বিশ্বজুড়ে বহুল পরিচিত মনুষ্যবিহীন আকাশযান হলো ড্রোন। সাধারণত বাণিজ্যিক ও সেবামূলক কাজে ব্যবহৃত ড্রোনগুলো সারাবিশ্বে আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিকেল বা ইউএভি নামে পরিচিত। প্রথমবারের মত বাণিজ্যিকভাবে ইউএভি তৈরির জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (বেপজা) কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে স্কাই বিজ লিমিটেড নামক একটি কোম্পানি।
চুক্তি মোতাবেক, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় দুই একর জমিতে কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ইতিমধ্যেই, কারখানা তৈরি ও ড্রোন উৎপাদন শুরু করতে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি।
ফিক্সড ও রোটারি উইং-এর মোট ১০ দশটি মডেলের ইউএভি তৈরি করবে কোম্পানিটি। এগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন পেলোড ও এনডোরেন্স থাকবে। আগামী বছরের জানুয়ারি মাসেই দুটি মডেলের উৎপাদন শুরু হবে বলে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে কোম্পানিটি অগ্নিনির্বাপনের জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন রোটারি উইং ইউএভি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসাথে সিনেমাটোগ্রাফি, ম্যাপিং ও সার্ভিলেন্স উপযোগী ফিক্সড উইং বা ভিটলও বানানো হবে। কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তাদের তৈরি ড্রোন কৃষিক্ষেত্রে কীটনাশক স্প্রে, অগ্নিনির্বাপন, পণ্য সরবরাহ, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা প্রভৃতি সেবামূলক কাজে ব্যবহার করা যাবে।
কারখানাটি পুরোপুরি চালু হলে এখান থেকে বছরে বিভিন্ন মডেলের ৭ হাজার ৩১৪টি ইউএভি উৎপাদিত হবে। এগুলো রপ্তানি করার মাধ্যমে বার্ষিক আয় হবে প্রায় ১৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। বহির্বিশ্বে এসব ড্রোনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্কাই বিজের সবকয়টি মডেলের ডিজাইন, সফটওয়্যার, ফ্লাইট কন্ট্রোল তাদের নিজেদেরই উদ্ভাবিত; যদিও যন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল আপাতত আমদানি করতে হচ্ছে। তবে পর্যায়ক্রমে এগুলো স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির।