পর্দা নামলো কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স শো (সিইএস) ২০২৩ আসরের। যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে ৫ থেকে ৮ জানুয়ারি বসেছিল বিশ্বের সর্ববৃহৎ এ প্রযুক্তি মেলা।
উদ্ভাবনী বিভিন্ন প্রযুক্তি আর বৈচিত্র্যময় পণ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও সিইএস নজর কেড়েছে পুরো বিশ্বের। পূরণ করেছে সারা বিশ্বের প্রযুক্তিপ্রেমিদের প্রত্যাশা। ওয়্যারলেস টিভি, স্মার্টফোনের ফোল্ড অ্যান্ড রোল পর্দা, রঙ বদলানো গাড়ি, চালকবিহীন বৈদ্যুতিক গাড়ি, রোবট কুকুর ডগ-ই, ভবিষ্যত পৃথিবী দেখার প্রযুক্তি মেটাভার্স, স্মার্ট বাড়িসহ নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের বিভিন্ন চমকে জমজমাট ছিল এবারের সিইএস ফেয়ার। মেলায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) নির্ভর বিভিন্ন গৃহস্থালী পণ্য।
২০২৩ সালের সিইএস ফেয়ারে বিশেষভাবে নজর কেড়েছে ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের শীর্ষ ব্র্যান্ড ওয়ালটন। উদ্ভাবনী টেকসই প্রযুক্তি ও এআই নির্ভর স্মার্ট পণ্যের সম্ভার নিয়ে নান্দনিকভাবে সেজেছিল ওয়ালটনের ১৭৯২৮ নম্বর প্যাভিলিয়নটি। মেলায় ওয়ালটনের স্মার্ট রেফ্রিজারেটর, স্মার্ট এয়ার কন্ডিশনার, স্মার্ট টেলিভিশন, হোম ও কিচেনের জন্য বিভিন্ন স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স, মোস্ট সাইলেন্স ও ডিউর্যাবল রোবাস্ট কম্প্রেসর, সর্বাধুনিক ফিচারের ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন, ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লে বা অ্যাডুকেশনাল বোর্ড ইত্যাদি পণ্যে দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ীদের বেশি আগ্রহ দেখা গেছে।
চারদিনব্যাপী এ মেলার প্রতিদিনই ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে এসেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অসংখ্য দর্শনার্থী ও উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা। বিশেষত সিইএসের শেষ দুই দিন শনি ও রোববার ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে ছিল উপচে পড়া ভিড়। দর্শনার্থী আর সম্ভাব্য ক্রেতাদের মধ্যে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, ফ্রান্স, পেরু, ব্রাজিল, চিলি, অস্ট্রেলিয়া, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, জ্যামাইকা, আজারবাইজান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, লাইবেরিয়া, ওমান, জর্ডান, সেনেগালসহ বিভিন্ন দেশ। এসব দেশের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওয়ালটনের দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক আলোচনা চুড়ান্ত হয়েছে। অন্তত দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের তৈরি বিভিন্ন পণ্য আমদানির আগ্রহ দেখিয়েছে।
কানাডার অন্টারিও’র একটি পরিবেশক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হোটেল মোড সলিউশন্স সরবরাহের বিষয়টি চুড়ান্ত করেছে ওয়ালটন। ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকেই প্রতিষ্ঠানটিকে হোটেল মোড সলিউশন্স সফটওয়্যার এবং টিভি সরবরাহ করতে যাচ্ছে ওয়ালটন। এয়ারকন্ডিশনার, ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লে বা এডুকেশনাল বোর্ড, ল্যাপটপ এবং কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স রপ্তানির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওয়ালটনের চুড়ান্ত আলোচনা হয়েছে। খুব শিগগিরই আমেরিকার শীর্ষ একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে ওয়ালটন পণ্য বিক্রির জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুর্শেদ বলেন, সিইএসের মতো বৈশ্বিক মঞ্চে আমরা আমাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি তুলে ধরেছি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ এ প্রযুক্তি মেলায় ওয়ালটনের আইওটি নির্ভর টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পণ্যে দর্শনার্থী, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা অত্যন্ত আগ্রহ দেখিয়েছেন। এ মেলায় গ্লোবাল বায়ারদের কাছ থেকে আমরা বিপুল সাড়া পেয়েছি। আমেরিকা, কানাডা ও ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৃহৎ আকারে আমাদের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে এ মেলা যুগান্তকারী ভুমিকা রাখবে।
সিইএস ফেয়ারে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের দায়িত্ব থাকা প্রতিষ্ঠানটির টিভির চিফ বিজনেস অফিসার প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক একটি মেলার মাধ্যমে ক্রেতা পেতে অনেকগুলো ধাপ পেরোতে হয়। সিইএসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্ভাব্য ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আরও যোগাযোগ ও আলোচনার পর তারা স্যাম্পল পণ্যের অর্ডার দেবেন। সে অনুযায়ী পণ্য পাঠানোর পর ট্র্যায়াল অর্ডার আসবে। সবশেষে দীর্ঘস্থায়ী ব্যবসায়িক চুক্তি হবে। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। সিইএসে এ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপেই আমরা অভাবনীয় সাড়া পেয়েছি।