ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল (আইপিএস) নিয়ে বাংলাদেশের নীতিতে সমর্থন করছে চীন। বেইজিং আশা প্রকাশ করছে, আইপিএসে বাংলাদেশ কারও পক্ষ নেবে না। পাশাপাশি চীনের উদ্যোগ গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভে (জিডিআই) যোগ দিতে বেইজিং ঢাকাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বলে জানান ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) ‘স্প্রিং ডায়ালগ উইথ চায়না’ শীর্ষক আলোচনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত ওয়েন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, জিডিআইয়ে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন। এ বিষয়ে আমরা বাংলাদেশের সহায়তা চাই। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমি যতদূর জানি, বাংলাদেশের কাছ থেকে এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। এখন আমরা আলোচনা করব, নির্দিষ্ট কোন খাতে আমরা কাজ করতে পারি।
তিস্তা প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিকরা রাষ্ট্রদূত ওয়েনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে চীন। তবে এ প্রকল্প নিয়ে সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। এর বেশি কিছু এখনই বলা ঠিক হবে না।
রোহিঙ্গা সংকট থেকে চীন সরে যাবে না বলে আশ্বস্ত করে রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার সমস্যা নয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসেবে চীন সংকট সমাধানে ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা এ সংকট সমাধানে ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিয়েছি। ওই উদ্যোগ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কেন শুরু করা যায়নি, সেটি আপনারা জানেন।
রোহিঙ্গা সংকট বেশ জটিলতা ধারণ করেছে বলেই মনে করছেন রাষ্ট্রদূত ওয়েন। এর একটি কারণ হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলোর হস্তক্ষেপের বিষয়টি ইঙ্গিত করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার আস্থার অভাবে প্রক্রিয়াটি জটিল হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি বাইরের দেশের হস্তক্ষেপ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। তবে এখন সময় এসেছে সবাইকে মিলে একসঙ্গে চেষ্টা করার।
দাতা দেশগুলো থেকে রোহিঙ্গাদের অর্থায়ন কমে আসা নিয়ে ওয়েন রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, পশ্চিমারা হাজারও কোটি ডলারের অস্ত্র ইউক্রেনে খরচ না করে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় খরচ করতে পারত।
চীন রাজনৈতিকভাবে ইউক্রেন পরিস্থিতির সমাধান চায় বলেও জানান রাষ্ট্রদূত। এ সময় তিনি সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে হওয়া শান্তি চুক্তির প্রসঙ্গটি তোলেন। চীনা দূতাবাসের আয়োজনে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার সম্পাদক ইনাম আহমেদ।
বাংলাদেশে চীনের অর্থায়নে প্রকল্পে ধীরগতি প্রসঙ্গ তোলেন সাংবাদিকরা। জবাবে রাষ্ট্রদূত বিষয়টির সঙ্গে একমত নয় জানিয়ে বলেন, চীনের প্রকল্পগুলো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিতে রয়েছে। ২০১৬ সালে ২৭ প্রকল্পের বিষয়ে দুই দেশ একমত হয়েছিল। এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। এক তৃতীয়াংশ প্রকল্প বর্তমানে চলমান এবং এক তৃতীয়াংশ প্রকল্প আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।