বিএনপি দলীয় সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, সরকার এখন সবকিছুর দায় করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক মন্দার ওপর চাপাচ্ছে। সরকারের হাতে বর্তমানে এ তিনটি নন্দ ঘোষ আছে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।তিনি বলেন, সরকারের হাতে তিনটি নন্দ ঘোষ আছে। একটা নন্দ ঘোষ হচ্ছে করোনা, একটা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আরেকটা বিশ্ব মন্দা। যাই হোক না কেন, যে অবস্থায় দাঁড়াক না কেন, সরকার সমস্ত দোষ চাপাচ্ছে এই তিন নন্দ ঘোষের ঘাড়ে।
ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে অধিবেশনে তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে এ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন মেয়াদের পর মেয়াদ ক্ষমতায় থাকবে বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। এভাবে ক্ষমতায় থাকতে গোষ্ঠীতত্ত্ব কায়েম করতে হয়েছে। তাদের খুশি রাখতে আইন প্রণয়ন করতে হয়। তাদের সুবিধার্থে নিয়ম-কানুন করতে হয়।
ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাব সারাবিশ্বের উপর পড়েছে উল্লেখ করে রুমিন বলেন, এতে যদি চরম অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়। তাহলে সরকারের হিসাবে আমাদের চাইতে কম মাথাপিছু আয়ের দেশ ভারত, নেপাল ও আফ্রিকার অনেক গরিব দেশকে বিবিসি কেন শ্রীলঙ্কা হওয়ার তালিকায় রাখেনি। গত একযুগে যে লুটপাট হয়েছে, অনিবার্যভাবেই তা হওয়ার কথা। কুইক রেন্টাল দায়মুক্তির সমালোচনা করেন রুমিন।
দিনে বিদ্যুৎ ব্যবহার করব না প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরীর এমন বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে রুমিন ফারহানা বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি কী অবস্থায় আছে সেটা তার (তৌফিক-ই এলাহি) চেয়ে আর বেশি ভালো কেউ জানে না।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যাচ্ছে যে—সেটা টের পাচ্ছি অক্টোবরের এই শীত শীত সময়ে শুক্রবারের মতো ছুটির দিনেও দুই থেকে তিনবার লোডশেডিং হচ্ছে ঢাকায়। আগামী বছর বিশ্বে দুর্ভিক্ষ হবে এমন আশঙ্কায় প্রতি ইঞ্চি জমি চাষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অনুরোধ করেছেন তার সমালোচনা করে রুমিন বলেন, সাধারণভাবে ভাবতে গেলে মনে হবে প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের কথা কৌশলগতভাবে ভুল। যখন তার পক্ষ থেকে এই ধরনের বার্তা আসে তখন আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
তিনি বলেন, যখন কেউ ব্যয় করে, তখন আরেকজনের উপার্জন হয়। এই পরিস্থিতির পর প্রধানমন্ত্রী বারংবার মানুষকে দুর্ভিক্ষের বিষয়ে সতর্ক করছেন। তখন আমাদের বুঝতে হবে পরিস্থিতি আসলেই খারাপ। মানুষও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
এরপর ডেপুটি স্পিকার রুমিন ফারহানাকে বসার অনুরোধ করেন, তারপরও তিনি তার বক্তব্য চালিয়ে যেতে চাইলে স্পিকার রুমিন ফারহানার মাইক বন্ধ করে দেন।