ঢাকা ০৩:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করল বাংলাদেশ-ফিলিপাইন

বাংলাদেশ-ফিলিপাইন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থাপনের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ম্যানিলায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ-ফিলিপাইন সম্পর্কের ৫০ বছর : অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাসমূহ’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করে।

বৃহস্পতিবার ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান সেন্টারের জিটি-টয়োটা অডিটোরিয়ামে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় বলে শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় ম্যানিলার বাংলাদেশ দূতাবাস।

রাষ্ট্রদূত এফ এম বোরহান উদ্দিন বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অভিযাত্রা, ভবিষ্যৎ রূপকল্প ও অনন্য সাফল্যসমূহ তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরেই ফিলিপিন্স সরকার ও জনগণের দেওয়া সমর্থনের কথাও তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ-ফিলিপিন্সের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, ওষুধ, শিক্ষা, আইসিটি, ট্যুরিজম এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহুমুখী সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোকপাত করেন। সেই সঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে করণীয় সম্পর্কে তার অভিমত তুলে ধরেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিমান ক্যাম্পাস উপাচার্য অধ্যাপক ফিদেল নেমেঞ্জো, একাডেমিক বিষয়ক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মা তেরেসা পায়ঙ্গায়ং, এশিয়ান সেন্টারের ডিন অধ্যাপক হেনেলিতো সেভেলিয়া, ফিলিপাইন পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মারিয়া আনা লিলিয়া প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ক্যাম্পাস উপাচার্য অধ্যাপক ফিদেল নেমেঞ্জো। ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যানিলায় সংক্ষিপ্ত সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শক্ত ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দুটি দেশ হিসেবে সামাজিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ফিলিপিন্স এবং বাংলাদেশ অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার পারস্পারিক যোগাযোগ বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

ফিলিপাইন পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মারিয়া আনা লিলিয়া বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ-ফিলিপিন্সের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। তিনি এ বছর বাংলাদেশ-ফিলিপিন্স মধ্যকার  দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে দুই দেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে নতুন উচ্চতায় উন্নীতকরণে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, বিশেষ করে কোভিড পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য, কৃষি, ওষুধ ও বাণিজ্য খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়ান সেন্টারের ডিন অধ্যাপক হেনেলিতো সেভেলিয়া। অধ্যাপক হেনেলিতো বাংলাদেশ-ফিলিপিন্স সম্পর্কের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন দিকের উপর আলোকপাত করেন। তিনি বিশেষভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভাষা আন্দোলনের ভূমিকার উপর অধিক গুরুত্বারোপ করেন। তিনি দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার ওপর জোর দেন।

আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ-ফিলিপিন্সের যৌথ ভূমিকা প্রয়োজনীয়তার উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। জলবায়ু ও অভিবাসনসহ আঞ্চলিক শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ও ফিলিপিন্সকে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণে পরামর্শ প্রদান করেন। একইসঙ্গে শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিনিয়োগ ও ব্যবসা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করল বাংলাদেশ-ফিলিপাইন

আপডেট সময় ০৪:২৬:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২

বাংলাদেশ-ফিলিপাইন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থাপনের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ম্যানিলায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ-ফিলিপাইন সম্পর্কের ৫০ বছর : অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাসমূহ’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করে।

বৃহস্পতিবার ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান সেন্টারের জিটি-টয়োটা অডিটোরিয়ামে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় বলে শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় ম্যানিলার বাংলাদেশ দূতাবাস।

রাষ্ট্রদূত এফ এম বোরহান উদ্দিন বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অভিযাত্রা, ভবিষ্যৎ রূপকল্প ও অনন্য সাফল্যসমূহ তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরেই ফিলিপিন্স সরকার ও জনগণের দেওয়া সমর্থনের কথাও তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ-ফিলিপিন্সের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, ওষুধ, শিক্ষা, আইসিটি, ট্যুরিজম এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহুমুখী সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোকপাত করেন। সেই সঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে করণীয় সম্পর্কে তার অভিমত তুলে ধরেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিমান ক্যাম্পাস উপাচার্য অধ্যাপক ফিদেল নেমেঞ্জো, একাডেমিক বিষয়ক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মা তেরেসা পায়ঙ্গায়ং, এশিয়ান সেন্টারের ডিন অধ্যাপক হেনেলিতো সেভেলিয়া, ফিলিপাইন পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মারিয়া আনা লিলিয়া প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ক্যাম্পাস উপাচার্য অধ্যাপক ফিদেল নেমেঞ্জো। ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যানিলায় সংক্ষিপ্ত সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শক্ত ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দুটি দেশ হিসেবে সামাজিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ফিলিপিন্স এবং বাংলাদেশ অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার পারস্পারিক যোগাযোগ বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

ফিলিপাইন পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মারিয়া আনা লিলিয়া বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ-ফিলিপিন্সের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। তিনি এ বছর বাংলাদেশ-ফিলিপিন্স মধ্যকার  দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে দুই দেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে নতুন উচ্চতায় উন্নীতকরণে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, বিশেষ করে কোভিড পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য, কৃষি, ওষুধ ও বাণিজ্য খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়ান সেন্টারের ডিন অধ্যাপক হেনেলিতো সেভেলিয়া। অধ্যাপক হেনেলিতো বাংলাদেশ-ফিলিপিন্স সম্পর্কের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন দিকের উপর আলোকপাত করেন। তিনি বিশেষভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভাষা আন্দোলনের ভূমিকার উপর অধিক গুরুত্বারোপ করেন। তিনি দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার ওপর জোর দেন।

আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ-ফিলিপিন্সের যৌথ ভূমিকা প্রয়োজনীয়তার উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। জলবায়ু ও অভিবাসনসহ আঞ্চলিক শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ও ফিলিপিন্সকে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণে পরামর্শ প্রদান করেন। একইসঙ্গে শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিনিয়োগ ও ব্যবসা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।