সোমবার (২৮ আগস্ট) বাদী মানিক হোসেনের দায়েরকৃত প্রতারনা মামলার শুনানি তে হাজিরা দিতে গেলে আসামি নওগাঁ সদর উপজেলার মখরপুরের মোজাম্মেল হক এর ছেলে জহুরুল হক (কাজল) কে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করে আদালত।
নওগাঁয় অনলাইন দৈনিক বিডিসি ক্রাইম নিউজ পত্রিকায় চাকুরী দিবে বলে প্রায় ২১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রতারনা মামলার মূখ্য আসামি ছিল কথিত সাংবাদিক জহুরুল হক (কাজল)। এ বিষয়ে পত্রিকায় চাকরি প্রত্যাশী মানিক হোসেন নামে এক যুবক বাদী হয়ে কথিত ৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নওগাঁর অনলাইন ”দৈনিক বিডিসি ক্রাইম নিউজ” নামক এক পত্রিকায় চাকুরী দেওয়ার কথা বলে কথিত সাংবাদিক মো.শহিদুল ইসলাম তার সহযোগী মো. জহুরুল হক (কাজল), মো. আনিছুর রহমান, পত্নীতলা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী শামিউল আরিফ (শাওন ) ও মাহবুব আলম ২০ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা আত্যসাৎ করেন।
বাদি মো. মানিক হোসেন জানান, ”দৈনিক বিডিসি ক্রাইম নিউজ” পত্রিকায় চাকুরী দিবেন বলে আমাদের দশ জনের নিকট হতে ধামইরহাট উপজেলার আমাইতারা বাজার এলাকার বাচ্চু মন্ডলের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম, একই উপজেলার বাসুদেবপুর এলাকার রইচ উদ্দীনের ছেলে আনিছুর রহমান, নওগাঁ সদর উপজেলার মখরপুর এলাকার মোজাম্মেল হক এর ছেলে মো. জহুরুল হক ( কাজল ), পত্নীতলা উপজেলার চাঁদপুর এলাকার কাজী আবু হেনা মোস্তফা কামালের ছেলে পত্নীতলা উপজেলা প্রেসক্লাবের কথিত সভাপতি কাজী শামিউল আরিফ শাওন ও ধামইরহাট উপজেলার খেলনা এলাকার মো.ইসমাইল হোসেনের ছেলে মো. মাহবুব আলম তাদের কথিত প্রেসক্লাবের রুমে ২০ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা নেন।
এর মধ্যে আমার কাছ থেকে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার, মোশারফ হোসেন শান্তর কাছ থেকে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার, আরিফ হোসেন এর কাছ থেকে ২ লক্ষ, সবুজ হোসেন এর কাছ থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার, সাব্বির হোসাইন এর কাছ থেকে ১ লক্ষ ২৩ হাজার, সজিব হোসেনের কাছ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার, রিমন হোসেন এর কাছে থেকে ১ লক্ষ. রফিকুল ইসলাম ও ময়েন এর কাছ থেকে ৩ লক্ষ ১৮ হাজার, আজিজুল হকের কাছ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ও মোছা. জেবা ফারহার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নেন।
টাকা দেবার কিছুদিন পর যখন আমরা জানতে পারি বিডিসি ক্রাইম নিউজ নামক কোন পত্রিকা সরকারি মিডিয়াভূক্ত নয় এটি একটি ভুঁইফোঁড় পত্রিকা যার কোন ভিত্তি নাই। আমাদের সাথে করে বিভিন্ন এমপি ও সরকারি কর্মকর্তাদের অফিসে নিয়ে গিয়ে এক কপি পত্রিকা হাতে দিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলতো তাঁরা এই পত্রিকার উপদেষ্টা। পরবর্তীতে আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাইলে শহিদুল ইসলাম গং বিভিন্ন সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম বলে বিভিন্ন ধরণের হুমকি- ধামকি দেন। আমরা আমাদের টাকা ফেরত না পাওয়ায় আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামি জহুরুল হক (কাজল) বাদীদের সাথে বসে আপোষ করার কথা বলে আদালতের কাছ থেকে সময় নিয়েও আপোষ মিমাংসা না করে মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য বাদী মানিক হোসেন কে ভয়ভীতি ও প্রান নাশের হুমকি দেওয়ায় আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।