জামালপুরের ইসলামপুরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ২৬ নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়ে আবার আদালতে দাঁড়িয়ে তাদের জামিন চাওয়ায় ছাত্রদল নেতা আইয়ুব আলীকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান কায়েছ ও সদস্য সচিব মো. পাপন মিয়া সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ছাত্রদল ইসলামপুর উপজেলা শাখার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চরপুটিমারী ইউনিয়ন ছাত্রদল দক্ষিণ শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি আইয়ুব আলীকে মৌখিক সতর্ক করা হয়। তবু তিনি সংগঠন পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকায় তাকে সাংগঠনিক সব ধরনের পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হলো।
উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. পাপন মিয়া আইয়ুব আলীকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে বলেন, আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে। একাধিকবার তাকে সতর্ক করা হলেও তিনি কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় তাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা আইয়ুব আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। বরং প্রতিহিংসাবশত দলীয় পদ থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ইসলামপুর অডিটোরিয়ামের সামনে জড়ো হন। এসময় আন্দোলন ঠেকাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক খলিল সরকারের নেতৃত্বে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, এবং আওয়ামী লীগ নেতাসহ অজ্ঞাতনামা ৮০-৯০ জন আসামি অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও গোয়ালেরচর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ তার হাতে থাকা পিস্তল উঁচিয়ে ফাঁকা গুলি করেন।
ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় ৬ সেপ্টেম্বর ছাত্রদল নেতা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক ধর্মমন্ত্রী ও ইসলামপুর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খান দুলালের ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মোরশেদুর রহমান মাসুম খানসহ ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এরপর ২১ নভেম্বর জামালপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২৪ আসামি হাজির হয়ে জামিন চান। এসময় মামলার বাদী ছাত্রদল নেতা আইয়ুব আলী আসামিদের জামিনে আপত্তি নেই মর্মে বিচারককে জানান।
শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোমানা আক্তার তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।