শীত থেকে বাঁচতে আমাদের শরীর সবার আগে খোঁজে উষ্ণতা। তাইতো কম্বলের ভেতর থেকে সহজে বের হয়ে আসতে মন চায় না। ঘুম ভেঙে গেলেও বিছানায় গুঁটিশুটি মেরে শুয়ে থাকতে ইচ্ছে হয়। রাজ্যের আলস্য যেন ঘিরে ধরে। কিন্তু অলস বসে থাকলে যে চলবে না। নিত্যদিনের কাজ তো করতেই হবে। সেজন্য নিজেকে ভেতর থেকেও উষ্ণ রাখা চাই।
শীতে আপনাকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে কিছু খাবার। সেসব খাবার খুঁজতে খুব বেশি দূরে যেতে হবে না। আপনার রান্নাঘরেই রয়েছে উপকারী সেই খাবারগুলো। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক, এই শীতে কোন খাবারগুলো খেলে শীতের ভয়ে আর কাবু হয়ে থাকতে হবে না-
আপনি কি জানেন যে ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধে পেঁয়াজ ব্যবহৃত হয়? পেঁয়াজ ঘামকে উদ্দীপিত করে, যা ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরের তাপ বাড়ায়। খাবারে পেঁয়াজ যোগ করতে পারেন বা সালাদ হিসাবে খেতে পারেন। সেইসঙ্গে এই সময়ে এক বাটি উষ্ণ অনিয়ন স্যুপ আপনাকে অনেকটা আরাম দেবে। অনিয়ন স্যুপের রেসিপি জানা না থাকলে এখনই শিখে নিন।
ঘি
স্বাস্থ্য ও স্বাদের দিক থেকে প্রতিটি খাবারকে কার্যকরী করে তোলে ঘি। এর ফ্যাট শীতকালে হজমে সাহায্য করে, শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং আমাদের ভেতর থেকে উষ্ণ রাখে। ডাল, খিচুড়ি, স্যুপ এবং পোলাও ইত্যাদিতে এক চামচ ঘি যোগ করে খেতে পারেন। এটি আপনাবে উষ্ণ রাখতে কাজ করবে।
আদা
শীতের সকালে কিংবা সন্ধ্যায় এক কাপ আদা চা আপনাকে বাড়তি উষ্ণতা দেবে। আদার রয়েছে থার্মোজেনিক বৈশিষ্ট্য যা শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়। এই ভেষজের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে সর্দি এবং কাশির মতো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ হয়। এছাড়াও আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় আদা-পানি এবং আদার আচার যোগ করতে পারেন।
তিল
তিলে রয়েছে উষ্ণতা বৃদ্ধির বৈশিষ্ট্য। সেইসঙ্গে এটি আমাদের বিপাকক্ষমতাও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এক গ্লাস পানিতে এক চামচ তিল সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খেয়ে নিন। এভাবে প্রতিদিন সকালে তিলের পানি খেতে পারেন। এছাড়া তিল দিয়ে আরও অনেক খাবার তৈরি করা যায়। সেসব খেলেও উপকার পাবেন।
সরিষার তেল
স্বাস্থ্যকর ভোজ্য তেলে মধ্যে অন্যতম হলো সরিষার তেল। শীতকালে খাবার রান্নার কাজে ব্যবহার করতে পারেন এই তেল। কারণ এর আছে তাপ-উত্পাদক শক্তি। যার মাধ্যমে আপনাকে সহজেই উষ্ণ করে তুলবে। সরিষার তেলের ঝাঁঝালো স্বাদ রান্না আরও বেশি সুস্বাদুও করে তুলবে।
গুড়
ডায়েটিশিয়ান সুনিতা চৌধুরী বলেন, ‘শরীর উষ্ণ রাখতে আমাদের তাপ দরকার। এই তাপ তৈরি হয় খাবারের ক্যালরির মাধ্যমে। গুড় শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য যথেষ্ট ক্যালরি দেয় এবং শরীরে তাপ তৈরি করতে রক্তনালীগুলোকে প্রসারিত করে।’ এই শীতে গুড় দিয়ে তৈরি নানা পদের খাবার রাখতে পারেন প্রতিদিনের তালিকায়।