপিতে অবদান রাখার মতো প্রতিটি মেগা প্রকল্পের অংশীদার হতে পারায় আমরা গর্বিত। আমি নিশ্চিত তরুণ প্রজন্মের মনে লালিত হচ্ছে যে আগামী, তা প্রত্যেকের জন্য আরও এক মিলিয়ন সুযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা রাখে।
প্রসঙ্গত, দেশের অন্যতম ইস্পাত প্রস্তুতকারী শিল্প গ্রুপ প্রতিবছর তিন উদীয়মান, মেধাবী ও নবীন স্থপতিকে অ্যাওয়ার্ড দিয়ে থাকে। এ উপলক্ষে কেএসআরএম ও আইএবির মধ্যে ১০ বছরের একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয় ২০১৯ সালে। সেই চুক্তির আওতায় আইএবি স্বীকৃত দেশের স্বনামধন্য ১১টি আর্কিটেকচার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্নাতক পর্যায়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে থাকেন। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সেরা তিন প্রতিযোগী চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এবার ২৮ জন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর প্রজেক্টের মধ্য থেকে সেরা তিনজনকে বাছাই করে পাঁচজন স্থপতির জুরি বোর্ড। ১৪ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে আইএবি সেন্টারে প্রজেক্টগুলোর প্রদর্শনী হয়। তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী চলে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত।