লক্ষীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার কাওয়ালীডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাছরিন আক্তার ও উপজেলা (পিআইও) প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী জুয়েল রানার পরকিয়ার জের ধরে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অফিসে রুদ্ধতাার শালিসি বৈঠক করেছে উপজেলা প্রশাসন।
২১ অক্টোবর শুক্রবার ঘটনাটি উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে উপজেলাব্যাপী ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৮অক্টোবর) বিকেলে ৩ ঘন্টা ব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে কোন সিন্ধান্ত ছাড়াই সমাপ্ত হয়েছে বলে বৈঠকে উপস্থিত অনেকেই জানিয়েছেন।
শালিস বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা খাতুন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিলীপ দে, ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্ছু, চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল ইসলাম সুমন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর ও সাধারন সম্পাদক আফরোজা আক্তার প্রমূখ। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর ও সাধারন সম্পাদক আফরোজা আক্তার সহ শিক্ষকরা ঘটনার সুষ্ঠ সমাধান দাবী করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রামগঞ্জ উপজেলা (পিআইও) প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী জুয়েল রানা এবং প্রবাসীর স্ত্রী ২সন্তানের জননী ও সহকারী শিক্ষিকা নাসরিন আক্তারের সাথে দীর্ঘ ৪ বছর যাবত পরকীয়ার জের ধরে অনৈতিক সম্পর্ক চলে আসছে। শিক্ষিকা বার বার বিয়ের দাবী করে আসছে কিন্তু জুয়েল রানা বিয়ে না করে সময় পার করায় দুই জনের মধ্যে বাধেঁ বিপত্তি। এ নিয়ে শিক্ষিকা প্রায় ২বছর আগে থানায় অভিযোগ করলেও এর কোন সুরাহা না করে জুয়েল রানা তড়িগড়ি করে অন্যত্রে বিয়ে করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দেন। উক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মীমাংসা করতে না পেরে স্টাম্পে স্বাক্ষর রেখে সময় দিয়ে উভয়কে ছেড়ে দেয়।
উপজেলা (পিআইও) প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী জুয়েল রানার বাড়ি ঢাকা গাজীপুর সদর উপজেলায় বলে জানা গেছে। এদিকে নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে সালিশী বৈঠকের পর থেকে মোবাইল বন্ধ করে (পিআইও) প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জুয়েল রানা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
কাওয়ালীডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাসরিন আক্তার জানান, এবিষয়ে কারো সাথে আমার কথা বলা নিষেধ আছে। আমি কারো সাথে কোন কথা বলবো না। আপনারা এখান থেকে বের হয়ে যান। অভিযুক্ত উপজেলা (পিআইও) প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী জুয়েল রানার মোবাইলে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও না পেয়ে তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর ও সাধারণ সম্পাদক অফরোজা আক্তার জানান, বৈঠকে আমরা উপস্থিত ছিলাম, তবে বিষয়টি মীমাংসা হয়নি। এব্যাপারে আমরা সুষ্ঠ সমাধান দাবী করছি। ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুল ইসলাম সুমন বলেন, বৈঠক কোন সমাধান হয়নি, তাই স্টাম্পে স্বাক্ষর রেখে সময় দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) দিলীপ দে বলেন, বৈঠক শেষে আমি ঢাকায় চলে আসছি। স্বাক্ষাতে বিস্তারিত কথা বলবো। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্ছু বলেন, বিষয়টি জটিল। তাই বৈঠকে সবার সিদ্ধান্তক্রমে ২জনকেই সময় দিয়ে শেষ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, এ বিষয়টি মীমাংসা করা চেষ্টা চলছে। না লিখে অপেক্ষা করুন।