একে সুস্বাদু, অন্যদিকে কচি তালের শাঁসে জলীয় অংশ বেশি থাকায়, তা দেহের পানিশূন্যতা অনেকটাই পূরণ করে। ফলে জ্যৈষ্ঠের এ গরমে শিবচরের হাট-বাজারে বেশ কদর বেড়েছে তালের শাঁসের। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সিসহ নানা ধরনের পুষ্টির চাহিদাও মিটছে তালের শাঁসে। পাশাপাশি মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস অবদান রাখছে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও।
কালের বিবর্তনে মাদারীপুর শিবচরের বিভিন্ন অঞ্চলে কমে গেছে তাল গাছের সংখ্যা। তবুও বর্তমানে অনেকেই তালের আঁটি রোপণ করে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
একসময় শিবচরে বিভিন্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ তালগাছ ছিল। প্রতি বছর শত শত তালগাছ কেটে গৃহস্থালি, ইট পোড়ানো এবং জ্বালানিসহ নানা কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া গাছের অজ্ঞাত রোগ, প্রয়োজনীয় পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বহু তালগাছ অকালে মারা যাচ্ছে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এই গাছ সংরক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
শিবচর উপজেলার সদরের বিভিন্ন মোড়ে ভ্যান গাড়িতে করে তালের শাঁস বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে দেখা গেছে ক্রেতাদের বেশ চাহিদা।
পাঁচ্চর কাচার বাজারের সামনে তালশাঁস বিক্রেতা ইলিয়াস মাদবর বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে, তখন বাজারে এটা পানি তাল বা তালের শাঁস হিসেবেই বিক্রি হয়। প্রতিটি তালের শাঁস আকার ভেদে ১৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি তালের ভেতর দুই থেকে তিনটি শাঁস থাকে। পাইকারি দামে কিনে এভাবে তালের শাঁস বিক্রি করেই সংসার চালান ইলিয়াস।
মুন্সি বাজারের তালের শাঁস বিক্রেতা হারুন মিয়া বলেন, ভ্যানে করে বিভিন্ন বাজারে এই ব্যবসা করি আমি। দৈনিক ৫শ টাকা থেকে হাজার টাকাও ব্যবসা হয় তার। গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তালের শাঁসের কদর সাধারণ মানুষের কাছে বাড়ে বলেও জানান তিনি।
নুপুর হোসেন মারিয়া নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারের অন্য সব ফলে ফরমালিন বা কেমিকেল থাকলেও তালের শাঁসে কোনো ফরমালিন বা কেমিকেল মেশানো থাকে না। এতে শরীরের ক্লান্তিও দূর হয়। তাই এই গরমে আমি তালের শাঁস খেয়ে থাকি।
শিবচর টিএনটি মোড়ে তালের শাঁস কিনতে আসা সুমন ঢালী বলেন, ‘আমার ছেলেমেয়েদের তালের শাঁস খুব পছন্দ। দাম বেশি হলেও মৌসুমের শুরুতে তালের শাঁসের কদর বেশি থাকে।
আমাদের মাতৃভূমি/মাজহারুল