কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার এইচ আর হাসপাতালে ডাক্তার নিঝুম এর ভুল চিকিৎসায় ইসরাত জাহান এরিন (২০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়।
অপারেশনের সময় ডাক্তার নিঝুম প্রসূতির নাড়ি কেটে ফেলায় রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের।
নিহত ইসরাত জাহান এরিন কুমিল্লা আদর্শ সদরের আমড়াতলী ইউনিয়নের শিবপুর এলাকার মোবারক হোসাইনের মেয়ে। তবে মা এরিন মারা গেলেও নবজাতকটি সুস্থ আছে। নিহত ইসরাত জাহান এরিনের বছর খানেক আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী ইসমিত পাশা দিদারের সঙ্গে। এটি তার প্রথম সন্তান প্রসব ছিলো।
ইসরাত জাহানের মামা হাসনাত জানান, এইচ আর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতে ডা. নিঝুম আমার ভাগনির অপারেশন করেন। বৃহস্পতিবার অস্ত্রপাচার হলেও শুক্রবার দুপুরে এরিনের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এরিনের পালস খুঁজে না ফেলে তাকে আইসিউ তে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে, এরিনকে পরিবারের লোকজন পার্শ্ববর্তী মুন হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানোর পর এরিনের পেটে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে মুন হাসপাতালের চিকিৎসক জানান। ততক্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এরিন। এইচ আর হাসপাতালের চিকিৎসক নিঝুমের একটি নাড়ি কেটে ফেলায় তার ভাগনির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রসূতি এরিনের বাবা মোবারক হোসাইন বলেন, তারা আমার মেয়ের নাড়ি কেটে ফেলেছে। আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সময় পার করেছে। তাদের ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করছি আমি।
এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনা শুনামাত্রই সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ঘটনা জানার পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লার একটি প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তারা প্রশাসনকে এই বিষয়ে দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানান।
শনিবার সকালে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে ডা. নিঝুমকে একাধিকবার কল দিলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। যার দরুন তার মন্তব্য নেয়া যায় নি।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে এরিনের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আকতার বলেন, আমরা তদন্ত টিম পাঠাচ্ছি। তদন্ত টিম এখন এইচ আর হাসপাতালে যাবে। এসকল মৃত্যু সত্যিই দুঃখজনক। আমাদের ব্যার্থতা হচ্ছে এসকল ক্ষেত্রে আমরা রোগীর আত্মীয়স্বজন থেকে কোন অভিযোগ পাইনা। অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।