রবিবার (২০ নভেম্বর) থেকে কাতারে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল-২০২২’। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত এই ফুটবল মহাযজ্ঞকে ঘিরে এখন সরগরম গোটা দুনিয়া। বরাবরের মতো বাংলাদেশও মেতেছে এই আয়োজনকে ঘিরে। দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর ছোটবেলা থেকেই ব্রাজিল সমর্থক। খেলা নিয়ে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকেও নানান সময় লেখালেখি করে থাকেন এই তারকা।
বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগের দিন (শনিবার) সকালে এ নিয়ে নিজ পরিবারের উচ্ছ্বাস-আগ্রহ এবং কিছু ভাবনা প্রকাশ করেছেন ‘ও প্রিয়া’ খ্যাত এই গায়ক।
আসিফ লিখেছেন, ‘১৯৮২ সালে ক্লাস ফোরে পড়ি। বাসায় ছয় চ্যানেলের সাদাকালো ফিলিপস টিভি। রাত জেগে খেলা নিয়ে আব্বার কোন অবজেকশন নেই, এদিকে আম্মাও ব্রাজিল সাপোর্টার। তিনি খেলা দেখেন, সঙ্গে আমরাও। বাসায় লোকজন ভরপুর একটা উৎসবমুখর পরিবেশ। বেগম জার্মানির সাপোর্টার হলেও ব্রাজিলের প্রতি দূর্বল, রণ সরাসরি ব্রাজিল। রুদ্র মেসি সাপোর্টার হলেও বেসিক ব্রাজিল। আমার মেয়ে রঙ্গন ছোট হলেও ওর ম্যাচুরিটি বলে সেও ব্রাজিল সাপোর্টার। ভাইবোনদের মধ্যে ইতালি জার্মানি আর ইংল্যান্ডের আনকমন সাপোর্টারদের অকার্যকর উপস্থিতি সহনীয় পর্যায়েই আছে।’
বাসায় একমাত্র ছেলেবউ ঈশিতা ছাড়া আর কেই আর্জেন্টিনা সমর্থন করে না জানিয়ে এই গায়কের ভাষ্য, ‘আর্জেন্টিনার কোন সাপোর্টার নেই ঘরে, কষ্টদায়ক ব্যাপার একটু। গতকালই খবর পেলাম বৌমা ঈশিতা আর্জেন্টিনা সমর্থক, অবশ্য এই বিষয় নিয়ে তার ব্রাজিলিয়ান হাজব্যান্ডের সাথে এখনো সাংঘর্ষিক কোন কিছু দৃশ্যমান হয়নি। শ্বশুর হিসেবে আমি স্বাগত জানিয়েছি। চার বছর পরপর ফুটবল বিশ্বকাপ ফিরে আসে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ আখ্যা নিয়ে। ক্রিকেট খেলা শিখেছি, নিজে স্পোর্টিং মেন্টালিটির। ইদানিংকালে খেলাধুলার মূল স্পিরিট অভদ্র লেভেলের তর্কে পৌঁছে গেছে। সমর্থকদের আক্রমন পাল্টা আক্রমনে প্রতিমূহুর্তে স্পোর্টিং স্পিরিট নিহত হচ্ছে। অথচ বিশ্বভ্রাতৃত্বের সিম্বলিক যথার্থতা খোঁজা হয় বিশ্বসেরা এসব টূর্নামেন্টে।’
আসিফের কথায়, ‘আমার আশেপাশে আর্জেন্টাইন সাপোর্টারের সংখ্যা আশঙ্কাজনক। জার্মানি ইতালির কিছু জেনুইন সাপোর্টারও ফসিল হিসেবে টিকে আছে। আজকে আর্জেন্টাইন বন্ধুদের কাছে মুচলেকা দিয়েছি- ব্রাজিল ভালো না খেললেও তাদের সাথে অসৌজন্যতা করবো না। যদি করি তাইলে তারা বাসায় খেলা দেখবে, আমাকে বয়কট করবে। এই ধরনের হুমকির মুখে আরও স্পোর্টিং হওয়ার শপথ নিতেই হয়েছে। আসুন বিনোদিত হই, খেলাকে খেলা হিসেবেই নেই, অনেক কাহিনিতে জর্জরিত বিশ্বে একটু আনন্দিত থাকি।’
সবশেষ এই গায়ক লেখেন, ‘আনন্দ করুন, সমালোচনা করুন, মজা করুন, স্মার্ট সমর্থক হিসেবে অন্য দলের সমর্থকদেরও সম্মান দিন। যে কোন স্পোর্টস নিছক বিনোদন নয়, জীবনযুদ্ধের বৈশ্বিক কাঠিন্যের বিরুদ্ধে কিছুটা আনন্দ পাবার জন্য এক মহাবিদ্রোহ। পরষ্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা বা শত্রুতা তৈরির ক্ষেত্র নয়। তাই আর কোন মূর্খতা নয়, বি স্পোর্টিং।’