ইলিশ মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। যে কারণে বাজারে নেই মাছটি। এর প্রভাবে অন্য প্রায় সব মাছের দামই বাড়তি। বিক্রেতারা বলছেন, ইলিশ না থাকায় কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে অন্য মাছের দাম। বাজারে ইলিশ এলে মাছ বাজারের এই উত্তাপ কমে আসবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মধ্য বাড্ডা মাছের বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজার মনিটরিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। ইচ্ছে মতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে, ক্রেতাদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বেশি, এটি সত্য। কিন্তু কিছু করার নেই। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরা বাজারে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখে গেছে, রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকা কেজিতে, কাতল ৩৫০ টাকায়, বোয়াল ৫০০-৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে তেলাপিয়া ১৮০-২০০ টাকায়, কই ২০০-২২০ টাকায়, পাঙাশ ১৫০-১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও শিং (ছোট) ৪৫০-৫০০, চিংড়ি ৫০০-৬০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা, ট্যাংরা ৪০০-৫০০, শোল ৩০০-৪০০ টাকা এবং আইড় ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মধ্যবাড্ডা মাছ বাজারে মাছ কিনতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাছের বাজার চড়া। বাড়তি দামেই মাছ বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারে কোনো মনিটরিং নেই।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের জিম্মি করবে। এর সমাধান কি আমরা সাধারণ ক্রেতারা পাব না? বাজারে সবচেয়ে কম দামের যে তেলাপিয়া, চাষের কই মাছ আছে, সেগুলোর দামও বাড়তি। তাহলে সাধারণ মানুষ খাবে কি?
রফিকুল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় বাজারে মাছ খুব কম মনে হচ্ছে। মাছ যদি পর্যাপ্ত না আসে, দাম তো বেশি থাকবেই। তবে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে অন্তত মাছের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখতে হবে।
মাছ বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, ইলিশ না থাকায় মূলত সব মাছের দাম বেড়েছে। রুই মাছের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা। আবার কিছু মাছের দাম কেজিতে ১০০ টাকাও বেড়েছে। দাম কমবে কবে থেকে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাগরে-নদীতে তো মাছ ধরা যাচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞার কারণে জেলেরা জাল ফেলতে পারছে না।
তিনি বলেন, ৩ কেজির রুই মাছ বিক্রি করছি ৪০০ টাকা কেজি। ৫ কেজির কাতল মাছ বিক্রি করছি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। দেড় কেজির কোরাল মাছ বিক্রি করছি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।
মাছ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, আসলে আমাদের কেনা দামই বেশি। তাই খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা যখন পাইকারি বাজারে কম দামে মাছ কিনতে পারব, তখন খুচরা বাজারেও কম দামে বিক্রি করত পারব। বাজার যখন যেমন চলে, তখন সেভাবেই বিক্রি করি।