বডিবিল্ডার জাহিদ হাসানের লাথি কাণ্ড এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সয়লাব। জাহিদ ও ফেডারেশন অনানুষ্ঠানিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ঘটনার এক সপ্তাহ পর আজ শনিবার শরীর গঠন ফেডারেশন আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে।
বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন মঞ্চের মাঝেই ছিলেন ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তার দুই পাশে ছিলেন তারকা বডিবিল্ডাররা। ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের পাশে না রেখে বডিবিল্ডাররা কেন এ নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় সাধারণ সম্পাদককে। সেই প্রশ্নের সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি,‘আমি এখানে বডিবিল্ডার রেখেছি আবার চিফ জাজও রয়েছে।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে ২৩ ডিসেম্বর উদ্ভূত ঘটনা ঘটে। বিষয়টি এতই আলোচিত হয়েছে যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে। ফেডারেশনের অভিভাবক সংস্থা মন্ত্রণালয় যেখানে বিষয়টি তদন্ত করছে সেই মুহূর্তে এই সংবাদ সম্মেলন কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন,‘তদন্ত কমিটি এখনো কাজ শুরু করেনি। জাহিদ হাসানের বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। বিষয়টি পরিষ্কার করতে আমরা এই সম্মেলন আয়োজন করেছি।’
ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক তার লিখিত বক্তব্যে বডিবিল্ডার জাহিদ হাসানের বক্তব্যকে মিথ্যাচার হিসেবে আখ্যায়িত করেন। সেই দিনের ঘটনা এবং পরবর্তীতে তার বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শন করেন। ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদকের দাবি,‘জাজরা নিয়ম মেনে সঠিক সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। জাহিদ হাসান সেটি না মানতে পেরে এই আচরণ করছেন। অশোভন আচরণের জন্য তাকে আন্তর্জাতিক শরীর গঠন ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জাহিদ হাসান দ্বিতীয় হওয়ার পর একটি কথা রটেছিল সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের মেয়ের জামাইকে প্রথম করা হয়েছে। সেই বিষয়টিও পরিষ্কার করেছেন নজরুল,‘আমার কোনো মেয়েই নেই, জামাই হবে কিভাবে! এ রকম আরো অনেক বিষয় সে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। যা নন টেকনিক্যাল লোকদের বিভ্রান্ত করছে। এই বিভ্রান্তি দূর করতেই সংবাদ সম্মেলন।’
দেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও স্ট্যাম্পে লাথি দিয়েছেন। সদ্য সমাপ্ত ফিফা বিশ্বকাপের পুরস্কার মঞ্চে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক মার্টিনেজও অশোভন আচরণ করেছেন। এই দু’টির সংমিশ্রণ করেছেন বডিবিল্ডার জাহিদ হাসান। সাকিব ও মার্টিনেজ কেউই আজীবন বহিষ্কার হননি। সেক্ষেত্রে জাহিদ হাসানকে কেন আজীবন বহিষ্কার এই প্রশ্নের উত্তরে সাধারণ সম্পাদক বলেন,‘জাহিদ সেদিন অশোভন আচরণ করেছেন। এতে নারী অ্যাথলেটরা বিব্রত ছিলেন। পরের দিন জরুরি সভা করে সর্বসম্মতিতে তাকে বহিষ্কার করা হয়।’
বাংলাদেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো সাধারণত শৃঙ্খলা জনিত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আগে শোকজ করে। এরপর সেই উত্তরের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়। শরীর গঠন ফেডারেশন জাহিদকে কোনো শোকজ করেনি। এই প্রসঙ্গে নজরুল বলেন,‘আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা আন্তর্জাতিক শরীর গঠন ফেডারেশনকে অনুকরণ করে।’