দুর্বল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই হার বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার। ফেভারিটদের হারিয়ে তথাকথিত ছোট দেশগুলোর জ্বলে ওঠা। দেশের প্রতিবাদীদের পাশে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতে গলা না মেলানো। মহাতারকা রোনালদোকে উপেক্ষা করেই পর্তুগালের এগিয়ে যাওয়া। বিশ্বকাপ ইতিহাসে আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে মরক্কোর উঠে আসা।
এমন একাধিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে সদ্যসমাপ্ত কাতার বিশ্বকাপ, যা ফুটবলের ইতিহাসে দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকবে। ঘটে যাওয়া আরও কিছু অঘটনের মধ্যে এক নজরে জেনে নেওয়া যাক কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
হার দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু আর্জেন্টিনার : কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের মুখোমুখি হয়েছিল মেসির আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি থেকে সেই ম্যাচে গোল পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরে দুই গোল দিয়ে ম্যাচ জিতে নেয় সৌদি আরব। উন্নতমানের ভিএআর প্রযুক্তির জন্য আর্জেন্টিনার একাধিক গোল বাতিল হয় ম্যাচে। শেষ পর্যন্ত মেসিদের হাতে বিশ্বজয়ের ট্রফি উঠলেও, সৌদি আরবের দুরন্ত লড়াই সমর্থকদের মনে গেঁথে যাবে।
বিশ্বকাপে সূর্যোদয় : দুরন্ত গতিময় ফুটবল খেলে বিপক্ষকে বোকা বানিয়ে দেওয়া- এই স্ট্র্যাটেজিতে ভর করেই জার্মানি ও স্পেনের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল জাপান। ইউরোপীয় ফুটবলের দুই মহাশক্তিধর দেশ কার্যত আত্মসমর্পণ করেছিল এশীয় শক্তির কাছে। যদিও স্পেন-জাপান ম্যাচের একটি গোল নিয়ে ভিএআর বিতর্ক ছিল। এছাড়াও ম্যাচের পর জাপানি সমর্থকদের স্টেডিয়াম পরিষ্কার করার দৃশ্য বহুদিন ফুটবলপ্রেমীদের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে।
মরক্কোর উত্থান : আফ্রিকা মহাদেশের প্রথম দেশ হিসেবে ফুটবল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল মরক্কো। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচে গতবারের সেমিফাইনালিস্ট বেলজিয়ামকে হারিয়ে চমকে দেন হাকিমিরা। পরপর স্পেন,পর্তুগালের মতো হেভিওয়েট দলকে পরাস্ত করে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা। ফ্রান্সের কাছে হেরে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হয় তাদের।
হিজাব আন্দোলনে ইরানি ফুটবলারদের সমর্থন : হিজাব না পরতে চেয়ে দেশের মহিলারা পথে নেমে আন্দোলন করছেন। এ অবস্থায় শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা থাকা সত্বেও বিশ্বমঞ্চে প্রতিবাদীদের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সর্দার আজমৌনরা। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে প্রথা অনুযায়ী জাতীয় সংগীতে গলা মেলালেন না তারা। যদিও এই কাজের জন্য বিভিন্ন মহলে সমালোচিত হতে হয়েছে ইরানের ফুটবলারদের।
রোনালদোকে উপেক্ষা : টুর্নামেন্টে পর্তুগালের প্রথম ম্যাচেই গোল করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। টানা পাঁচটি বিশ্বকাপে গোল করেছিলেন সিআর সেভেন। কিন্তু বিপক্ষের ডিফেন্স গুঁড়িয়ে দেওয়া সেই দৌড় আর দেখা গেল না বিশ্বকাপে। পর্তুগিজ কোচ স্যান্তোসের মতে, মাঠে নব্বই মিনিট থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেললেন সাবেক ম্যানইউ তারকা। নকআউট পর্বের দুই ম্যাচেই তাকে বাদ দিয়ে প্রথম একাদশ নামাল পর্তুগাল। বিশ্বকাপ থেকে তাদের বিদায়ের পর আলোচনায় উঠে এল, রোনালদো প্রথম থেকে খেললে কি বিশ্বকাপের অভিযান অন্যরকম হত?