ঢাকা: এক বছরে অর্থঋণ আদালতে তিন হাজার ১৭১ মামলা বেড়েছে। আর এ মামলার বিপরীতে নতুন করে ব্যাংক খাতের ২৪ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা মামলার জালে আটকেছে।
সর্বশেষ চলতি ২০২৩ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতের ৭২ হাজার ৫৪০টি বিচারাধীন মামলার বিপরীতে ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭০ কোটি টাকা আটকে আছে।
চলতি সপ্তাহ এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সাধারণত যেসব খেলাপিঋণ আদায়ের সম্ভাবনা কমে যায়। তখন ব্যাংকগুলো অর্থঋণ আদালতে খেলাপি গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা করে। এসব মামলায় কিছু টাকা আদায় হয়। মামলা করার পর পর অনেক গ্রাহক ঋণদাতা ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতায় বসে। অনেকের জেলে যেতে হয়। আবার প্রভাবশালী গ্রাহক আইনের ফাঁক-ফোকরে অপকৌশলের সুযোগ নেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ছয় মাস আগে ২০২২ এর ডিসেম্বর শেষে অর্থঋণ আদালতে ৭২ হাজার ১৮৯টি বিচারাধীন মামলার বিপরীতে আটকে ছিল ১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। ফলে ছয় মাসের ব্যবধানে বিচারাধীন মামলা বেড়েছে ৩৭১টি। এর বিপরীতে নতুন করে ১১ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা আটকে পড়েছে। এর আগে ২০২২ সালের জুন শেষে ৬৯ হাজার ৩৬৯টি মামলার বিপরীতে আটকে ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা।
এর মধ্যে গত জুন শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে ৪৪ হাজার ৬০৫টি মামলার বিপরীতে আটকে ছিল ৯৫ হাজার ৯৩৭ কোটি, রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে ১১ হাজার ১৬৬টি মামলায় ৭৫ হাজার ৯৭৩ কোটি। আর বিদেশি ব্যাংকে ৮ হাজার ৫২২টি মামলায় ৩ হাজার ৯১৯ কোটি এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে ৪ হাজার ৯৩৩টি মামলায় ২ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অর্থঋণ আদালতে মামলা করার পরও অনেক ঋণ আলোচনার মাধ্যমে আদায় হয়। তখন মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে আদায় হওয়া এমন টাকার পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা। এর আগে গত বছরের শেষ ছয় মাসে আদায় হয়েছিল ২১ হাজার ৮৩ কোটি টাকা।
এসব মামলার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলতে থাকা মামলাও রয়েছে। অর্থঋণ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলা করার পর ব্যাংকের পক্ষ থেকে যেমন নিয়মিত খোঁজ খবর নেওয়া হয় না। আবার বাদী ও সাক্ষীদের অনেককে খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার মামলাকারী ব্যাংকের পক্ষে অবহেলা বা যোগসাজশে মামলা বছরের পর ঝুলে থাকে। এ সব কারণে বাড়ছে মামলা জট।