পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গুপ্তহত্যার চেষ্টার পর দেশটিতে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। হামলায় আহত ইমরান খান তাকে হত্যাচেষ্টার পেছনে ৩ জনের জড়িত থাকার কথা জানিয়েছেন। ওই তিনজনের মধ্যে পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ অন্যতম।
তবে ইমরানের গুপ্তহত্যার চেষ্টায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। এমনকি হামলায় জড়িত প্রমাণ হলে রাজনীতি ছাড়ারও ঘোষণা দিয়েছেন শেহবাজ। রোববার (৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বিরোধী নেতা ইমরান খানের হত্যা প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
অন্যদিকে ইমরান খানের সমর্থকরা হত্যা প্রচেষ্টার তদন্তের দাবিতে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। গত বৃহস্পতিবার সরকারবিরোধী সমাবেশে ইমরান খানের পায়ে গুলি লাগে। বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিকে পরিণত হওয়া ইমরান খান তার ওপর হওয়া হামলার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন শীর্ষ জেনারেলকে দায়ী করেছেন।
শনিবার শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘এই ঘটনায় আমার জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে আমার (প্রধানমন্ত্রীর) পদে থাকারই কোনো অধিকার নেই’। ইমরান খান যে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন সে বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি বলেও জানান তিনি। পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে সাংবাদিকদের শেহবাজ বলেন, ‘যদি এটা (ইমরানের ওপর হামলার প্রমাণ) পাওয়া যায় তাহলে আমি চিরতরে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’ শরিফ বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান ‘মিথ্যা ও সস্তা ষড়যন্ত্র’ করে দেশের ক্ষতি করছেন।
তিনি সুপ্রিম কোর্টকে ‘গুরুতর’ এই অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি পূর্ণ-আদালত কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমি পাকিস্তানের মাননীয় প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়ালকে একটি পূর্ণ-আদালত কমিশন গঠন করার জন্য অনুরোধ করছি। কারণ একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের পরই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’ এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ফয়সাল হামলায় জড়িত বলে ইমরাননের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ সামনে আনা হয় তা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেয় দেশটির সেনাবাহিনী। এমনকি গত শুক্রবার ইমরানের অভিযোগকে ‘দায়িত্বহীন এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলেও আখ্যায়িত করে সামরিক বাহিনী।