ফাইনালের শেষ বাঁশি বাজতে আর এক মিনিটের মতো সময় বাকি। খেলা ৩-৩ গোলে সমতায়। মাত্র দশ গজ দূরে বক্সের মধ্যে মুয়ানির পায়ে বল, সামনে শুধু এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। এমন সময় স্পাইডারম্যানের মতো হাত-পা ছড়িয়ে যে সেভটা করলেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক সেটা রীতিমতো ইতিহাস হয়ে থাকল। এই সেভের জোরেই ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ ট্রফি উঠল লিওনেল মেসির হাতে।
গত বছর কোপা আমেরিকা ফাইনালের আগের ঘটনা। হুট করেই একদিন মেসির রুমে চলে যান মার্টিনেজ, অধিনায়ককে বলেন, ‘তোমার জন্য আমি জীবনটাও দিয়ে দিতে পারি।’ এরপর আর্জেন্টিনা যা করেছে সেটা তো সবাই দেখেছে। প্রথমবার কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছেন মেসি। এবার তো মঞ্চটা আরও বড়। কিন্তু ঘাবড়ানোর বদলে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মার্টিনেজ। একের পর এক গোল বাঁচিয়ে দলকে এনে দিয়েছেন বিশ্বসেরার মুকুট।
তবে এখানেই শেষ নয়। এবারের বিশ্বকাপে দুটো ম্যাচ টাইব্রেকারে জিতেছে আর্জেন্টিনা। এই দুই ম্যাচেই দুটো করে গোল বাঁচিয়েছেন মার্টিনেজ। তাই বিশ্বসেরা গোলরক্ষকের গোল্ডেন গ্লাভস পুরষ্কারটাও মার্টিনেজের হাতে তুলে দিতে ভাবতে হয়নি ফিফার। কিন্তু সমস্যা বাধে পুরষ্কারটা গ্রহণের সময়।
৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতায় এমনিতেই দারুণ ফুরফুরে মেজাজে ছিল আর্জেন্টিনা। আবেগঘণ এ মুহূর্তে একেকজন উদযাপন করেছেন একেকভাবে। কিন্তু মার্টিনেজেরটা লেগেছে দৃষ্টিকটু। গোল্ডেন গ্লাভস পুরষ্কার হাতে পাওয়ার পর ফটোগ্রাফারদের দিকে এমন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন তিনি। বিশেষ করে কাতারের রক্ষণশীল সংস্কৃতি তো মানতেই পারেনি ব্যাপারটা।
অনেকেই ধারণা করেছিলেন এটা কাতারের বিভিন্ন আইনের বিপক্ষে। তবে তখনই জানা যায়নি কিছুই। জবাব একটু পরে। মার্টিনেজ নিজেই জানালেন কাতারের প্রসঙ্গে কিছু নয় বরং, ‘টাইব্রেকারের সময় ফরাসিরা আমার সঙ্গে যা করেছে, এটা তারই জবাব।’ ম্যাচশেষে ফরাসিদের ওপর এতোটাই উত্তেজিত ছিলেন বলে ড্রেসিংরুমে সেলিব্রেশনের সময় এমবাপের নামে এক মিনিট নীরবতাও পালন করতে বলেন তিনি।