ঢাকা ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বললে শাস্তির আইন চান মন্ত্রী

স্বাধীনতার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তি হওয়া উচিত। তাই স্বাধীনতাবিরোধীদের শাস্তির জন্য এবং দেশকে একটা সেফ গার্ড দেওয়ার জন্য, ইতিহাস বিকৃতকারীদের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে মিথ্যাচারকারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তি দিতে সংসদে একটা আইন পাস করার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

রোববার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আনীত কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আইন প্রণয়নের দাবি জানান।

মোজাম্মেল হক বলেন, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ১৯৭৫ সালের  ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতকরা শুধু একটা মানুষকে হত্যা করেনি, তারা একটি স্বাধীন সংসদ নয়, একটা জাতিকে হত্যা করেছিল। বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পদদলিত করেছিল। এসব ঘটনা চোখ মেলে দেখা দরকার, তা না হলে বারবার আমাদের হোঁচট খেতে হবে।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, চার নেতার হত্যাকাণ্ড, সংবিধানে কাটাছেঁড়া– এসব কিছুই ছিল এ দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলা। সেই কারণে ২৩ বছরের শোষণ-বঞ্চনার পর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা– এ মূল চার নীতির ওপর ভিত্তি করে দেশ পরিচালিত হচ্ছিল, তারা এ ধারণাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। কয়েকদিন আগে বিএনপির এক নেতা বলেছেন, এর চেয়ে পাকিস্তান ভালো ছিল। তারা বলে আমাদের এই মহান মুক্তিযুদ্ধের নাকি কোনো প্রস্তুতি ছিল না। তাহলে সিক্রেট ডকুমেন্ট, প্রধানমন্ত্রী যা সংকলিত করেছেন সেসব যাবে কোথায়?

মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুকে এন্টিপাকিস্তানি বলা হয়েছে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, বিচ্ছিন্নতাবাদী বলা হয়েছে, বারবার জেলে নেওয়া হয়েছে এসব ডকুমেন্ট তো আছে। তারা এখনো পাক প্রেমী, এদের মন থেকে সেই পাকিস্তান প্রেম যায়নি। তারা মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিতর্কিত করে তারা আবারো পাকিস্তান ঘরনার ধর্মীয় রাজনীতি চালু করে এ দেশকে অকার্যকর করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ল্যুজ কনফেডারেশন করে পাকিস্তান টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল। খুনি মোস্তাক, খুনি জিয়া বলেছিল ওয়ার কাউন্সিল করে মুক্তিযুদ্ধ করার জন্য এবং রাজনৈতিক সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ না করার জন্য।

মোজাম্মেল হক বলেন, আমি শুনেছি ল কমিশন নাকি এ ধরনের একটি আইনের প্রস্তাবনা করেছে, এ আইনটিকে যাতে জাতিকে সেফ গার্ডে রাখার জন্য এ সংসদে পাস করা যায় সে আহ্বান জানাব।

বিএনপির নাম না উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত করছে। শুধু তারাই চক্রান্ত করছে না, যারা এ সংসদকে বিশ্বাস করে না, দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হিসেবে অনেকেই এ ষড়যন্ত্র করছে। আমি মনে করি, সংসদ যেহেতু সমস্ত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু, তাই এখানে মিথ্যাচার, ইতিহাসের বিকৃতি, তারা যখনই সময় পায় তখনই সে প্রচেষ্টা চালায়। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু জেলহত্যা, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, তিনিই দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধীদের শাস্তির জন্য এ আইনটি করতে পারেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বোরহানউদ্দিনে খাল পরিস্কার – পরিচ্ছন্নতার অভিযানের উদ্বোধন

মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বললে শাস্তির আইন চান মন্ত্রী

আপডেট সময় ০১:২৩:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

স্বাধীনতার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তি হওয়া উচিত। তাই স্বাধীনতাবিরোধীদের শাস্তির জন্য এবং দেশকে একটা সেফ গার্ড দেওয়ার জন্য, ইতিহাস বিকৃতকারীদের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে মিথ্যাচারকারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তি দিতে সংসদে একটা আইন পাস করার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

রোববার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আনীত কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আইন প্রণয়নের দাবি জানান।

মোজাম্মেল হক বলেন, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ১৯৭৫ সালের  ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতকরা শুধু একটা মানুষকে হত্যা করেনি, তারা একটি স্বাধীন সংসদ নয়, একটা জাতিকে হত্যা করেছিল। বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পদদলিত করেছিল। এসব ঘটনা চোখ মেলে দেখা দরকার, তা না হলে বারবার আমাদের হোঁচট খেতে হবে।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, চার নেতার হত্যাকাণ্ড, সংবিধানে কাটাছেঁড়া– এসব কিছুই ছিল এ দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলা। সেই কারণে ২৩ বছরের শোষণ-বঞ্চনার পর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা– এ মূল চার নীতির ওপর ভিত্তি করে দেশ পরিচালিত হচ্ছিল, তারা এ ধারণাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। কয়েকদিন আগে বিএনপির এক নেতা বলেছেন, এর চেয়ে পাকিস্তান ভালো ছিল। তারা বলে আমাদের এই মহান মুক্তিযুদ্ধের নাকি কোনো প্রস্তুতি ছিল না। তাহলে সিক্রেট ডকুমেন্ট, প্রধানমন্ত্রী যা সংকলিত করেছেন সেসব যাবে কোথায়?

মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুকে এন্টিপাকিস্তানি বলা হয়েছে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, বিচ্ছিন্নতাবাদী বলা হয়েছে, বারবার জেলে নেওয়া হয়েছে এসব ডকুমেন্ট তো আছে। তারা এখনো পাক প্রেমী, এদের মন থেকে সেই পাকিস্তান প্রেম যায়নি। তারা মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিতর্কিত করে তারা আবারো পাকিস্তান ঘরনার ধর্মীয় রাজনীতি চালু করে এ দেশকে অকার্যকর করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ল্যুজ কনফেডারেশন করে পাকিস্তান টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল। খুনি মোস্তাক, খুনি জিয়া বলেছিল ওয়ার কাউন্সিল করে মুক্তিযুদ্ধ করার জন্য এবং রাজনৈতিক সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ না করার জন্য।

মোজাম্মেল হক বলেন, আমি শুনেছি ল কমিশন নাকি এ ধরনের একটি আইনের প্রস্তাবনা করেছে, এ আইনটিকে যাতে জাতিকে সেফ গার্ডে রাখার জন্য এ সংসদে পাস করা যায় সে আহ্বান জানাব।

বিএনপির নাম না উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত করছে। শুধু তারাই চক্রান্ত করছে না, যারা এ সংসদকে বিশ্বাস করে না, দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হিসেবে অনেকেই এ ষড়যন্ত্র করছে। আমি মনে করি, সংসদ যেহেতু সমস্ত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু, তাই এখানে মিথ্যাচার, ইতিহাসের বিকৃতি, তারা যখনই সময় পায় তখনই সে প্রচেষ্টা চালায়। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু জেলহত্যা, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, তিনিই দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধীদের শাস্তির জন্য এ আইনটি করতে পারেন।