তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘শীতকালে যেমন সাইবেরিয়া থেকে শীতের পাখিরা এসে আমাদের এখানে ধান খেয়ে মোটাতাজা হয়ে চলে যায়, বিএনপি ওই শীতের পাখির মতো। পাঁচ বছর খবর নেই, নির্বাচন যখন আসে তখন শীতের পাখির মতো আসবে। এই শীতের পাখিদের আর সুযোগ দেওয়া যাবে না।’
শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠের জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন মন্ত্রী। এ সময় দলীয় নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন। আগামী ৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভা হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে, তারা জনগণের শত্রু, দেশের শত্রু। তাদের প্রতিহত করতে হবে। যারা হাওয়া ভবন বানিয়ে মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তুলতো, বিদ্যুৎ না দিয়ে খাম্বা লাগাতো, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছে, যারা শাহ এ এম এস কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টার ও মঞ্জুরুল ইমামকে হত্যা করেছে, সারাদেশে বাংলাভাই সৃষ্টি করে গাছে ঝুলিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, ৫০০ জায়গায় বোমা ফাটিয়েছে, তাদের হাতে দেশ তুলে দিতে পারি না।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান মানে হচ্ছে দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন। আলি বাবা এবং চল্লিশ চোরের বড় চোরের নাম আমি জানি না, কিন্তু কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় হাওয়া ভবনের বড় চোর কে? বলবে তারেক জিয়া। হাওয়া ভবনের বড় চোর ও সন্ত্রাসীদের হাতে দেশ তুলে দেওয়া যাবে না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন তারা যদি আওয়ামী লীগকে বিদায় করতে পারেন তাহলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠন করবেন। বিএনপি নেতা আসাদুল হাবিব দুলু নাকি বলেছেন, যদি তারা ক্ষমতায় যায়, পিঠের চামড়া তুলে ফেলবে। আসলে তারা যদি আবার ক্ষমতায় যেতে পারে তাহলে সব মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলবে। যারা মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলতে চায় তাদের হাতে দেশ তুলে দিতে পারি না আমরা, তাই সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কৃষক লীগ হলো জননেত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের সহযোগী সংগঠন। করোনা মহামারির সময় যেভাবে কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেটি অনন্য। কৃষকরা যখন ধান কাটার মানুষ পাচ্ছিল না তখন কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা ধান কেটে মাথায় করে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। ১৪ বছর আগে দেশের অবস্থা কি ছিল, সেটি কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে। শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের কারণে দেশের এই পরিবর্তন হয়েছে। দেশের পরিবর্তন অনেকের পছন্দ নয়, এই পরিবর্তনের কারণে দেশের মানুষ আজ শেখ হাসিনার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই পরিবর্তন তাদের সহ্য হয় না। এজন্য বিএনপি এখন সারাদেশে সমাবেশ করছে। সমাবেশ করে সন্ত্রাসীদের জড়ো করছে। গতকাল কাঁচপুর ব্রিজের নামফলক জ্বালিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ তারা আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।’
উত্তর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধন করেন কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ। সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের নেতা আকবর আলী চৌধুরী ও রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।