আশা জাগিয়েও আরও একবার বিশ্বকাপে মুখ থুবড়ে পড়েছে ব্রাজিল। কোয়ার্টার ফাইনালে এবার হেরেছে ক্রোয়েশিয়ার কাছে। হারের পর নেইমার মাঠেই ভেঙে পড়েছিলেন কান্নায়। এবার সেই নেইমার মুখ খুললেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানালেন, তিনি মানসিকভাবে ধ্বংসই হয়ে গেছেন।
এবারের বিশ্বকাপে নেইমার শুরুর ম্যাচে খেলেছিলেন, এরপর গোড়ালির চোটে খেলতে পারেননি পরের দুই ম্যাচে। শেষ ষোলোর ম্যাচে ফিরেছিলেন। পেনাল্টি থেকে করেছিলেন গোলও, সঙ্গে দল যেমন পারফর্ম করছিল, তাতে বিশ্বকাপ জেতার দারুণ আশাই তৈরি করেছিল ব্রাজিল।
নেইমার শেষ আটের ম্যাচেও গোল করেছেন। যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে ১০৪ মিনিটে যখন করলেন গোলটা, তখন ব্রাজিল সেমিফাইনালের রাস্তাটা দেখতে পাচ্ছিল পরিষ্কার। তবে এরপরই ব্রাজিলের পথ আগলে দাঁড়ায় ক্রোয়েশিয়া। ব্রুনো পেতকোভিচের গোলে ফেরায় সমতা।
এরপর পেনাল্টি শ্যুটআউটে ব্রাজিল মিস করে দুই পেনাল্টি। তাতেই বিশ্বকাপটা শেষ হয়ে যায় দলটির। নেইমারের বিশ্বজয়ের আশা আরও একবার শেষ হয় কোয়ার্টার ফাইনালে।
এত ভালো খেলতে খেলতে ব্রাজিলের হার মেনে নিতে কষ্টই হচ্ছে নেইমারের। ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেন, ‘আমি মানসিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছি। এটা নিশ্চিতভাবেই এমন একটা হার, যা আমাকে সবচেয়ে বেশি আঘাত দিয়েছে, দশ মিনিটের জন্য আমি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর আমার কান্না থামানোই যাচ্ছিল না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই হারটা অনেএএক দিন ধরে আমাকে কষ্ট দেবে।’
তবে নেইমার এই হারের পেছনে দলের কারো নিবেদনে ঘাটতি দেখছেন না একটুও। তার মনে হচ্ছে, ব্রাজিলের বিশ্বজয়টা ঈশ্বরই চাননি, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছি। এ কারণে আমি আমার সতীর্থদের নিয়ে অনেক বেশি গর্বিত। কারণ, তাদের ভেতরে দলের প্রতি নিবেদনে কোনো ঘাটতি নেই। এই দলটার (বিশ্বকাপ) প্রাপ্য ছিল, আমরা যোগ্য ছিলাম, এটা ব্রাজিলেরও পাওনা ছিল। কিন্তু এটা ঈশ্বরের চাওয়া ছিল না।’
ক্যারিয়ারে নেইমারের হারের কমতি নেই। প্রায় ৫০০ ম্যাচ দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমনটা স্বাভাবিকই। তবে নেইমার জানালেন, এই হারটাই বহুদিন পীড়া দেবে তাকে। তিনি বলেন, ‘এই হারটা যে বহুদিন নেইমারকে মাঠের ভেতরে সবার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য যে কোনো আত্মত্যাগই যথার্থ। জাতীয় দলের সঙ্গে থাকার জন্য, সমর্থনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। তবে এটা দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাজে দেয়নি। এটা অনেক দিন ধরে আমাকে আঘাত দেবে।’
তবে সবকিছুর পর নেইমার ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। জানালেন, ‘সবকিছুর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, আমার ঈশ্বর। আপনি আমাকে সবকিছু দিয়েছেন, তাই আমি কোনো অভিযোগ করতে পারি না আপনার কাছে। আমাকে সবসময় দেখে রাখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। সব সম্মান, সব মহিমা আপনার, সেটা যে পরিস্থিতিতেই হোক না কেন।’